• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় মা ইলিশ নিধনকালে আটক ১৪৩

প্রকাশ:  ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে থেমে নেই নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ নিধন। পূর্ণিমা রাতে প্রাকৃতিক কারণেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ডিম ছেড়ে থাকে। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্যেই সাগর-নদ-নদীতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ, পরিবহন ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ অভিযান চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত। সেই সুবাদে ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞ আর মাত্র কয়েকটি দিন। কিন্তু জেলেরা আইন না মেনে প্রতিদিনই নদীতে ইলিশ শিকার করছে। অন্যদিনের মতো চাঁদপুরের অভয়াশ্রম এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ ধরায় নৌপুলিশ ও টাস্কফোর্সের পৃথক অভিযানে ১৪৩ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে নৌপুলিশের অভিযানে আটক ১০৪ জেলে এবং সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্সের যৌথ অভিযানে আটক হয় ৩৯ জেলে। শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর সদর নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান নৌপুলিশের অভিযানের তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নৌপুলিশের অভিযানে অভয়াশ্রম এলাকা থেকে ইলিশ ধরাবস্থায় হাতেনাতে ১০৪ জেলে আটক হয়। জব্দ করা হয় ৭ লাখ ৫৯ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, ৫৭৪ কেজি ইলিশ এবং ৩৩টি মাছ ধরার নৌকা। এসব ঘটনায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৪২ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, ৮ জেলেকে ৩৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, ১৬ জেলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকি ৩৮ জেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়।
নৌ ওসি আরো জানান, সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। জব্দকৃত ইলিশ মাছ স্থানীয় এতিমখানা ও গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কারেন্ট জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং জব্দকৃত নৌকা থানা হেফাজতে রয়েছে।
অপরদিকে চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্সের অভয়াশ্রম এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টার অভিযানের তথ্য জানিয়েছেন সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ তানজিমুল ইসলাম। তিনি জানান, অভিযানে আটক ৩৯ আসামির মধ্যে ১০ জনকে ১ মাস ও ২৮ জনকে ৭ দিন করে কারাদণ্ড দিয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিগার সুলতানা। এক আসামি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়। একই সময় জব্দ করা হয় ৩টি মাছ ধরার নৌকা। এছাড়া অভিযানে জব্দকৃত ৬০ কেজি ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ এবং ৫০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।
টাস্কফোর্সের এসব অভিযানে নেতৃত্ব দেন চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মোঃ মেহেদী হাসান, নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামানসহ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। অভিযানে নৌপুলিশের একাধিক দল ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সহযোগিতা করেন।
গবেষণায় জানা গেছে, আশ্বিনের অমাবস্যা থেকে কার্তিকের পূর্ণিমা পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ বছর নদী ও সমুদ্রে বিচরণরত ইলিশের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ইলিশ ডিম ছাড়ার উপযুক্ত হয়। এ সময় দেশের ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে হলে প্রধান প্রজননের এই সময়ে মাই ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে হবে।

 

সর্বাধিক পঠিত