রাজধানীতে নিজ ফ্ল্যাটে ব্যবসায়ী খুন
রাজধানীর আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন মঞ্জিল হক (২৮) নামে এক ব্যবসায়ী। সোমবার দুপুরে বাড্ডা থানা পুলিশ ওই আবাসিক এলাকার বি ব্লকে ৩ নম্বর রোডের ছয়তলার ফ্ল্যাট থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। ৭ তলা ওই ভবনের বাসিন্দা ও নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়া পর মঞ্জিল হক ওই ফ্ল্যাটে একাই বসবাস করতেন।
নিরাপত্তাকর্মীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মঞ্জিল হকের ফ্ল্যাটে প্রায় সময় বন্ধুদের যাতায়াত ছিল। রোববার রাতেও ওই ফ্ল্যাটে চার যুবক এসেছিল। তারা রাতে ওই ফ্ল্যাটে অবস্থান করে সকালে স্বাভাবিকভাবেই বেরিয়ে যায়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ এক তরুণীকে আটক করেছে। এছাড়া ওই ভবন ছাড়াও আশপাশের ভবন এবং ৩ নম্বর সড়কে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ সন্দেহভাজন ঘাতকদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
বাড্ডা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ফ্ল্যাট থেকে পা বাঁধা অবস্থায় মঞ্জিল হকের জবাই করা লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বনশ্রীতে একটি মোটর ওয়ার্কশপের মালিক মঞ্জিল হকের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায়। তার বাবার নাম মনিরুল হক।
সোমবার সরেজমিন পরিদর্শনের সময় তিন কক্ষের ওই ফ্ল্যাটের বিভিন্ন স্থানে ছোপ-ছোপ রক্তের দাগ দেখা যায়। এর মধ্যে মঞ্জিল হককে যে কক্ষে হত্যা করা হয়েছে সেখানে রক্তের সে াত। বাড়িটির নিরাপত্তাকর্মী আমির হোসেন যুগান্তরকে জানান, রাত-বিরাতে মঞ্জিল হকের ফ্ল্যাটে বন্ধু-বান্ধব আসতেন। তারা গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা দিতেন। এ নিয়ে অন্য ফ্ল্যাট মালিকরাও মঞ্জিল হকের ওপর বিরক্ত ছিলেন। তবে ফ্ল্যাট মালিক হওয়ায় মঞ্জিল হককে তারা কিছু বলতেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঞ্জিল হকের এক প্রতিবেশী যুগান্তরকে বলেন, ‘আগে থেকেই কিছুটা উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন মঞ্জিল হক। কয়েক মাস আগে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর থেকে উচ্ছৃঙ্খলতার মাত্রা আরও বেড়ে যায়।’
বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ বলেন, ‘কারা কি কারণে মঞ্জিল হককে খুন করেছে প্রাথমিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তদন্তে পারিবারিক বিষয় ছাড়াও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছে পুলিশ। ৩ নম্বর সড়ক ছাড়াও বিভিন্ন ভবনে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘাতকদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
এ ঘটনায় শারমিন আক্তার ওরফে নিশি নামের এক তরুণীকে আটক করার তথ্য থাকলেও বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী যুগান্তরকে জানান, এ মুহূর্তে আটক শব্দটি বলা ঠিক হবে না। মূলত কিছু তথ্য জানতে তাকে আনা হয়েছে।
সূত্রঃ যুগান্তর