• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দুর্গা মন্দির ও কালী মন্দির ভাংগার প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ

প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও সচেতন মানুষের কারণে ফরিদ দিদার গংয়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনাশের অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে

প্রকাশ:  ২০ জুন ২০১৯, ০৯:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 চাঁদপুর পুরাণবাজার দাসপাড়া দুর্গা মন্দির ও কালী মন্দিরের স্থাপনাসহ প্রতিমা ভাংগার প্রতিবাদে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তাগণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহর চাঁদপুরে এমন ন্যাক্কারজনক ঘৃণিত কাজের সমালোচনা করে বলেন, আমরা ভাবতে পারিনি ফরিদ দিদারের মত একজন সন্ত্রাসী রাতের অন্ধকারে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে। তার লক্ষ্য ছিল চাঁদপুরে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনাশ করা এবং শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সার্বজনীন মন্দিরের সম্পত্তি দখল করা। কিন্তু তার এ চেষ্টা বাস্তবায়িত হয়নি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ভিন্নধর্মাবলম্বী মানুষের জন্যে। ঘটনার পর মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি, প্রশাসনের লোকজন ও সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছেন তাতে আমরা অভিভূত। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীসহ আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এ ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে এখনও বিরাজ করছে আতঙ্ক আর ভয়।
নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সকলের সাথে মিলে মিশে বাস করতে চাই। তারা বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দেবালয়ের নিরাপত্তা ও প্রতিমার সু রক্ষার দাবিসহ চাঁদপুরে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে আর বিনাশ না হয় সেজন্যে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তারা ফরিদ দিদারসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পূজা পরিষদ ও ঐক্য পরিষদের নামে আমাদের কোনো ফেসবুক আইডি নেই। আমাদের সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যদি কোনো অপ্রীতিকর মন্তব্য পোস্ট করে তাহলে আমরা এ জন্যে দায়ী হবো না। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখারও আহ্বান জানানো হয়। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়ের সভাপ্রধানে পৃথক পৃথক ভাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যডঃ রনজিত কুমার রায় চৌধুরী ও জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেসক্লাবের সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী তার বক্তব্যে বলেন, প্রেসক্লাবের সভাপতি হিসেবে নয় একজন সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে বলতে পারি, কোনো অবস্থাতেই চাঁদপুরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা যাবে না। যারা এ কাজের সাথে জড়িত আমরা তাদেরকে ঘৃণা জানাই। ঐদিনের পুরো ঘটনাই ছিল সন্ত্রাসী কার্যক্রম। যারা সেদিন এ ঘটনা দেখেছে তারাই ঘটনা সম্পর্কে বলতে পারবে। তিনি আরো বলেন, মন্দিরের জমি সংক্রান্ত যে মামলা রয়েছে তার নিষ্পত্তি হবে কোর্টে। কিন্ত যে এ কাজ করেছে সেই ফরিদ দিদারের সাথে মামলা বা মালিকানা নিয়ে কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে সে দিন তার কী উদ্দেশ্য ছিল তা প্রশাসন নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে। আয়োজনকারী নেতৃবৃন্দের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন রেখে সাংবাদিকদের মাঝে বক্তব্য রাখেন শাহ মোহাম্মদ মাকসুদ, বি এম হান্নান, গিয়াস উদ্দিন মিলন, সোহেল রুশদী, কে এম মাসুদ প্রমুখ।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, ইকরাম চৌধুরী, গোলাম কিবরিয়া জীবন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, শরীফ চৌধুরী প্রমুখ। হিন্দু নেতৃবৃন্দের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার ও চাঁদপুর হরিবোলা সমিতির সভাপতি অজয় কুমার ভৌমিক। অন্য নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সদস্য সচিব রাধা গোবিন্দ গোপ, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অজিত কুমার সাহা, তপন সরকার, জেলা জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি গোপাল সাহা, সদর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বাসুদেব মজুমদার, সদর উপজেলা পূজা পরিষদের সভাপতি সুশীল সাহা, দাসপাড়া দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি স্বপন কুমার দাস সহ বিভিন্ন মন্দির কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ।

 

সর্বাধিক পঠিত