• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হাজীগঞ্জের সেই ধর্ষক কিশোর নয় প্রাপ্ত বয়স্ক!

প্রকাশ:  ১৭ মে ২০২৩, ১১:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

হাজীগঞ্জের সেই ধর্ষক রায়হান মূলত কিশোর নয়, সে ১৮ বছরের পরিপূর্ণ তরুণ।  জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী তার বয়স ১৮ বছরের বেশি বলে নিশ্চিত করেছেন হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ নজরুল ইসলাম।
তরুণকে কিশোর সাজিয়েছে কথিত সালিসদার। যাদের মধ্যে অন্য অন্যতম গ্রেফতার হওয়া ইউপি সদস্য রহমত উল্লাহ্। বিষয়টি হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ নিশ্চিত করেছে। ১৬ মে মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। ১৫ মে সোমবার বিকেলে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে গত ২১ এপ্রিল উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের লাওকরা গ্রামের সর্দার এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষক এ বাড়ির সিরাজুল ইসলাম ওরফে ছেরু সর্দারের ছেলে। মেয়েটি একই বাড়ির বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মার্চ বিকেলে মাছের খাদ্য মাথায় তুলে দেওয়ার কৌশলে কিশোরীকে ঘরের ভেতরে ডেকে নিয়ে যায় মোঃ রায়হান। এরপর তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এছাড়া প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ১২ মে শুক্রবার বিকেলে ইউপি সদস্য রহমত উল্লাহর নেতৃত্বে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও দুই পরিবারের লোকজনকে নিয়ে সালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওই বৈঠকে ধর্ষক ও ধর্ষণের শিকার কিশোর-কিশোরীর অপ্রাপ্ত বয়স ও সম্পর্কে চাচা-ভাতিজির কথা উল্লেখ করে কিশোরীর পরিবারকে চাপ-সৃষ্টি করা হয় এবং কিশোরীর চিকিৎসার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় রফাদফা করে স্ট্যাম্পে দুই পক্ষের স্বাক্ষর নেয়া হয়। ওই সময় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাইয়ুম বেপারী, কুদ্দুস সর্দারসহ চারজন সালিস এবং দুপক্ষের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন বলে কিশোরীর পরিবার জানান।
ধর্ষক মোঃ রায়হান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে উল্লেখ করে হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে রায়হানের বয়স ১৫ বছর দাবি করা হলেও জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী তার বয়স ১৮ বছরেরও বেশি। এসময় তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, অন্য সালিসদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনায় পুলিশ গত সোমবার সবমিলিয়ে অভিযুক্ত ৫ জন আটক করেছে। তারা হলেন : রায়হানের বোন হাজেরা বেগম (২৫) ও খালেদা আক্তার (২২), চাচাতো ভাই ও একই বাড়ির হাসান সর্দারের ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান সর্দার (৩০), ইউপি সদস্য মোঃ রহমত উল্যাহ্ (৪৩)। আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হলে সবাইকে আদালত জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।

আর আগে এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে উল্লেখিতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধিত ২০০৩-এর ৯ (১)-এর ২০২/২১২/২১৩ ধারায় দায়েরকৃত মামলার সকল আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।