• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

কমাতে হলে দুর্যোগের ক্ষতি, বাড়াতে হবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি

মোঃ নূর ইসলাম খান অসি

প্রকাশ:  ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ২৩:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

পৃথিবীতে বিষুব রেখার কাছাকাছি এলাকাতেই সুর্যের তাপ পড়ে সবচেয়ে বেশি। আর সচরাচর এসব এলাকাতেই দুনিয়ার সর্বাধিক বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হয়। ভৌগলিক অবস্থান, জন সংখ্যার আধিক্য, অসচেতনতা, অশিক্ষা, দায়িত্বহীনতা, অসাবধানতা প্রভৃতি কারণে বাংলাদেশ একটি দুর্যোগ প্রবণ দেশ। এই দুর্যোগের কারণে প্রতি বৎসর বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক জীবন, সম্পদ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে ঘন ঘন সংগঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে দেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়। ফলে দেশের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনা থমকে দাঁড়ায়। হঠাৎ করে বিপদ যখন আসে তখন মানুষ কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে যায়, করার কিছুই থাকে না। তাই আশঙ্কাকৃত বিপদটা কেমন ? কি তার স্বরূপ ? কেমন তার ব্যবহার ? কোথায় তার উৎপত্তি ? কি তার শক্তি ? প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকলে দুর্যোগ মোকাবিলায়  বা প্রশমনে সুষ্ঠু ও বাস্তবভিত্তিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে সহায়ক হয়।  মানুষের পক্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে দুর্যোগের পূর্বে ব্যাপক প্রস্তুতি, জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে তদনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
এ বছর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস  উপলক্ষ্যে টঘওঝউজ কর্তৃক নির্ধারিত দজবফঁপরহম ঊপড়হড়সরপ খড়ংংবং’ এর আলোকে বাংলায় প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ঃ   ‘কমাতে হলে দুর্যোগের ক্ষতি / বাড়াতে হবে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি’

দুর্যোগ (উরংধংঃবৎ) কি ? দুর্যোগ হলো এমন একটি বিপর্যয়কর চরম ঘটনা বা পরিস্থিতি যখন কোন আপদ (ঐধুধৎফ ) বা হুমকি (জরংশ) যা কোন বিপদাপন্নব্যক্তি  বা জনগোষ্ঠির উপর এমনভাবে পতিত হয়, যার ফলে ঐ ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠির স্বাভাবিক জীবনধারাকে ব্যাহত করে ও পারিপার্শ্বিকতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, বাইরের সাহায্যে ছাড়া যা মোকাবিলা করা ঐ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠির পক্ষে  সম্ভব হয় না।  দুর্যোগ =  আপদ + ঝুঁকি + বিপদাপন্নতা ।

আপদ হচ্ছে দুর্যোগের সম্ভাবনা বা আশঙ্কা । যা সংঘটিত  দুর্যোগ আক্রান্ত কোন ব্যক্তি ঐ দুর্যোগ মোকাবেলা করার তার যোগ্যতা বা সামর্থ্যকেই সক্ষমতা বলে । উল্লেখ্য যে, দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতিতে যে সকল ইতিবাচক দিক রয়েছে যা সাড়া প্রদানের ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা  একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্যোগ প্রস্তুতি,প্রশমন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে অধিকতর ফলপ্রসু এবং এমনকি জীবন, সম্পদ এবং পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি হবার আশঙ্কা (ঝুঁকি) হ্রাস করে ।

