বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকান্ড
নিশ্চিত মৃত্যুকূপ থেকে ফিরলেন মতলবের রুবেল
ঢাকার বনানী এফআর টাওয়ারের অগ্নিকান্ডে মৃত্যুকূপ থেকে জীবিত ফিরলেন মতলব দক্ষিণ উপজেলার নওগাঁও গ্রামের মাস্টার বাড়ির আমিনুল হকের ছেলে আরিফুল হক রুবেল। রুবেল বনানী এফআর টাওয়ারের ১৭তলায় র্যাবেন সিস্টেম লিমিটেড নামে একটি সফ্টওয়্যার ফার্মে চাকুরি করতেন। তিনি একজন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি এখনও স্বাভাবিক হতে পারছেন না। জীবিত ফেরাটাই তার কাছে বড় অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।
রুবেলের পিতা মতলব বাজারের একজন ব্যবসায়ী। বর্তমানে পিতা ও মাতা মতলব পৌরসভাধীন কলাদী ঘোষপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। তবে তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। দাম্পত্য জীবনে ১ সন্তানের জনক। ১ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়।
রুবেল জানান, অগ্নিকা-ের দিন ওই ফ্লোরে ফায়ার অ্যালার্ম না থাকায় অগ্নিকা-ের বিষয়ে তখনও কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। হঠাৎ তার টেবিলের ডেস্কটপ কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ধোঁয়া ঢুকতে থাকে তাদের ফ্লোরে। রুম থেকে বেরিয়ে প্রথম লিফটের কাছে গিয়ে দেখেন লিফট বন্ধ। দৌড়ে যান সিঁড়ির কাছে। সেখানে ধোঁয়ার কু-লীতে নিচে নামতে পারেননি। শার্ট খুলে নাকে বেঁধে তার মতোই উপরে উঠতে থাকে শত শত মানুষ। সহকর্মী মোজাম্মেল একবার পড়ে গিয়েছিলো। তাকে টেনে তুলে সরু সিঁড়ি ধরে ঠাসাঠাসি করে উপরে উঠতে থাকেন। অন্যদের মতো প্রাণ বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন তিনি।
কোনো রকমে ছাদে উঠে দেখেন শত শত মানুষ বাঁচার জন্যে আহাজারি করছে। কেউ অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। কেউ বাঁচার চেষ্টায় ছোটাছুটি করছে। এফআর টাওয়ার থেকে পাশের আহমেদ টাওয়ারের দূরত্ব ছিলো মাত্র এক ফুট। আহমেদ টাওয়ারের ছাদের গ্রিল ভেঙে মানুষ লাফিয়ে পড়তে লাগলো। রুবেল অন্যদের মতো কীভাবে আহমেদ টাওয়ারে লাফিয়ে এসেছেন বলতে পারবেন না। আহমেদ টাওয়ারের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে গিয়ে মাঝখানে অজ্ঞান হয়ে যান রুবেল। পরে ওই ফ্লোরের একজন তাকে মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। হঠাৎ মায়ের ফোন আসতেই জ্ঞান ফিরে পান তিনি। এভাবেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের কথা বর্ণনা করলেন আরিফুল হক রুবেল।