লাল গেঞ্জি উড়িয়ে ট্রেন থামাল সাজিদ, প্রাণ বাঁচল কয়েকশ যাত্রীর
ঢাকাগামী একটি ট্রেন থামিয়ে কয়েকশ যাত্রীর প্রাণ বাঁচালো সাজিদ হোসেন (১৫) নামের এক কিশোর। একই সঙ্গে ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল কোটি কোটি টাকার মূল্যবান সম্পদ।
জেলার পাঁচবিবি উপজেলার খাসবাগুরী গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও সহিদা বেগমের ছেলে কিশোর সাজিদ। সে একই উপজেলার একটি বেসরকারি স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
এলাকাবাসী জানান, সাজিদের মা সহিদা বেগম বাড়ির পার্শ্ববর্তী রেললাইন পার হচ্ছিলেন। এ সময় তিনি লোহার পাতের একটি অংশে ফাটল দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে একটি লাঠিতে লাল গেঞ্জি বেঁধে ছেলে সাজিদকে তা উড়াতে বলেন। পরে সাজিদ লাল গেঞ্জি উড়িয়ে থামিয়ে দেন ঢাকাগামী আন্তঃনগর দ্রুত যান ট্রেনটি।
সাজিদ হোসেন জানায়, মায়ের নির্দেশে যাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতেই লাল গেঞ্জি নিয়ে রেল লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। ট্রেন আসামাত্র আমি গেঞ্জি উড়াতে থাকি। যখন ট্রেন থামল, তখন ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। পরে ট্রেনের যাত্রী, চালক ও এলাকার অনেকে এসে সাধুবাদ জানিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা দুর্ঘটনার হাত থেকে শত শত যাত্রীসহ ট্রেনটিকে রক্ষা করতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি।
এ বিষয়ে রেললাইন মেরামত কর্মচারী (কি-ম্যান) রায়হান হোসেন বলেন, সাজিদের ট্রেন থামানোর পর অফিস কর্মকর্তাদের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেললাইনের ফাটল জোড়া লাগানো হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
জয়পুরহাট স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আব্দুল হামিদ বলেন, লাল গেঞ্জি উড়িয়ে সাজিদ ট্রেন থামানোর কারণে মারাত্মক একটি দুর্ঘটনার হাত থেকে এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়া গেল। রেল বিভাগের পক্ষ থেকে কিশোর সাজিদকে আপাতত ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জয়পুরহাট থেকে হিলি (ওয়ে) ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বজলুর রশিদ জানান, শীতের কারণে লোহা সংকুচিত হওয়ার কারণে ফাটল দেখা দেয়, তবে ঝুঁকির কোনো কারণ নেই। যে জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে সেখানে ক্লিপ দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আমাদের রেলের লোক সবসময় লাইন চেক করে।