কারণ ও প্রকৃতি ভেদে দুর্যোগ প্রধানতঃ দুই প্রকার ১। প্রাকৃতিক দুর্যোগ  ও ২। মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ। সময় ভেদেও দুর্যোগ দুই প্রকার যথাঃ ক) দ্রুত সংঘটিত দুর্যোগ ও খ) ধীর গতি সম্পন্ন দুর্যোগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ: ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্ণেডো, বন্যা, ভূমিকম্প, খরা, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যৎপাত, আর্সেনিক, বজ্রপাত ইত্যাদি। মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ: গৃহযুদ্ধ, যুদ্ধ, দাঙ্গা, সন্ত্রাস, শরণার্থী সমস্যা, হরতাল, শিল্প ও প্রযুক্তিগত বিপর্যয়, রাসায়নিক দুষণ, মহামারী, অগ্নিকান্ড, এইডস,রাজনৈতিক দুবৃত্তায়ন প্রভৃতি। দুর্যোগ কখনও হয় প্রাকৃতিক আবার কখনও মনুষ্য সৃষ্ট । কখনও সংঘটিত হয় আকস্মিকভাবে, আবার কখনো ধীর গতিতে। কখনও আক্রান্ত হয় সমাজ, দেশ, মহাদেশ কখনো বা সীমিত থাকে ব্যক্তি বা সংসারে। দুর্যোগের ব্যপ্তি বা ধরণ যা হোক না কেন দুর্যোগ নিয়ে আসে দুঃখ, কষ্ট, অশ্র“ ও সীমাহীন দুর্ভোগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগেরসমূহের প্রধান কারণ হচ্ছে ভৌগোলিক অবস্থান, নদ-নদী ভরাট, অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, ব্যাপক হারে বৃক্ষ নিধন, পরিবেশ বিপর্যয় ও গ্রীণ হাউসের প্রভাব প্রভৃতি। মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগের কারণ হচ্ছে অশিক্ষা, অসচেতনতা, ব্যক্তি হিংসা, লোভ, অসহযোগিতা, অজ্ঞানতা ইত্যাদি।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর কোন ভৌগোলিক সীমা রেখা নেই। দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু গণসচেতনতার অভাবে অধিদপ্তর প্রদত্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসের প্রতি গুরুত্ব না দেয়ার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীবনহানি ও বিপুল পরিমাণ জাতীয় সম্পদের বিনাস হচ্ছে। তাই আপদকালীন সময় আবহাওয়া পূর্বাভাস সম্পর্কে জনগণকে অধিকতর সচেতন করতে পারলে উভয় প্রকার ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা যাবে এবং দুর্যোগ উত্তরণে সহায়ক হবে।

বাংলাদেশে মারাত্মক আর্সেনিক দুষণ এবং জনগণের অসচেতনতার কারণে পদ্মা, ব্র্রক্ষ্মপুত্র, মেঘনা,যমুনা,শীতালক্ষ্যা বুড়িগঙ্গাসহ দেশের প্রায় অর্ধেক নদী মারাত্মাকারে দুষিত হয়ে পড়েছে। তাই আগামীতে সকলের জন্য নিরাপদ পানি ব্যবস্থা করা খুবই দুরূহ হয়ে পড়বে। পানি বিশেষজ্ঞবৃন্দের অভিমত ২৯টি দেশের ৪৫ কোটি মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পানি পায়। ২০৫০ সালে এর সংখ্যা দাঁড়াবে ২৫০ কোটি। বিশ্বে ১০০ কোটির অধিক মানুষ প্রতিনিয়ত দুষিত পানি পান করছে। এর ফলে বছরে ৩৪ লাখের অধিক মানুষ পানি বাহিত বিভিন্ন রোগে মারা যাচ্ছে, যাদের বেশীর ভাগেই শিশু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ ও তথ্যানুসারে প্রতিবছর  পানি ও পয়ঃবিষয়ক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে  পানি বাহিত জীবানুদ্বারা আক্রান্ত হয়ে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার শিশু মারা যাচ্ছে।

মানুষের খাদ্যের উদ্বৃত্ত চাহিদা মেটানোর জন্য দেশে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও ইরি ধান চাষ হচ্ছে। উক্ত ফসলের জন্য কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যা পানি দুষণের অন্যতম একটি কারণ। নিরাপদ পানি মানুষের একটি অধিকার। পানি আছে সর্বত্র, কিন্তু নিরাপদ পানির বড়ই অভাব।

বর্তমানে পানি কেবল স্বাস্থ্যগত সমস্যাই নয়, গণ অসচেতনতার ফলে বর্তমানে এটি বহুমুখী নিত্য দিনের সমস্যা। কোন এলাকায় পানির অস্বাভাবিক চাহিদার ফলে, বৃষ্টিপাতের দীর্ঘস্থায়ী স্বল্পতা হেতু অথবা কোন উৎস থেকে পানির প্রয়োজনীয় সরবরাহ না থাকায় কিংবা প্রাকৃতিক / কৃত্রিম কারণে বাযুমন্ডলে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতার অভাবে দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টিহীন যে অবস্থার সৃষ্টি হবে  তাকে সাধারণতঃ ‘খরা’ বলে। অনাবৃষ্টি, বৃক্ষ নিধন, ভূগর্ভস্থ পানির যথেচ্ছ উত্তোলন,নদী প্রবাহে বাঁধা দান, পানি সংরক্ষণের অভাব, ওজোন স্তর ক্ষয় প্রভৃতি কারণে খরার প্রতিক্রিয়ায় খাল-বিল,পুকুর-নালা, মাঠ-ঘাট,শষ্য ক্ষেত প্রভৃতি শুকিয়ে যায়। ফলে দেশের কৃষি ক্ষেত্রে বিপর্যয় ঘটে ও মারত্মক খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়। খাদ্য আমদানী কোন কারণে বিলম্বিত হলে দেশে দুর্ভিক্ষ ও অরাজকতা দেয়। বিশেষজ্ঞবৃন্দের অভিমত জলবায়ুর পরিবর্তনে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি হবে বাংলাদেশ। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এ যাবৎ কালের সবচেয়ে ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী দুর্যোগের মোকাবিলা করতে হতে পারে। মানব সৃষ্ট এ দুর্যোগ হলো জলবায়ুর পরিবর্তন ও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি (ঈঈঝখজ- ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড সী লেভেল রাইজ )।

ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় ও দুর্যোগের কবলে পড়েছে এক কালের সুজলা - সুফলা, শষ্য - শ্যামলা বাংলাদেশ। পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা গোটা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। জীববৈচিত্র্য আজ মারত্মক হুমকীর সম্মুখিন। পরিবেশের ভারসাম্যহীনতায় গোটা দেশকে বিপদাপন্ন করে তুলেছে। অতি উষ্ণতা, আবহাওয়ার ( জলবায়ুর) পরিবর্তন, পানি দুষণ ও অতিমাত্রায় আর্সেনিক, বায়ু দুষণ,বন উজার, ভূমিদস্যু কর্তৃক নির্বিচারে পাহাড় কাটা,অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, রাস্তা ও নগরায়ন, মাত্রাতিরিক্ত কীট নাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপসহ নানাবিধ কারণে দেশের ১৭ কোটি মানুষই আজ কোন না কোন ভাবে বিপর্যয়ের শিকার। বিশেষজ্ঞবৃন্দের মতে, দেশের শতকরা ২২ ভাগ মানুষেরই মৃত্যু হয় পরিবেশগত বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে।

এইডস একটি মারত্মক মরণ ব্যাধি।  ১৯৮৯ সালে স্পেনের একজন কুখ্যাত স্মাগলার রোমেল দা ব্রাভো বাংলাদেশে  এসে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার রক্ত পরীক্ষায় প্রথম ‘এইচআইভি এইডস’ ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়। রোমেল দা ব্রাভোই হচ্ছে বাংলাদেশে ‘এইডস’  ভাইরাসের বাহক। জন অসচেতনতার ফলে ‘এইচআইভি এইডস’ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আমাদের দেশে ক্রমান্বয়ে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মহাপরিচালক ডঃ গ্রো হারলেম ব্রন্টল্যা-  একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন,“ বাংলাদেশে  এইডস  মহামারী আকারে দেখা দিবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে এইডস এর ব্যপকতা এবং ‘এইচআইভি এইডস ’ সম্পর্কে বাংলাদেশের জনগণের  অসচেতনতার ফলে আমার মনে হয় অদূর ভবিষ্যতে এ রোগের মহামারি আকারে ধারণ করার সম্ভাবনা অমূলক নয়।

প্রতি বছর অসচেতনতার ফলে অগ্নিকাণ্ডে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ যেমন ধ্বংস করছে তেমনি কেড়ে নিচ্ছে শত শত মানুষের মহামূল্যবান জীবন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ, প্রতিকার ,এর ফলাফল সম্পর্কে জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রচার  এবং মাঝে মধ্যে মহড়ার মাধ্যমে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি বহুলাংশে হ্রাস পাবে।

বাংলাদেশে বহুবার বহুভাবে দুর্যোগ এসেছে। ১৭৯৫ জুন হতে ২০০৭ জুন পর্যন্ত ২১৩ বছরের বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘুর্ণিঝড়, হ্যারিকেন, টর্ণেডে,খরা, শৈতপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাপ্ত তথ্যের মধ্যে ১৭৯৫ (জুন), ১৮২২ (মে), ১৮৭২ (অক্টোবর), ১৮৭৬ (অক্টোবর), ১৮৯৭ (অক্টোবর), ১৯৬০ (অক্টোবর), ১৯৬১ (মে), ১৯৬৩ (মে), ১৯৬৫ (মে), ১৯৭০ (নম্ভেম্বর), ১৯৮৫ (মে), ১৯৯১ (এপ্রিল), এর ঘূর্ণিঝড়, হ্যারিকেন, জলোচ্ছ্বাস, ১৮৯৭ (অক্টোবর) এর ভূমিকম্প , ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০০ বন্যা, ১৯৫৭ ও ১৯৭৯ সালের খরা এবং ১৯৯৭/৯৮ (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) ও ২০০৩ সালের শৈতপ্রবাহ এবং ২০০৭ সালে চট্টগ্রামে অতিবর্ষণজনিত পাহাড়ি ধ্বস, ২০০৭ সিডর, ২০০৮ আইলা, ২০১৩ মহাসেন, ২০১৫ কোমেন, ২০১৬ রোয়ানো এবং ২০১৭ সালের ঘুর্ণিঝড় মোরা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ ও স্মরণীয়। ক্ষয়/ক্ষতির অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে, প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের উপকুলের অনেক নতুন নতুন উপকুলীয় এলাকা ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ‘মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগে’ ১৯৭১ সালে এদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের জীবন দিতে হয়েছে।

দুর্যোগ কখনও ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আসে না। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অতিবৃষ্টি, খরা প্রভৃতি দুর্যোগের সাথে সংগ্রাম করে বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হবে। প্রতিনিয়ত পরিবেশ দুষণ, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বিশ্ব পরিমন্ডলে গ্রীণ হাউজ ইফেক্ট এর ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার ও মাত্রা ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নির্মূলের কোন পদ্ধতি অদ্যাবধি আবিস্কৃত হয়নি। তবে অগ্রিম প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে লাঘব করা যায়। এ জন্য দরকার বিষয় ভিত্তিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ , নিবেদিত প্রাণ স্বেচ্ছাসেবক ও সর্বপোরি গণসচেতনতা।  

তবে এ যাবতকালে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সময়(ঋতু/মাস) বিশ্লেষণ করলে দেখা যায যে, প্রতি বছর মৌসুমী বায়ু আগমনের প্রাক্কালে  এপ্রিল-মে এবং  প্রস্থানের সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাসে মুলত অধিক তাপ মাত্রার কারণে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়ে থাকে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নি¤œচাপসমূহ থেকে প্রায়শই এদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন ও জলোচ্ছাস সংঘটিত হয়ে থাকে।  এর মধ্যে কতিপয় নিম্নচাপ কখনও কখনও প্রচণ্ড সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের রূপ লাভ করে বিপুল জলোচ্ছ্বাসসহ উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হেনে জীবন ও সম্পদের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতিসহ জনজীবন বিপর্যস্ত করে।

১৭৯৭ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে মোট ২৪৩টি প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস সংঘটিত হয়েছে, যা উপকূলীয় অঞ্চলে অসংখ্য মানুষ,  পশুপাখী ও উদ্ভিদ ধ্বংস করেছে। ১৯৭০ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু ও নিখোঁজের পর উপকূলীয় নি¤œআয়ের শ্রেণীভূক্ত অধিবাসীদের জান-মাল উক্ত অঞ্চলের জীব-বৈচিত্র্য ও সার্বিক পরিবেশের ধ্বংস প্রতিহত করে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস সম্পর্কিত একটি সার্বিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ও রেড ক্রিসেন্ট ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করে আসছে।

১ জুলাই ১৯৭৩ হতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি(সিপিপি)-কে অনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন প্রদান করেন। সেই থেকেই  ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এর একটি যৌথ কর্মসূচী হিসেবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সতর্ক সংকেত প্রচার, দুর্গত জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে ও গবাদিপশুকে মুজিবকিল্লায় নিয়ে আসা, উদ্ধার ও অনুসন্ধান, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন এর ক্ষেত্রে সফলতার সাথে কাজ করে আসছে। সিপিপি’র অন্যতম লক্ষ্য বাংলাদেশের উপকূলীয় জনসাধারণের ঘুর্ণিঝড়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রাক-প্রস্তুতির মাধ্যমে প্রাণহানি ও স¤পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিতে বর্তমানে উপকুলীয় ১৩ জেলার ৪০ উপজেলায় ৩৫০ ইউনিয়নের ৩৬৮৪টি গ্রামে ৫৫,২৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক/স্বেচ্ছাসেবিকা ( মহিলা-১৮,৪২০ জন এবং পুরুষ-৩৬,৮৪০ জন ) ১৮৬ ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক সমন্বয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী সারা বিশ্বে একটি “রোল মডেলের” হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ১৯৯১ সালে ২৯ এপ্রিলের ঘুর্ণিঝড়ে বাংলাদেশের উপকূলের জনসাধারণের জানমাল রক্ষার্থে ২২জন স্বেচ্ছাসেবকের অকাতরে জীবন দান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ সফলভাবে কার্য সম্পাদন করার স্বীকৃতি স্বরূপ ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীকে যৌথভাবে থাইল্যান্ডস্থ ” ঝসরঃয ঞঁসংধৎড়পয ধধিৎফ-১৯৯৮” প্রদান করা হয়।

