• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে আখের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশ:  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আখের ভালো ফলন পেয়েছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার চাষিরা। আখের ফলন ভালো হওয়ায় এবং দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। আখ চাষিরা এবার লাভবান হতে পারবেন বলে তাদের আশা। এখন আখ কাটা এবং বিক্রির ভরা মৌসুম। উপজেলার আখ চাষ এলাকার চতুর্দিকে এখন আখ কাটার হিড়িক দেখা গেছে। তবে সার এবং কীটনাশকের দাম নিয়ে তারা একটু হতাশা প্রকাশ করেন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে পুরো উপজেলায় ২৮০ হেক্টর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো। কিন্তু দেখা যায় কৃষকরা আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২৯০ হেক্টরের বেশি জমিতে আখ চাষ করেন। বিশেষ করে উপজেলার ১, ২, ৭, ৮, ৯, ১৫, ১৬নং ইউনিয়ন এবং পৌরসভার কিছু কিছু জায়গায় আখ চাষ করা হয়। যার মধ্যে শুধু ১নং বালিথুবা ইউনিয়নেই ২০০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বিশেষ করে রংবিলাস, চাঁদপুর গ্যান্ডারি, ঈশ্বরদী, মানিকগঞ্জ ২০৮ জাতের আখ চাষ বেশি হয়।
ছোট-বড় সাইজের প্রতি পিচ আখ খুচরা বাজারে ১০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। আখের পাইকাররা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, জমিন থেকে আখ তুলে শ্রমিকের পয়সা এবং পরিবহন খরচ দিয়ে আমাদের বেশি একটা লাভ হয় না। ফরিদগঞ্জ উপজেলার আখ বিশেষ করে কুমিল্লা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়।
আখ চাষিদের মধ্যে দক্ষিণ মদনেরগাঁও খাসের বাড়ির এমরান খান জানান, তিনি মোট ৩০০ শতাংশের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে তার খুব ভালো ফলন হয়েছে। সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন এ বছর তার ৭ লক্ষ টাকা আখ বিক্রিতে আসবে।
সুজন খান নামের একজন আখ চাষি বলেন, তিনি ২ শত ৭০ শতক জমিনে আখ চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি আখ বিক্রি করতে পারবেন ৪ লাখ ৫০ হাজার বা কিছু বেশি টাকা। তিনি বলেন, সারের দাম খুব বেশি হওয়ায় এবং তার ফলন খারাপ হওয়ার কারণে বেশি লাভ হবে না।
দক্ষিণ মদনেরগাঁও নোয়াবাড়ির হারুন নামের আরেকজন আখ চাষি বলেন, তিনি ১৫০ শতক জমিনের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন এ বছর তার আখ বিক্রিতে আসবে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
মানিকরাজের মহসিন পাটোয়ারী বলেন, তিনি ২৭ শতাংশ জমিনের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন আখ বিকৃতিতে তার ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা আসবে।   
কিছু আখ চাষীরা বলেন, রং বিলাস জাতের আখ তারা চাষ করেছেন। এ আখ খেতে খুব সুস্বাদু এবং খুব মিষ্টি ও খুব বেশি রসালো। এ জাতের আখ ফরিদগঞ্জে খুব কম চাষি চাষ করেন। তারা বলেন, অত্র এলাকায় প্রায় ২০০ হেক্টর জমিনের মধ্যে আখ চাষ করা হয়েছে। তারা আরো বলেন, এ বছর আখের দাম বেশি পেলেও সারের দামের তুলনায় আখের দাম কম। তারা আরো বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের আখ চাষিদের জন্য কোনো রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে না। আখ চাষিরা বলেন, এবারের মৌসুমে আখের ভালো ফলন হয়েছে। ছোট-বড় সাইজের প্রতি পিস আখ বাজারে ১০-৬০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি করা যাচ্ছে।  দাম ভালো পাওয়ায় তারা খুব খুশি।
এছাড়া আখ চাষি আব্দুর রব খান, হাসিম, সুজন, তাফাজ্জল মিয়া, জসিম হোসেন বলেন, সারের দামের তুলনায় গতবারের চেয়ে এ বছর আখের দাম অনেক কম। খরচের তুলনায় আখের দাম আরও একটু বেশি হলে আমরা লাভবান হতে পারতাম। গত বছর এক পিচ আখ ১৫/২০ টাকা বিক্রি করলেও এ বছর আমরা পাইকারদের কাছে বিক্রি করছি ৭ থেকে ১৫ টাকা।   
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে জানা যায়, এ বছর ২৮০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করার টার্গেট থাকলেও করা হয়েছে ২৯০ হেক্টরের বেশি। আখ চাষে কৃষি অফিস থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা করা হয় বলে তারা জানান।

 

সর্বাধিক পঠিত