দুপুর পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র ছিলো অনেকটাই ফাঁকা!
হাজীগঞ্জে নিরুত্তাপ ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন
হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন গতকাল রোববার শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ৮৩ কেন্দ্রের অধিকাংশ কেন্দ্রই ছিলো অনেকটাই ফাঁকা। নারী ভোটার উপস্থিতি ছিলো একেবারে সামান্য। কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ কিংবা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ছাড়া সাধারণ ভোটার তেমন একটা চোখে পড়েনি। এভাবেই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। হাজীগঞ্জে শুধুমাত্র মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ হয়েছে। চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইতিমধ্যে নির্বাচিত হয়ে গেছে।
উপজেলার বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি মহিলা বুথে সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো ভোট পড়েনি। পাশের অপর মহিলা বুথে মাত্র ১টি ভোট পড়েছে। একই ক্যাম্পাসের বাকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পুরুষ বুথে একই সময় পর্যন্ত মাত্র ৮৭ ভোট পড়েছে। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজের মহিলা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় এ কেন্দ্রের ৯টি বুথের মধ্যে ১ ভোট পড়েছে। হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে মহিলা কেন্দ্রে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ৮টি বুথের মধ্যে মোট ভোট পড়েছে ৫টি। একই কলেজে পুরুষ ভোটকেন্দ্রে একই সময়ে ভোট পড়েছে ৯৭টি। বেলচোঁ কারিমাবাদ ফাযিল মাদ্রাসায় পুরুষ ভোটকেন্দ্রে দুপুর ১টা ২০ মিনিটি পর্যন্ত ৫টি বুথের মধ্যে ২২৫টি ভোট পড়েছে। একই ক্যাম্পাসে এবং একই সময়ে বেলচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মহিলা কেন্দ্রে ৫টি বুথে ভোট পড়েছে ১০০টি। এ তথ্য ভোট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের। উপজেলার ৮৩টি ভোটকেন্দ্রে ৮০ ভাগ কেন্দ্রের চিত্র ছিলো প্রায় একই। তবে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের সাথে ভোটগ্রহণের চিত্র একটু ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে সকাল থেকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ভোটগ্রহণের সকল প্রস্ততি থাকলেও ভোটার উপস্থিতি অনেক কম থাকায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাগণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি অলস সময় কাটিয়েছেন। ভোটার দাঁড়ানোর জন্যে বুথের বাইরে লাইনে রশি বেঁধে দিলেও কোনো কেন্দ্রেই লাইনে ভোটার চোখে পড়েনি। কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তাগণ কেউ মোবাইল ফোনে ফেসবুক চালিয়ে, কেউ গল্প করে কেউবা আবার বুথের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ঘুরেছেন আর খোঁশগল্পে মেতেছেন সহকর্মীদের সাথে। আর এভাবেই শেষ হয়েছে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে ছিলেন ৩ জন। তারা হলেন : পদ্মফুল প্রতীকের মির্জা শিউলী পারভিন মিলি, ফুটবল প্রতীকে শিউলি আক্তার ও প্রজাপতি প্রতীকে ডাঃ মুক্তা। এর আগে কলস প্রতীকের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভিন ইসলাম এবং বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকের খাদিজা বকাউল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
গতকালের নির্বাচনে হাজীগঞ্জে মোট ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬শ’ ৯১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৬শ’ ৮৯ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ২ জন।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিলো। তারা সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করায় শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আবুল কাসেম জানান, উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হয়েছে। কম ভোট পড়লেও কোনো অনিয়মের সাথে আমরা আপস করিনি।
উল্লেখ্য, হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে গাজী মাঈনুদ্দিন আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে গোলাম ফারুক মুরাদ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন।