তিন দিনব্যাপী চতুরঙ্গ ইলিশ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও সফল সমাপ্তি
যত বেশি ইলিশ উৎপাদন হবে অর্থনৈতিকভাবে আমরা তত বেশি লাভবান হবো : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি
'জেগো উঠো মাটির টানে' এ শ্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হওয়া সেবা সিটি সেন্টার চতুরঙ্গ ইলিশ উৎসব ১ যুগ পূর্তি অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনপূর্বক সফল সমাপ্তি ঘোষণা করেন চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গতকাল ৩ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দ্বাদশ ইলিশ উৎসবের উদ্বোধন ও সফল সমাপ্তি ঘোষণাকালে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, একটি উৎসব দীর্ঘ ১১ বছর পেরিয়ে ১২ বছরে পদার্পণ করে যুগপূর্তি পালন করা সত্যিই দুরূহ ব্যাপার। আমি আয়োজকদের এজন্যে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ, যত বেশি উৎপাদন করা যাবে আমরা ব্যবসায়িকভাবে তত বেশি লাভবান হতে পারব। সারা পৃথিবীতে যত ইলিশ উৎপন্ন হয় তার মধ্যে বেশি ইলিশ উৎপন্ন হয় চাঁদপুরে। এই উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার গৃহীত অভয়াশ্রম কর্মসূচি ও মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম চলাকালে যারা সহযোগিতা দিয়ে আসছেন তাদেরকেও অভিনন্দন জানাই। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে। আমরা আশা রাখি আগামীতে আরো অনেক বেশি পরিমাণ ইলিশ উৎপাদনে আমরা সক্ষম হবো। জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে আজ কৃষি, মৎস্য, ফলজ থেকে শুরু করে উৎপাদনশীল সকল পণ্যে আমরা সফলতা লাভ করছি। আমাদের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি করোনাকালীন সময় চতুরঙ্গ এমন একটি উৎসব করায় আয়োজকদের আবারো ধন্যবাদ প্রদান পূর্বক সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান এবং চতুরঙ্গের সফলতা কামনা করেন।
পরে অনুষ্ঠিত হয় সংসদীয় বিতর্ক। স্পীকারের দায়িত্ব পালন করেন চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমীর অধ্যক্ষ ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া। সংসদীয় বিতর্কে সরকার পক্ষ দলে অংশগ্রহণ করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশানাল স্কুল এন্ড কলেজ এবং বিরোধী দলে অংশগ্রহণ করে চাঁদপুর সরকারি কলেজ।
বিতর্ক শেষে অনুষ্ঠিত হয় গোলটেবিল বৈঠক। বৈঠকে মা ইলিশের ডিম সংরক্ষণ ও বিক্রি বন্ধে অসাধু জেলেদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান, অভিযানকালীন সকল মাছ ধরার নৌকা প্রশাসনের আওতায় আনা, নদীতে বালু উত্তোলন না করাসহ বিভিন্ন দাবি উঠে আসে। বৈঠকে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হেসাইন।
চতুরঙ্গ ইলিশ উৎসব কমিটির আহ্বায়ক রোটাঃ কাজী শাহাদাতের সভাপ্রধানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবিএম মাজহারুল আনাম, সংবর্ধিত অতিথি ট্রাস্ট ব্যাংক লিঃ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরাইয়া তালুকদার, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক সেলিম খান, চাঁদপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আলমগীর বাহার ও নাজ মিউজিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাডঃ নাজমা আক্তার। এছাড়াও মৎস্যজীবী নেতাগণ মা ইলিশ রক্ষায় করণীয় বিষয়ের উপর তাদের মতামত তুলে ধরেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চতুরঙ্গের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চতুরঙ্গের মহাসচিব ও উৎসবের রূপকার হারুন আল রশীদ।
অনুষ্ঠানে ট্রাস্ট ব্যাংক লিঃ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট রোটাঃ সুরাইয়া বেগম ও ১৯৭১-এ সরকারি গেজেটভুক্ত কণ্ঠযোদ্ধা কৃষ্ণা সাহাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। পরে অনুষ্ঠিত হয় চতুরঙ্গ, নৃত্যাঙ্গন ও নাজ মিউজিক সেন্টারের সৌজন্যে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিলো দর্শকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা। তারা বিকেল থেকে শুরু হওয়া রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন ধৈর্য ধরে। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয় এবং বিজয়ীদের মাঝে ক্রেস্ট বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।