প্রতিবেশী দেশ ভারত কর্তৃক গঙ্গা নদীতে বাঁধ দেবার ফলে বাংলাদেশে  শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে কৃত্রিম পানি সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে নদীর নাব্যতা হ্রাস, ফসল উৎপাদনে ক্ষতিসহ দেশ ক্রমান্বয়ে মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। অন্য দিকে বর্ষাকালে যখন ফারাক্কা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা পানিতে তলিয়ে যায় তখন হঠাৎ করে ভারত অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়ায় এবং কখনও অতি বৃষ্টির ফলে পাহাড়ী ঢলে আমাদের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গিয়ে হঠাৎ বন্যায় বিপুল পরিমাণ জীবন ও সম্পদের ক্ষতি করছে।

তাই এ ব্যাপারে সংশিষ্ট বিষয়ে দেশের জনগণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষিত জনশক্তিতে রূপান্তর ও গণসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। স্কুল-কলেজ এর পাঠ্য পুস্তকে দুর্যোগ এবং এর প্রস্তুতি মোকাবিলা ও প্রশমন সম্পর্কে প্রবন্ধ অর্ন্তভূক্ত করে ব্যাপক ধারণা দান করতে হবে। টিভি, রেডিও, পত্র-পত্রিকা, সেমিনার এর মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করলে গণসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। তথ্য ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করে দুর্যোগে প্রাক-প্রস্তÍুতি গ্রহণ করলে জীবন ও সম্পদের  ক্ষয়-ক্ষতি নিবারণে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

শিক্ষণীয় বিষয়সমূহ ঃ  দুর্যোগ ও দুর্যোগের প্রকার ভেদ, স্থায়ীত্ব সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা, সতর্ক সংকেত এবং এর অর্থ, স্বেচ্ছাসেবক এর দায়িত্ব ও কর্তব্য, জরুরী দুর্যোগ মোকাবিলা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন, দুর্যোগ পূর্ব ও দুর্যোগ পরবর্তী জরিপ , অপসারণ, উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা, সাংকেতিক যন্ত্রপাতি, ওয়ালেস সেট, আশ্রয় কেন্দ্র ইত্যাদি বিষয়ে সম্যক ধারণা ও রক্ষণা-বেক্ষণ, ত্রাণ সামগ্রীর সুষ্ঠু বিতরণ প্রভৃতি  উলেখিত বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং প্রশিক্ষণলদ্ধ ধারণা / জ্ঞান অপরকে জানানো হলে ক্রমশঃ গণসচেতনতা বৃদ্ধি হবে এবং দুর্যোগ সম্পর্কে জনগণকে অধিকতর সজাগ করা যাবে। মেধাবী, প্রশিক্ষিত ও সচেতন জনগোষ্ঠি একটি দেশের সফলতা ও উন্নয়ন অর্জনের অন্যতম চালিকা শক্তি। এ সমস্ত কার্যক্রম      বাস্তবায়নে সর্বোপরি সফলতা আনতে পারে সুন্দর মনের অধিকারী ও নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছামূলক সেবাদানকারী যুব সমাজ। এই প্রশিক্ষিত যুব সমাজকে যথাযথভাবে দিকনির্দেশনা পেলে দুর্যোগে বিপন্ন মানবতার কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে আসবে।

