• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

একজন মৃত মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করার অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের?

প্রকাশ:  ০৪ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৫৮
উৎপল দাস
প্রিন্ট

সুমহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে লাখো শহীদের রক্তে আর মা-বোনদের সম্ভ্রমে পাওয়া স্বাধীনতা। এই স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধের ৪৬ বছর পরও মৃত্যুর পর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান দিতে কুণ্ঠাবোধ কেন? তাকে অপমান করার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? এই প্রশ্ন পুরো জাতির।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার তাজপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল হককে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। ফলে মুক্তিযোদ্ধাসহ সচেতন মহলে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল হকের পুত্র মো. মিজানুর রহমান প্রতিকার চেয়ে ডাকযোগে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি অভিযোগ প্রেরণ করেছেন।

এর আগে শনিবার সকাল ৭টায় বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল হক তার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। বিকেল ৩ টায় ইমামবাড়ী তাজপুর গ্রামে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর ৩ টা ১০ মিনিটে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা (গার্ড অব অনার) দেওয়া হয়।

অভিযোগে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানকালে জাতীয় পতাকা দিয়ে কফিন আচ্ছাদিত করার কথা থাকলেও বিছানার চাঁদর দিয়ে কফিন আচ্ছাদিত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের বর্তমানে কোনো কমিটি নেই। সেই ইউনিটেরও দায়িত্বে রয়েছেন বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার সিংহা।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের দায়িত্বে থাকা ইউএনও উপস্থিত ছিলেন না বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগের কপি প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান, সচিব মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার সিলেট, হবিগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার ও উপ-পরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয় হবিগঞ্জ বরাবরে প্রেরণ করেছেন।

বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার সিংহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কোনো সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অবহেলা করি না। মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে আমরা সব সময় আন্তরিকতার সাথে কাজ করি। মরহুম মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. রজব আলীকে দায়িত্ব দেয়া হয় এবং তিনি উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রিয় মর্যাদা প্রদান করা হয়।

জাতীয় পতাকার বিষয়ে তিনি বলেন, বানিয়াচং থানা পুলিশকে বলা হয়েছিল পতাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য কিন্তু ভুলক্রমে তারা পতাকা নেননি। এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল।

এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল কখনোই ক্ষমার অযোগ্য। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন বিশেষ করে নির্বাহী কর্মকর্তার অনুপস্থিতিও অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এ ধরণের অপরাধকে প্রশ্রয় না দেয়ার জন্য এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সবিনয় নিবেদন করছি।

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার, পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ

সর্বাধিক পঠিত