ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-তা-ব শাহরাস্তিতে
ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় ॥ সঞ্চালন লাইন ল-ভ-
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তা-বে ল-ভ- শাহরাস্তি উপজেলার পল্লীবিদ্যুৎ। গত সোমবার সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের আলো নিভে যায়। বিকেলে পুরো উপজেলা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে।
সোমবার সারাদিন বৃষ্টি শেষে সন্ধ্যায় শুরু হয় দমকা ঝড়ো হাওয়া। চলে একটানা মধ্যরাত পর্যন্ত। এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে উপড়ে পড়ে গাছপালা। তছনছ হয়ে যায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন। মঙ্গলবার সারাদিন বিদ্যুতের আলো চোখে পড়েনি শাহরাস্তিবাসীর। সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হলেও সেটি বেশিক্ষণ টিকেনি। মঙ্গলবার উপজেলার অফিসপাড়াগুলো ছিলো বিদ্যুৎবিহীন। বিদ্যুতের অভাবে কাজকর্ম চালিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হয়েছে। দুপুরে শাহরাস্তি পৌরসভা ভবনে মোমবাতি জ্বালিয়ে কাজ করতে দেখা যায়।
পৌর মেয়র হাজী আঃ লতিফ জানান, বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে গত ৪ দিন কোনো কাজ করা সম্ভব হয়নি।
পল্লীবিদ্যুৎ শাহরাস্তি জোনাল অফিসের ডিজিএম মোবারক হোসেন জানান, বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে গত তিন দিন বাসায় যাননি তিনি। লাইনম্যানদের সাথে থেকে তিনি নিজেও কাজ করছেন। অতিরিক্ত লাইনম্যান এনে কাজ করে যাচ্ছেন। তারপরও আশার আলো দেখাতে পারছেন না।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খবর নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুতের লাইন ছিড়ে পড়ে আছে এমন বহু জায়গা রয়েছে, যেখানে পল্লীবিদ্যুতের লোক এখনো যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় লাইনম্যানদের সংখ্যা কম হওয়ায় লাইন সঞ্চালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। উপজেলার চারদিকে শুধু বিদ্যুতের জন্যে হাহাকার শোনা যাচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে মানুষ বিদ্যুতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় হঠাৎ বিদ্যুতের এমন বিপর্যয়ে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনেকেই জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়াও ফ্রিজে রাখা মাছ মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি বাজারগুলোতে মোমবাতির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এদিকে সিত্রাং আঘাত হানার রাত ছিলো দিপাবলী কালীপূজা। প্রতি বছরের মতো এবারও লক্ষাধিক দর্শণার্থীর আগমন হওয়ার লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। গত দুবছর করোনার ফলে মাসব্যাপী মেলা না হলেও এবার পূজা উপলক্ষে পৌর কর্তৃপক্ষ মেলার জন্যে মাঠ ইজারা দেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান হতে ব্যবসায়ীগণ সেই মাঠে দোকান সাজিয়ে তোলে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তা-বে সব কিছু তছনছ হয়ে যায়। গাছতলায় ভক্তদের উপস্থিতি ছিলো না বললেই চলে। দোকানদার ও পূজায় আগত দর্শণার্থীদের সন্ধ্যার সাথে সাথে নিরাপদে ছুটে যেতে দেখা যায়। এতে করে লাখ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে বলে সাধারণ ব্যবসায়ীগণ জানান।