• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ ক্লিন ইমেজের এক ব্যতিক্রম জনপ্রতিনিধি

প্রকাশ:  ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে না দিয়ে কিছুটা কষ্টকর হলেও ক্লিন ইমেজে আপন দায়িত্ব পালন করে চলছেন মনজুর আহমদ। ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট হয়েছেন এবং সমাজসেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। যার ফলস্বরূপ প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তারপর গতানুগতিক কর্মকা-ের পাশাপাশি ব্যতিক্রম নানা কর্মকা-ে নিজের ভাবমূর্তি ক্রমশ উজ্জ্বল করে তোলেন। জনমনে প্রচলিত নানা ভুল ধারণাকে অসার প্রমাণ করেন।
    মতলব উত্তর উপজেলার চরমাছুয়া গ্রামে একটি শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মনজুর আহমদ। তাঁর বাবা আলহাজ¦ এএসএম হাফিজ উল্লাহ, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। মনজুর আহমদ তাঁর পিতার মতো চাকুরিজীবী না হয়ে ব্যবসায়ী হয়েছেন এবং নিজের শ্রম, মেধা ও অর্থের বৃহদাংশ রাজনীতির মাধ্যমে সমাজসেবায় ব্যয় করে দাদার মতো জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। দাদা মরহুম আলহাজ¦ আবুল হাসান মতলব উত্তরের ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট (বর্তমান চেয়ারম্যান) পদে সুনামের সাথে যেমন দায়িত্ব পালন করেন, ঠিক তেমনি বৃহৎ পরিসরে মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদে মনজুর আহমদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর দাদা চাঁদপুর শহরস্থ পুরাণবাজার এলাকার নূরিয়া হাই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন বলেই পৌত্র বা নাতি হিসেবে সম্ভবত শিক্ষার প্রতি তাঁর অনেক দুর্বলতা। তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করে সামর্থ্য অর্জন করা মাত্রই দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান আর্থিক সহায়তা নিয়ে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা নিরসন সহ শিক্ষার মানোন্নয়নে যেখানেই কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই আন্তরিকতার সবটুকুন ঢেলে দিয়েছেন। যার স্বীকৃতিস্বরূপ মতলব উত্তরের দুটি বিখ্যাত মাধ্যমিক বিদ্যালয় যথাক্রমে ছেঙ্গারচর মডেল হাইস্কুল ও চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লুধুয়া স্কুল এন্ড কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি পদে দায়িত্বপালনে সুনামের পরিচয় দিতে পেরেছেন।
তারই ধারবাহিকতায় বর্তমানে তিনি দায়িত্বপালন করছেন ছিদ্দিকা বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে। তিনি মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হবার পর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেন। শৈশব থেকে শিক্ষার্থীরা যাতে নৈতিক শিক্ষায় বলীয়ান হতে পারে সেজন্যে তিনি প্রাথমিক স্তর থেকে ধর্মীয় শিক্ষার ওপর জোর তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন হাইস্কুল-কলেজের অ্যাসেম্বলীতে উপস্থিত হয়ে প্রণোদনামূলক বক্তব্য প্রদান এবং শিক্ষার্থীদের মাদক, ইভটিজিং ও বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে জনমনে ব্যাপক ইতিবাচক ধারণা তৈরিতে সক্ষম হন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি গত পাঁচ বছরে অন্তত ৫০টি মা সমাবেশের আয়োজন করেছেন, যেখানে সন্তানদের শিক্ষা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে এবং বাল্যবিবাহ রোধের ক্ষেত্রে মায়েদের করণীয় সম্পর্কে অবহিত করেছেন ও উদ্বুদ্ধ করেছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর এতোসব কর্মযজ্ঞকে ২০১৮ সালে মূল্যায়ন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক এবং যার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পুরস্কার । এছাড়া পুরো চাঁদপুর জেলায় বিতর্ক চর্চায় শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা দিতে গিয়ে গত ৯ বছরে তিনি চালু রেখেছেন বার্ষিক বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা। যে কারণে বাংলাদেশে প্রথম বিতর্কে বৃত্তি প্রবর্তক হিসেবে তিনি পেয়েছেন বিরল সম্মাননা। হাইস্কুল-কলেজে ফুলহাতা ফ্রকসহ শালীন পোশাক পরিধানে ছাত্রীদের তাগিদ দিয়ে তিনি তাদের জন্যে আলাদা নামাজের স্থানের ব্যবস্থা করেছেন, যা জেলায় এই প্রথম ও বিরলদৃষ্ট।