প্রতিটি জেলায় কর্তব্যরত জেলা প্রশাসকগণ তার প্রশাসনিক আওতাধীন জেলার সকল দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মোকাবিলা কর্মসূচি এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত কার্যাবলির জন্য ‘সুপিরিয়র নির্বাহী অফিসার’ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন। জেলা পর্যায়ের সকল বিভাগের কর্মকর্তা -কর্মচারী, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী  সংগঠন, সুধিজন, সমাজসেবীদের বিশেষ করে যুব সমাজের সমন্বয়ে জেলার দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মোকাবিলা বিষয়ক কার্যক্রম চারটি পর্যায়ে করা যেতে পারে । যেমন: ১। স্বাভাবিক সময় ২। সতর্ক ও হুশিয়ারী পর্যায় ৩। দুর্যোগ পর্যায় ও ৪। দুর্যোগ পরবর্তী পর্যায়।  এ জন্য দুর্যোগ পূর্ব দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে করণীয় কাজ সম্পর্কে সংশিষ্ট বিভাগ ও সংশিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্ধারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য / সদস্যাদের অংশ গ্রহণে মাঝে-মধ্যে প্রশিক্ষণ মহড়ার ব্যবস্থা করা উচিত। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত  স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে ৫টি দল গঠন করা যেতে পারে। যেমন ঃ ১। যোগাযোগ ও জনসংযোগ রক্ষাকারী দল ২। অনুসন্ধান ও  নিরাপত্তা দল ৩। অপসারণ ও উদ্ধারকারী দল ৪। প্রাথমিক চিকিৎসাকারী দল ও  ৫। ত্রাণ ও পুনর্বাসনকারী দল। উল্লেখিত দলের জনগোষ্ঠী তথা স্বেচ্ছাসেবকগণ দুর্যোগ পূর্বে  প্রাক প্রস্তুতি ও দুর্যোগ পরবর্তীতে তাদের মেধা, শ্রম ও নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে যথেষ্ট ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্ণেডো, বন্যা, ভূমিকম্প, অতিবৃষ্টি,  খরা , দুর্নীতি প্রভৃতি দুর্যোগে খুবলে খাচ্ছে দেশটা। এক দুর্যোগের বিষাদ মিলিয়ে যেতে না যেতেই আরেক দুর্যোগের অশনিসংকেত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানোর শক্তি অবশ্য মানুষের নেই। কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতির প্রচন্ডতা ও মাত্রা কমানোর পথ মানুষকেই খুঁজে বের করতে হবে। কারণ মানুষ হচ্ছে স্রষ্টার সেরা সৃষ্টি। এত কষ্ট, এত যন্ত্রণা,আশা ভঙ্গের এত বেদনা, তবুও আমরা আশায় ঘর বাঁধি। অনাগত স্বপ্নোজ্জ্বল দিনগুলোর দিকে চেয়ে থাকি অপলক নেত্রে। কারণ প্রতিটি দুর্যোগের পর অমিত বিক্রমে জেগে উঠে বিপন্ন মানুষ। গড়ে তোলে জীবন আর বিধ্বস্ত সভ্যতা। তাই মানুষের পরাজয় নেই,আছে জয়।

২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ ৭০তম অধিবেশনে  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরষ্কার-‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ’ অর্জন করেন । পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার হতে মনুষ্যসৃষ্ট মহাদুর্যোগে নতুন করে অন্যায় ও নিষ্ঠুরভাবে বিতাড়িত  ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা  শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান করে  তিনি বিশ্ববাসীর  কাছে এখন মানবতার জননী।

কিছু মানুষের অপরিনামদর্শী কর্মকাণ্ডে দেশের অনাগত ভবিষ্যৎ বিপন্ন। তাই সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অধিকতর সচেতনতা বৃদ্ধি জন্য সংশিষ্ট সকলকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দুর্যোগ সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ এবং প্রতিটি দুর্যোগে সামাজিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে মানুষের দুঃখ-কষ্টকে অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব । বিশেষ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক শিক্ষা ও জ্ঞানের বিস্তার , প্রশিক্ষণ ও  সর্বশ্রেণীর জনসাধারণের বিশেষতঃ যুব সমাজকে দুর্যোগে প্রাক-প্রস্তুতি, প্রশমন ও নিবারণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ এবং অধিকতর সম্পৃক্ত করলে যে কোন দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির  হ্রাস পাবে।

যে দিন কোন দুর্যোগেই মানুষ হারাবেনা তাঁর জীবন, বেঁচে থাকার সহায় সম্বল, কোন এতিম শিশুই তার পিতা-মাতার সন্ধানে কেঁদে ফিরবেনা  বিধ্বস্ত জনপদে, কোন পিতার কাঁধে আর ভর করবেনা তাঁর সন্তানের লাশ, সেদিনেরই প্রত্যাশায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে বিপন্ন মানবতার কল্যাণে  কাজ করছে ।

লেখক: মোঃ নূর ইসলাম খান অসি । পরিচালক (অপারেশন) - ঘূর্ণিঝড়  প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার । মোবা: ০১৮১১-৪৫৮৫০৭

সর্বাধিক পঠিত