• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে সড়ক জুড়ে গাছের গুঁড়ি ॥ যেনো মরণ ফাঁদ

প্রকাশ:  ০৮ নভেম্বর ২০২২, ১১:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 সড়কের দুই পাশ জুড়ে কোথাও গাছের গুঁড়ি, কোথাও স’ মিলে ভাঙ্গা কাঠের বিভিন্ন অংশ, আবার কোথাও কাঠের বিভিন্ন ধরনের ফার্নিচার। এ যেন সড়ক দিয়ে চলাচল করা লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণের নানা চেষ্টা। কিন্তু স’মিল মালিক ও ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের এসব ব্যবসায়িক ফাঁদের বিপরীতে সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী লোকজনের কাছে এটা মরণ ফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত। এসব গাছের গুঁড়ির কারণে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। আবার রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতকারীদের রাস্তা অবরোধ করে ছিনতাইয়ের মোক্ষম অস্ত্র। এমনটাই মনে করেন সাধারণ লোকজন। চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ফরিদগঞ্জ অংশসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি সড়কের চিত্র এটি। সমস্যাটি এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষের চোখে পড়লেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাড়সড়কের ফরিদগঞ্জ উপজেলার অংশে প্রায় ১০/১৫টি স্থানে স’ মিল ও কাঠ ব্যবসায়ীরা সড়কের দুই পাশের মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বিশাল বিশাল গাছের গুঁড়ি সারিবদ্ধভাবে ফেলে রেখেছে। আবার অনেক সময় দেখা যায় এইসব গাছের গুঁড়ি ব্যবসায়ীদের ইচ্ছেমতো সড়ক বন্ধ করে হ্যান্ড ট্রলি ও ট্রাকে লোড-আনলোড করছে। এতে করে সড়কে মানুষের চলাচলের সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার টিএন্ডটি মোড়, কামিন ডাক্তার ব্রীজ, গৃদকালিন্দিয়া বাজার এলাকা, ধানুয়া বাজারের পশ্চিম পাশ ও উপজেলা সদর হতে খাজুরিয়া বাজারের অভিমুখে দেখা মিলে স’ মিল মালিক ও কাঠ ব্যবসায়ীদের এমন জোরপূর্বক অব্যবস্থাপনার চিত্র। ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন যানবাহন ও পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে থাকে।
এ সড়কে চলাচলকারী গৃদকালিন্দা এলাকার মফিজুদ্দিন (৪০), খাজুরিয়া এলাকার আবুবকর (৫৫), পৌর এলাকার টিএন্ডটি মোড়ের পথচারী আমির হোসেন (৬০)সহ একাধিক মানুষের সাথে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রত্যেকেই অভিযোগ করে বলেন, সড়কের পাশে মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করে স’ মিলের গাছের গুঁড়ি রেখে মরণ ফাঁদে পরিণত করেছে গাছ ও কাঠ ব্যবসায়ীরা। কয়েক বছর পূর্বে টিএন্ডটি এলাকায় একটি অটোরিকশা ও রাস্তার পাশে পড়ে থাকা গাছের গুঁড়ির চাপায় পল্লীবিদ্যুতের এক কর্মকর্তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ রকম আরো ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এছাড়া রাতে দুর্বৃত্তরা এর সুযোগ নিয়ে সড়কে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে।
মিতু আক্তার (১৭) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সড়কের পাশ দিয়ে হাঁটার স্থানে গাছের গুঁড়ি রাখা হয়। আমাদের বাধ্য হয়ে সড়কের মাঝ বরাবর হাঁটতে হয়। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স’ মিলের দু’জন ব্যবসায়ী বলেছেন, বন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই রাস্তার পাশে গাছের গুঁড়ি রেখেছি, তাই আমাদের সমস্যা হয় না।
সড়কের উপর গাছ ট্রাকে তোলার ফলে মানুষ ও যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তসলিম আহমেদ। তিনি বলেন, এটি বন্ধের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। 
ফরিদগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা কাউসার মিয়া বলেন, বন বিভাগ কোনো কাঠবোঝাই ট্রাক বা স’ মিল থেকে চাঁদা নিচ্ছে না। অভিযোগটি সঠিক নয়। তবে অবৈধ প্রক্রিয়ায় গাছ আহরণ, সড়কের উপর গাছের গুঁড়ি সংরক্ষণ ও সড়কের উপর ট্রাকে মালামাল লোড-আনলোড বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সর্বাধিক পঠিত