আজ থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা যাবে না
মা ইলিশ ডিম ছাড়বে। আর এই ডিম ছাড়া থেকেই ইলিশের বংশ বিস্তার হবে। তাই তাকে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে হবে। সেজন্যেই আজ ৯ অক্টোবর ২৪ আশ্বিন থেকে ৩০ অক্টোবর ১৪ কার্তিক পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা যাবে না। সরকার থেকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আর এই নিষেধাজ্ঞাকে শতভাগ কার্যকর করতে অর্থাৎ কোনো মা ইলিশ যাতে নিধন না করা হয় সেজন্যে এ ২২ দিন নদীতে জাল নিয়ে নামা যাবে না।
এদিকে জেলেরা যাতে নিষেধাজ্ঞার এ সময়টাতে মা ইলিশ নিধন না করে, সরকারের নির্দেশনা যাতে তারা মেনে চলে সেজন্য তাদেরকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে বিনামূল্যে। তারপরও যাতে কোনো জেলে নৌকা নিয়ে নদীতে নামতে না পারে সেজন্য প্রশাসনসহ সকল সেক্টরের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে বলে জানা গেছে।
ইলিশ গবেষকদের তথ্য মতে, ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্যে বেছে নেয় বাংলাদেশকে। এজন্যে বর্ষায় এদেশের নদীগুলো মা ইলিশে ভরে ওঠে। মোহনা থেকে নদীর ১২শ’ থেকে ১৩শ’ কিলোমিটার উজানে ও উপকূল থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত সমুদ্রে ইলিশ পাওয়া যায়। দিনে ৭১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে ইলিশের। সাগর থেকে ইলিশ যতো ভেতরের দিকে আসে, ততই শরীর থেকে লবণ কমে যায়। এতে ইলিশের স্বাদ বেড়ে যায়।
এদিকে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার সময় হলে মিঠা পানিতে চলে আসে। আর সে মিঠা পানির নদ-নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পদ্মা-মেঘনা। তাই চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের ৩৭টি জেলার প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার নদীতে স্বাচ্ছন্দ্যে ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতেই এ নিষেধাজ্ঞা।
ইলিশ গবেষকদের মতে, একটি ইলিশ একসঙ্গে কমপক্ষে তিন লাখ ও সর্বোচ্চ ২১ লাখ ডিম ছাড়ে। এসব ডিমের ৭০-৮০ শতাংশ ফুটে রেণু ইলিশ হয়। এর সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে এবং তা ইলিশে রূপান্তরিত হয়।
গবেষকদের থেকে জানা যায়, মানুষের দেহের রক্তের কোলেস্টেরল ও ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ উপশম করে ইলিশে থাকা ‘ওমগো থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’। এছাড়া ইলিশে আছে প্রচুর পরিমাণের ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ। এ মাছের তেলে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’।
ইলিশের এই নানা গুরুত্ব বিবেচনায় প্রজনন মৌসুমে সর্বোচ্চ সংখ্যক ইলিশ যেনো ডিম ছাড়তে পারে এবং ছোট ইলিশ যেনো বড় হতে পারে, সেজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে দেশের জনগণ মনে করেন।