তিনি সবার আপা
চাঁদপুরের একটি গ্রামে শাড়ি পরিহিত একজন নারী হাঁটছিলেন। তাঁর সাথে রয়েছেন আরো ক’জন মানুষ। একটু সামনে এগুতেই গ্রামের মধ্যবয়স্ক একজনের চোখে পড়েন তিনি। মুহূর্তেই চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস নিয়ে লোকটি উল্টো দিকে ভোঁ-দৌড়। কয়েক সেকেন্ড পর মানুষটির উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে শোনা গেলো : আপা আইছে...আপা আইছে...। তার ‘আপা আইছে’ ধ্বনি শুনে দল বেঁধে মানুষ জড়ো হতে থাকলো। কিছুক্ষণ পর দেখা গেলো শাড়ি পরা ওই নারীর চারপাশে ঘিরে আছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। এ মানুষগুলো তাঁর সাথে কথা বলেই যাচ্ছে। তারা যেনো তাদের খুব আপনজনকে কাছে পেয়েছে। ওই নারীও তাদের কথা হাসিমুখে শুনছেন।
এ নারী আর কেউ নন, তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তিনি বর্তমানে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য। যদিও শহর কিংবা গ্রামে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে ‘আপা’ হিসেবে পরিচিত। তিনি যেখানেই যান ছোট-বড় সবাই তাঁকে সম্বোধন করেন আপা হিসেবে। তিনিও সাধারণ মানুষের সাথে একাত্ম হয়ে কথা বলেন। আর নারীরা তাঁকে কাছে পেলে তো কোনো কথাই নেই। কখনো বুকে জড়িয়ে ধরেন, আবার কখনো মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দোয়া করে দেন। তিনি শোনেন তাদের সুখ-দুঃখ, সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা। তাই তাঁকে দেখলে সব শ্রেণির মানুষ নিঃসঙ্কোচে তাঁর কাছে ছুটে আসেন। বলছিলাম সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনি এমপির কথা। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি কেবলই ‘দীপু আপা’। বিশেষ করে নারীদের কাছে এই নারী নেত্রী এবং নারী সংসদ সদস্যের কদর ভিন্ন মাত্রার। যা ভোটের বেলায় বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। চাঁদপুর-৩ নির্বাচনী এলাকার নারী ভোটারদের কাছে আকাশচুম্বী গ্রহণযোগ্যতা এই সংসদ সদস্যের।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৩নং কল্যাণপুর ইউনিয়নের একজন সাদামাটা মানুষ সফু পাটওয়ারী বলেন, সাধারণ মানুষকে আপন করে নেয়াটা ডাঃ দীপু মনির বড় গুণ। যখনই তিনি এ গ্রামে এসেছেন সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। কখনো কখনো বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ভালো-মন্দ জানতে চেয়েছেন। তাঁর আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ।
হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী গ্রামের কলেজ ছাত্রী ফাতেমা আক্তার বলেন, ডাঃ দীপু মনিকে আমাদের কখনো দূরের মানুষ বলে মনে হয়নি। আমরা মনে করি, তিনি আমাদেরই খুব কাছের মানুষ। এ পর্যন্ত এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে যতবার তাঁকে জানিয়েছি ততবারই তিনি সেসব সমস্যা সমাধানের দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছেন। জনপ্রতিনিধি এমনই হওয়া উচিত।
চাঁদপুর পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার বলেন, আমাদের সৌভাগ্য আমরা ডাঃ দীপু মনির মতো একজন এমপি পেয়েছি। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের সুঃখ-দুঃখের সাথী হয়ে একদশক চাঁদপুরবাসীর উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি শহর- গ্রাম-গঞ্জ চষে বেড়িয়েছেন। তিনি শুধু একজন সংসদ সদস্যই নন, তিনি একজন সফল কূটনীতিক। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিবিড়। সাধারণ মানুষের সাথে মিশতে মিশতে তিনি সাধারণ মানুষদের আপন একজন হয়ে উঠেছেন। সেজন্যে আপামর মানুষ তাঁকে ‘আপা’ বলে সম্বোধন করে।
মানুষের এসব অভিব্যক্তি নিয়ে কথা হয় ডাঃ দীপু মনি এমপির সাথে। তিনি সহাস্যে বলেন, সবাই আমাকে আপা বলে সম্বোধন করে, এটি আমার জন্যে আনন্দের বিষয়। আমার খুব ভালো লাগে। আমি চাই না জনগণের প্রতিনিধির সাথে জনগণের দূরত্ব থাকুক। তারা নিঃসঙ্কোচে আমাকে তাদের ভালোমন্দ ও অভাব-অভিযোগ জানায়। আমি সাধ্যমতো তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। এলাকার কোনো সমস্যা থাকলে সেগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্ন তাঁর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া, সুখ-দুঃখের ভাগিদার হওয়া ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমি সাধারণ মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। তাদের সাথে সবসময় আমার সম্পর্ক আপনজনের মতো থাকবে--এটাই স্বাভাবিক।
দীপু মনি বলেন, আমি চাই সাধারণ মানুষ আমাকে তাদের নিজের একজন মনে করে আমাকে আপাই ডাকুক। আমি শুধু তাদের ভালোবাসা ও দোয়া চাই।