    মনজুর আহমদ উপজেলা পরিষদের দাপ্তরিক সকল সেবামূলক কর্মকা- পরিচালনা করছেন দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সাথে। অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ, পার্সেন্টেজ গ্রহণের কোনো অভিযোগ শোনা যায় না তাঁর বিরুদ্ধে। সুশাসন নিশ্চিতকরণে স্বীয় অবস্থান থেকে নিরাপোষ ভূমিকা পালন করে সর্বস্তরের জনমনে শুধু আস্থা নয়, শ্রদ্ধাও অর্জন করেছেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনেকে বলেই ফেলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে মনজুর আহমদ নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম। তিনি সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহের কর্মকা- তদারকি জোরদার করেন। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় প্রদত্ত ভাতাসমূহ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রায়শ বিভিন্ন স্থানে অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠে, সেজন্যে মনজুর আহমদ তাঁর ক্ষমতার বলয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা সহ দুঃস্থ পরিবারের মাঝে ভিজিডি কার্ডসমূহ বিতরণের ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়া অবলম্বন করেন তথা স্বচ্ছতা রক্ষা করেন। একই সাথে বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়ম-দুর্নীতি দূরীকরণে সর্বাত্মক প্রয়াস চালান।
    আমাদের দেশে সচরাচর লক্ষ্য করা যায় যে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে কেউ বেশি এগিয়ে গেলে রাজনীতিতে তেমন এগুতে পারেন না। এক্ষেত্রেও মনজুর আহমদ ব্যতিক্রম। তিনি লালবাগ থানা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে রাজনীতি শুরু করে শিক্ষাজীবন শেষ করেই লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের কমিটিতে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ঠাঁই পেয়ে যান। ১৯৯২ সালে লাভ করেন মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ। তারপর ১৯ বছর যাবৎ চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে সক্রিয়তার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। দলীয় কর্মকা-ে তাঁর সরব অংশগ্রহণ ও আত্মনিবেদনের ফলস্বরূপ তিনি ২০১৬ সালে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নূতন কমিটিতে সহ-সভাপতি  হিসেবে স্থান পেয়ে তাক লাগিয়ে দেন, যেমনটি তাঁর সম পর্যায়ের অন্য কোনো জনপ্রতিনিধি পাননি। এর প্রধান কারণ সর্বস্তরের, দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ্যে বিদ্যমান তাঁর ক্লিন ইমেজ তথা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দুর্বৃত্তায়ন, পেশী শক্তি ও ক্ষমতা প্রদর্শন ছাড়াও যে রাজনীতিকরা অনেক দূর এগুতে পারেন, মনজুর আহমদ যেনো তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
শিক্ষা ও ধর্মীয় কাজে ব্যাপক অনুরাগের পাশাপাশি একজন মানুষ যে ক্রীড়ানুরাগীও হতে পারে, তারও প্রমাণ মনজুর আহমদ। তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব, চাঁদপুর-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি নিজ উপজেলায় প্রতি বছর বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছেন। সাংস্কৃতিক কর্মকা-েও তিনি তরুণ-যুবক সহ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক প্রণোদনা দেন ও পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তিনি সব সময় তাঁর বক্তব্যে বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া সর্বোপরি ধর্মীয় কাজে সংশ্লিষ্টতা থাকলে কোনো মানুষ মাদকসহ কোনো ধরণের বিপথগামিতায় জড়াতে পারে না। সেজন্যে তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হবার পর থেকেই বাংলাদেশের গ্রামীণ সড়কে প্রথম সৌর বাতি  (সোলার লাইট) লাগানোর পদক্ষেপ নেন তিনি। এছাড়া স্বীয় সামর্থ্যে ও ক্ষমতার বলয়ে তিনি অবকাঠামোগত উন্নয়নে রেখে চলছেন অসামান্য অবদান। প্রতিনিয়ত তাঁর কাছে ছুটে আসা মানুষের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগের পুরোপুরি নিরসন করতে না পারলেও তিনি ভালো ব্যবহার ও আশার কথা শুনিয়ে এবং সম্ভাব্য প্রতিশ্রুতি প্রদান করে তাদেরকে আশ^স্ত করেন ও সাহস দেন। এমন একজন সদাচারী, সৎ, নিষ্ঠাবান জনবান্ধব রাজনীতিবিদকে মতলব উত্তর উপজেলাবাসী জনপ্রতিনিধি হিসেবে বারবার তাদের পাশে পেতে চায় বলে গণমাধ্যম কর্মীরা সরজমিনে গেলে জানতে পারেন।
উল্লেখ্য, মনজুর আহমদের সহধর্মিণী ইয়াসমিন আহমেদও একজন জনপ্রতিনিধি। স্বামীর ক্লিন ইমেজের জন্যে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলছেন। মনজুর আহমদরা চার ভাই ও ২ বোন। এক ভাই আমেরিকা ও একবোন ইংল্যান্ড প্রবাসী। দেশে বসবাসরত দু ভাই তাঁর মতোই ব্যবসায়ী। মতলব উত্তরের পাঁচআনী মিয়া বাড়ির বাসিন্দা সাবেক জমিদার মরহুম আলহাজ¦ নোয়াব আলী মিয়া তাঁর নানা। বলা যায়, বংশগত সম্ভ্রান্তি ও কৌলিন্যের উত্তরাধিকারী হয়ে মনজুর আহমদ জীবনের গতিধারাকে সঠিক গন্তব্যঅভিমুখে ধরে রাখার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।