সাংবাদিক সম্মেলনে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি
আমার জীবনের আর কিছু চাওয়া-পাওয়া নেই, এখন লক্ষ্য একটাই-মানুষের সেবা করা
‘বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ১৯৯৬ সাল থেকে বর্তমান ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পাঁচবার মনোনয়ন দিয়েছেন। এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার আর কিছু নেই। তিনি আমাকে যে মূল্যায়ন করেছেন, যে সম্মান দিয়েছেন, তাতে তাঁর প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। আমি একাধিকবার এমপি হয়েছি, একবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছি। আমার জীবনের আর কিছু চাওয়া-পাওয়া নেই। এখন লক্ষ্য একটাই-মানুষের সেবা করা। আমার স্ত্রী দুনিয়া থেকে চলে গেছেন, আগামী ৮ ডিসেম্বর ২ বছর হবে। সন্তানরা বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। তাই আমার এখন আর ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। জীবনের বাকি সময়টুকু মানুষের সেবা করে যাওয়াই আমার লক্ষ্য।’ জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এসে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি।
তিনি গতকাল শনিবার চাঁদপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। মেজর রফিকুল ইসলাম বলেন, একাত্তর সালে আমরা কখনো ভাবিনি একটা সময়ে এসে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে। কিন্তু এখন তাই করতে হচ্ছে। নির্বাচনে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বিভিন্ন দল বা মতের হতে পারেন। কিন্তু আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, ইতিহাসের ধ্রুব সত্য আপনাকে মানতে হবে, তা প্রকাশ করতে হবে। মা ও মাটি এক। এই মাটি আমার-আপনার থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে। তিনি বেশ দৃঢ়তার সাথে বলেন, প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালীই হোক, আমি ন্যায়ের পক্ষে থাকবো, এখান থেকে কেউ আমাকে এক চুলও নড়াতে পারবে না। সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি বলেন, উন্নয়ন বলি, নির্বাচন বলি, আর যাই কিছু বলি, মিডিয়ার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এসব কিছু সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাতে। আমি আপনাদেরই একজন। ছাত্রজীবনে পত্রিকায় লেখালেখি করেছি, কর্মজীবনে এসেও লেখালেখি করেছি। তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমাকে আপনাদের একজন ভেবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেতে চাই। তিনি আরো বলেন, যাঁরা মান অভিমান করেছেন, তাঁরা আবদারের জায়গা থেকেই করেছেন। বাবার সাথেও তো সন্তানদের মান-অভিমান থাকে। সেটি আবার একটা সময় ঠিক হয়ে যায়। তেমনি আমার নির্বাচনী এলাকার আমার দলের কিছু নেতা-কর্মীর বেলায়ও হয়েছে। ওসব কিছু ঠিক হয়ে গেছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই।
হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার বলেন, হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির চিত্র এক সপ্তাহ আগে আপনারা যেমনটি দেখেছেন এখন আর যে অবস্থায় নেই। এখন সকলে নৌকার প্রার্থীর বিজয়ের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মান-অভিমান থাকতে পারে। কিন্তু আমরা বেঈমান নই।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ ওচমান গণি পাটওয়ারী। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারীর সভাপ্রধানে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী ও প্রচার সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলমসহ সিনিয়র সকল সাংবাদিক, বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ। সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপিকে সকল সাংবাদিকের পক্ষ থেকে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া বীর প্রতীক তারামান বিবির মৃত্যুতে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জীবনের অনুরোধে উপস্থিত সকল সাংবাদিক দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমকে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্যে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন।