• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

প্রধান বিচারপতির বিমানের টিকিট রেডি

যেকোনো সময় অস্ট্রেলিয়া রওনা

প্রকাশ:  ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:০৯ | আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:২১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যেকোনো সময় অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হতে পারেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার ভিসা হাতে পেয়েছেন। ভিসা প্রসেসিং শেষে তিনি পাসপোর্টও ফেরত পেয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। সূত্র মতে, বিমানের টিকিটও করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তাঁর বড় মেয়ের বাসায় উঠবেন।

এদিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতারা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের নেতৃত্বে একটি অংশ বলছে, প্রধান বিচারপতিকে বল প্রয়োগ করে ছুটি নিতে বাধ্য করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন সমিতির সভাপতি। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় আজ থেকে পাঁচ দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন তাঁরা। সমিতির সভাপতি-সম্পাদকসহ নির্বাচিত আটজন সদস্য বিএনপি সমর্থক আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।

অন্যদিকে সমিতির সহসভাপতি মো. ওজিউল্লাহর নেতৃত্বে অন্য অংশ ভিন্নমত পোষণ করছে। ওই অংশের নেতারা  রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন। সহসভাপতি ওজিউল্লাহসহ সমিতির ছয়জন নির্বাচিত সদস্য সরকার সমর্থক আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।

এ ছাড়া গতকাল ডা. সজল ব্যানার্জী, আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী, হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (হিসাব) ফারজানা ইয়াসমীন এবং প্রধান বিচারপতির বন্ধু হিসেবে পরিচিত গুলশানের ব্যবসায়ী আতিক চৌধুরী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তাঁর বাসায় দেখা করেন। ডা. সজল ব্যানার্জী গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসভনে যান। তিনি সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা ছিলেন। প্রধান বিচারপতি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে এই চিকিৎসক নিয়মিত তাঁকে দেখছেন।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ক্যান্সারের রোগী। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গত ২ অক্টোবর থেকে এক মাসের ছুটিতে আছেন তিনি। এরই মধ্যে গত ৫ অক্টোবর তিনি সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করেন। সেদিন তিনি ও তাঁর সহধর্মিণী গুলশান ২ নম্বর সার্কেলে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা সেন্টারে যান। সেখানে তাঁরা বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাসায় ফেরেন। ওই দিন বিকেলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান বিচারপতির বাসায় যান এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর প্রধান বিচারপতি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান পূজা দিতে। সেখানে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তর সঙ্গে কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এ ছাড়া গত ৬ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসায় যান প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

তবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে যেতে চাইলে মত্স্য ভবন মোড়ে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। এ অবস্থায় গতকাল সকাল ১১টায় সমিতি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকট জয়নুল আবেদীন ছুটি নিয়ে প্রধান বিচারপতির বিবৃতি দাবি করেন। পাশাপাশি বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের সব আইনজীবী সমিতিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদসভার কর্মসূচি পালন করতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান। জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘সংবিধানে স্বাধীন বিচারব্যবস্থার কথা আছে।

কিন্তু আজ এই স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রধান কর্তাব্যক্তি প্রধান বিচারপতি নিজেই স্বাধীন নন। তিনি পরাধীন। ওনাকে সরকার বল প্রয়োগ করে ছুটিতে পাঠিয়েছে, যা বিচার বিভাগের সঙ্গে সরকারের প্রতারণা। তারা প্রধান বিচারপতিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তিনি অন্তরীণ। অবস্থা এমন যে একমাত্র সরকারি নির্দেশিত ব্যক্তিরাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবে, অন্যরা নয়। ’ ওই সময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহসভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কার্যনির্বাহী সদস্য আয়শা আক্তার ও শামীমা সুলতানা দীপ্তি। এ ছাড়া বিএনপি সমর্থক অর্ধশতাধিক আইনজীবী উপিস্থত ছিলেন।

এরপর সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট নুরে-ই আলম উজ্জ্বল সাংবাদিকদের জানান, সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের সঙ্গে তাঁরা একমত নন। তাই এ বিষয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের অবস্থান জানানো হবে।