• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

পদ্মা-মেঘনায় ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ জেলে আটক

প্রকাশ:  ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইলিশ শিকারীরা। জেল-জরিমানা এমনকি সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই অবাধে চলছে মা ইলিশ নিধন। জেলেরা প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিয়ে ব্যস্ত হয়ে ইলিশ ধরার মহোৎসব চালাচ্ছে দিনে ও রাতে। হাইমচর নদী এলাকা থেকে শুরু করে মতলবের এখলাশপুর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর, শরিয়তপুর জেলার চেয়ারম্যানের স্টেশন, দুলারচর, সুরেশ্বর, মুন্সিগঞ্জের মাওয়া পর্যন্ত পদ্মা নদীতে জেলেরা দল বেঁধে ইলিশ শিকারে নদী চষে বেড়াচ্ছে। নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের আহরিত ইলিশ নদীর পাড়ে পাড়ে, শহরের পাড়া-মহল্লায়, গ্রামে গ্রামে ঢুকে এক শ্রেণীর মৌসুমী মাছ বিক্রেতা ফেরি করে মাছ বিক্রি করছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে এমন তথ্য জানা যায়।
তাদের নিবৃত্ত করতে স্থানীয় নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় জেলা উপজেলা টাস্কফোর্সের অভিযানও থেমে নেই। প্রতিদিনই জেলে আটক হচ্ছে। জব্দ করা হয় তাদের জালসহ নৌকা ও মাছ।
২৭ অক্টোবর চাঁদপুর নৌ পুলিশের প্রেসনোট থেকে জানানো হয়, গত চব্বিশ ঘণ্টায় চাঁদপুরের মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধনকালে পৃথক অভিযানে ৮৮ জেলে আটক হয়েছে।
এরমধ্যে নৌ পুলিশ ৭২ জন, সদর উপজেলা টাস্কফোর্স ৫ জন ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স ১১ জনকে আটক করে।
চাঁদপুর সদর নৌ-থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নৌ পুলিশ মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৭২ জন জেলেকে আটক করেন। এর মধ্যে ১৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা, ১০ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকী ৪৫ জেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়। এসব ঘটনায় দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ১৪টি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, অভিযানে জব্দকৃত ৬৭২ কেজি ইলিশ স্থানীয় এতিমখানা ও গরিবদের মাঝে বিতরণ, ৫ লাখ মিটার কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং ২৬টি মাছ ধরার নৌকা নৌ পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তানজিমুল ইসলাম জানান, মেঘনা নদীর সদর এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় আটক ৫ জেলের মধ্যে ৩ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮ দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুন্নাহার এবং ২ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা রেখে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। জব্দকৃত ১০ হাজার মিটার কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং ৩ কেজি ইলিশ স্থানীয় গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
অপরদিকে হাইমচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহবুব রশীদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাইমচরে ১১ জেলেকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ৫ জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চাই থোয়াইহলা চৌধুরী। বাকি ৬ জেলের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে নিয়মিত মামলা করে কারাগারে পাঠানো হয়।
জব্দকৃত ৪৭ হাজার মিটার কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং ৫০ কেজি ইলিশ স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ। এছাড়া মাছ ধরার একটি নৌকা উপজেলা টাস্কফোর্স হেফাজতে রয়েছে। অভিযানে সহযোগিতা করেন কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ।
উল্লেখ্য, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মৎস্য আহরণের নিষিদ্ধ সময় চলমান রয়েছে। আইন অমান্য করে কোনো জেলে মাছ শিকার করলে তার বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

 

সর্বাধিক পঠিত