সাংবাদিকদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণকালে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি
সাংবাদিকদের উন্নয়নে শেখ হাসিনার সরকার যা করেছেন পূর্বে কোনো সরকারই তা করে নি
সাংবাদিকবান্ধব শেখ হাসিনার জন্যে আমাদেরও কিছু করণীয় রয়েছে : সুভাষ চন্দ বাদল
গত ২৯ জুলাই চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে চাঁদপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে কল্যাণ অনুদান ও আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করেন প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও চাঁদপুর প্রেসক্লাব আয়োজিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিক ও সুধীজনদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র (বাদল)।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে ও পরিচালনায় অতিথিদের মাঝে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম কবির। তিনি প্রতিষ্ঠানের সেবামূলক কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং আগামীতেও সাংবাদিকদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপকভাবে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটারিয়ান কাজী শাহাদাত ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস।
চিকিৎসা সহায়তা ও আর্থিক সহায়তার চেক গ্রহণকারীদের মধ্যে অনুভূতি প্রকাশপূর্বক বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সদস্য আব্দুর রহমান, মরহুম আবদুস সোবহান রানার স্ত্রী শিরিন আক্তার ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে সুধীজনদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাঁদপুর সদর সার্কেল ইয়াসিন আরাফাত, সুভাষ চন্দ্র বাদলের সহধর্মিণী স্মৃতি রাণী দে, পিপি অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাব ও জেলার অন্যান্য উপজেলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ সুধীজন।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের ইতিবাচক ভূমিকার বিকল্প নেই। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সংবাদপত্রের লেখনীর উপর অনেকেই তাদের মতামত গ্রহণ করে থাকেন। তাই সংবাদপত্রে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন একান্তই আবশ্যক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। বর্তমানে তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাংবাদিক সমাজের কল্যাণে অনুরূপভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
ডাঃ দীপু মনি সংবাদপত্র জগতের মানুষদেরকে নিজের আপন মানুষ উল্লেখ করে বলেন, চাঁদপুরের সংবাদপত্র জগতের মানুষের সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। সবসময়ই আমি তাদের সহযোগিতা পেয়ে আসছি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্নই দেখান না তা বাস্তবায়নেও কাজ করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আমরা ২০২৯ সালে টেকসই ও উন্নয়নশীল বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে সক্ষম হবো। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসেন এবং মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। তারই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর মানুষের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ করে চলছেন। আজ বিদ্যুৎ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সর্বক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি মানবাধিকার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ, মা বোনদের সম্রমহানি, ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা, ২০১১ সালে নির্বাচনের পরবর্তী সময় নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে বাড়ি-ঘরে আগুন, সন্ত্রাস, নারী ধর্ষণ, সাংবাদিক প্রবীর, হুমায়ুন কবির, বাবুদের হত্যাসহ সাংবাদিকদের উপর নির্মম নির্যাতন, নিপীড়ন, ২০১৩/২০১৪ সালে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, অগ্নি সন্ত্রাস করা হলো! তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার। তখন কি মানবাধিকার লঙ্গন হয়নি। আজ একটি দল মানবাধিকার লঙ্গন হচ্ছে বলে একের পর এক মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। তারা নাকি স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছেন না, অথচ টিভি খুললেই টকশোতে তাদের দেখা যায়। তাদের কথা শুনলে মনে হয় দেশে সরকার নেই। মানুষ একদিন এই মিথ্যাচারের জবাব দিবে, মিথ্যাচারের অবসান হবে। তিনি দেশের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্যে নৌকার পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি শেখ হাসিনা সরকার পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত না হতে পারে, তাহলে দেশের এই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে, পিছিয়ে যাবে সকল উন্নয়ন কার্যক্রম। তিনি সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার, সাংবাদিকদের উন্নয়নে শেখ হাসিনার সরকার যা করেছেন পূর্বে কোনো সরকারই তা করেন নি উল্লেখ করে তিনি মিথ্যা অপপ্রচার রুখতে সাংবাদিকদেরও কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার আমলেই সাংবাদিকরা নির্যাতন নিপীড়নের স্বীকার হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নয়। তিনি আরো বলেন, এই দলটির আমলেই গণতন্ত্র ব্যাহত হয়েছে, নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, ভুয়া ভোটার সৃষ্টি হয়েছে, দেশ বিরোধীরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে, নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে, গ্রেনেড হামলা করে ৬৪জনকে হত্যাসহ অনেক নিষ্ঠুরতম ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুভাষ চন্দ (বাদল) বলেন, বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারকে আমরা সাংবাদিকবান্ধব সরকার বলে মনে করি। তিনিই ২০১৪ সালে আইন করে সাংবাদিকদের কল্যাণে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জন্যে অনেক কাজ করেছেন, আমাদেরকে অনেক সহায়তা দিয়েছেন, আমরা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে অসচ্ছল সাংবাদিক সন্তানদেরকে পঞ্চম শ্রেণী থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য শিক্ষা বৃত্তি চালু করতে যাচ্ছি, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছে অনুযায়ী হচ্ছে এমন সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যও আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি চাঁদপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, চাঁদপুরের সাংবাদিকগণ অত্যন্ত স্বজ্জনব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন ও অতিথিপরায়ন। তাদের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ। আমি তাদের সাফল্য কামনা করছি। তারা তাদের কর্মদক্ষতা দিয়ে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবেন।
মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৩ উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