• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দলকে সক্রিয় করার দায়িত্ব পাচ্ছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা

প্রকাশ:  ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

• জাতীয় নির্বাচনে জয়ের পর দলে কিছুটা গা ছাড়া ভাব 
• উপজেলা নির্বাচন একতরফা হওয়ায় দলে বিভেদ বেড়েছে 
• দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ 
• অক্টোবরে আ. লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ 
• নির্ধারিত সময়ে জাতীয় সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে

জাতীয় সম্মেলন ও ‘মুজিব বর্ষ’—এই দুটি বিষয় সামনে রেখে দলকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য আগামী মে মাস থেকেই জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের কাজ শুরু হচ্ছে। মন্ত্রিসভায় নেই, দলের এমন জ্যেষ্ঠ নেতারা তৃণমূলে কমিটি গঠনের জন্য আয়োজিত সম্মেলনগুলোতে যোগ দেবেন। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তৃণমূলের নেওয়া নানা কর্মসূচিতেও তাঁরা উপস্থিত থাকবেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।Eprothom Aloআওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর দলে কিছুটা গা ছাড়া ভাব চলে এসেছে। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচন একতরফা হওয়ায় দলে বিভেদ বেড়েছে। তৃণমূলের অনেক নেতা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। মন্ত্রী-সাংসদসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অনেকে বিদ্রোহীদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। এ অবস্থা থেকে দলকে ঐক্যবদ্ধ ও গতিশীল করার বিষয়ে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ এসেছে।

আগামী অক্টোবরে আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ‘মুজিব বর্ষ’ (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০-২০২১ সালকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার) ও জাতীয় সম্মেলন পালনের বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে আটটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। দলীয় সূত্র জানায়, এসব কমিটির নেতৃত্বে যেসব নেতা থাকছেন, তাঁদের প্রায় সবাই গত সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন। নতুন মন্ত্রিসভায় তাঁদের স্থান হয়নি।দলীয় সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সম্মান দিতে হবে। তৃণমূলের সম্মেলনগুলোতে দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতাদের গুরুত্ব দিতে হবে। পোস্টার-ব্যানারে যাতে তাঁদের নাম থাকে, তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন তিনি।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ১২ এপ্রিল দলের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক আছে। এরপর ২০ এপ্রিল উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির যৌথ সভা হবে। এরপরই আটটি কমিটি চূড়ান্ত করে ঢাকার বাইরে সফর শুরু হবে। তৃণমূলের সম্মেলন শেষ করেই জাতীয় সম্মেলন হবে।আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তৃণমূল সফরের জন্য যে আটটি কমিটির খসড়া করা হয়েছে, এর নেতৃত্বে থাকছেন উপদেষ্টা পরিষদ ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা। খসড়া তালিকা অনুসারে, ঢাকা বিভাগের দায়িত্বে থাকছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন। মতিয়া চৌধুরী ছাড়াও কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা থাকবেন এই কমিটিতে। রংপুর বিভাগের নেতৃত্বে থাকবেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। রাজশাহী বিভাগের জন্য গঠিত কমিটিতে থাকবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। খুলনা বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য। বরিশাল বিভাগে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ নেতৃত্ব দিলেও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদকেও রাখা হবে। কারণ তাঁদের দুজনের বাড়ি ওই বিভাগে। এর বাইরে ময়মনসিংহ বিভাগের নেতৃত্বে থাকবেন আমির হোসেন আমু। সিলেটে বিভাগের নেতৃত্ব দেবেন তোফায়েল আহমেদ। চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে। এই নেতাদের কেউ সরকারের কোনো দায়িত্বে নেই।

দলীয় সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তরে সংগঠনকে গতিশীল করার দায়িত্ব পালন করবেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান এবং দক্ষিণে আবদুর রাজ্জাক।আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে, জেলা, মহানগর, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটির নেতাদের নিয়ে জাতীয় কাউন্সিল গঠিত হবে। ২০১৬ সালের অক্টোবরের জাতীয় কাউন্সিলের আগে অধিকাংশ জেলা, মহানগর ও উপজেলা কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি করা হয়। তবে অনেক জেলা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। আরেকটি জাতীয় সম্মেলনের আগে তাই মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া কমিটিগুলোর কাউন্সিল করতে হবে।এদিকে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মধ্যে যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালে। মহিলা শ্রমিক লীগের সম্মেলন হয় না এক যুগ ধরে। গঠনতন্ত্রে এসব কমিটির স্বাভাবিক মেয়াদ তিন বছর। জাতীয় সম্মেলনের আগে এসব ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন করারও আলোচনা আছে দলে।প্রথম আলো