‘ফের লকডাউন একেবারেই পছন্দ করব না’
‘শীতে করোনাভাইরাসের প্রভাব বাড়তে পারে বলে নানা রকম প্রস্তুতির কথা শোনা যাচ্ছে। লকডাউনের আলোচনাও আছে। কিন্তু নিরেট সত্য কথা হচ্ছে, ফের লকডাউন একেবারেই পছন্দ করব না। আবার লকডাউন দিলে করোনার প্রভাবে যে ক্ষতি হবে, তার চেয়ে অর্থনীতির ক্ষতি বেশি হবে।’
বলছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ড. খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবং অর্থনীতির ক্ষতি’ প্রসঙ্গে জাগো নিউজের কাছে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।
ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘সমস্ত চেষ্টাই তো মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। করোনা থেকে বাঁচার জন্য সব স্তব্ধ করে দিলে তো মানুষকে বাঁচানো যাবে না।’
করোনা মোকাবিলায় নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছে মানুষ। বৈশ্বিক এ মহামারিতে দুনিয়ার প্রতিটি প্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোটা দুনিয়ার অর্থনীতি ওলট-পালট হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশও রেহাই পায়নি।
তিনি বলেন, ‘মহামারির মধ্যে বাংলাদেশের জন্য আপাতত সুখের খবর হচ্ছে মৃত্যুর হার কম। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার আক্রান্তের শতকরা ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ইউরোপ-আমেরিকায় মৃত্যুর হার ১০ শতাংশের ওপরে। বিশ্বে গড় ৫ শতাংশের ওপরে। এই চিত্র অবশ্যই আমাদের জন্য কিছুটা পজিটিভ।’
মৃত্যুহার কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কী কারণে বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু কম তার সঠিক তথ্য না মিললেও শীতপ্রধান না হওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত মার্চ থেকে বাংলাদেশে করোনা প্রভাব দেখা যায় আর ঠিক তখন থেকেই গরম শুরু। এবার শীতে আতঙ্ক বাড়ছে হয়তো এ কারণেই।’
‘তবে আমি মনে করি, শীতে বাংলাদেশে ইউরোপ-আমেরিকার মতো হবে না। তাছাড়া করোনার যে ভাইরাসটি এখানে প্রভাব রাখছে তা কিছুটা ক্ষয়িষ্ণু ও দুর্বল বলে মনে করা হয়। গবেষকদের প্রতিবেদনেও তাই উঠে আসছে।’
ফের লকডাউন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখতে হবে। সচেতন ও সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই আমি ফের লকডাউন দেয়ার পক্ষে নই। মানুষ এমনিতেই দিশেহারা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবারও লকডাউন দিলে এসব মানুষ পথে বসে যাবে। তাতে করোনা যে ক্ষতি করবে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি হবে অর্থনীতির। আমাদের সবদিকে বিবেচনা করেই কঠিন এই বাস্তবতাকে মোকাবিলা করতে হবে।’