২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত
আতিকের সন্তানরা বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলে
বাবাকে হারিয়ে আজ আমার সন্তানরা এতিম। প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় তিন ছেলে ও এক মেয়ের মুখে দুই বেলা ভাত তুলে দিতে পারলেও বাবার অভাব পূরণ করতে পারিনি। আজও তারা বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলে। এভাবেই বলছিলেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচআনী গ্রামের আতিক উল্লাহর স্ত্রী লাইলী বেগম।
তিনি বলেন, ৫ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী আমার দুই সন্তানকে যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ৫ বছর পার হলেও এখনো মিলেনি চাকরি। তাই এতিম সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শঙ্কিত। নিহত আতিক উল্লাহর বড় ছেলে মোঃ মিথুন সরকার জানায়, এখনো খুঁজি আমরা বাবাকে। রাতের আঁধারে মায়ের কান্না আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় বাবার সব স্মৃতি। তখন মনের অজান্তেই হারিয়ে যাই বাবার সান্নিধ্যের অপার আনন্দের দিনগুলোতে। আর তখনই দুচোখ বেয়ে বেরিয়ে পড়ে অশ্রু। তিনি বলেন, বাবার অভাব আমরা প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করি।
নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ১৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো মতলব উত্তরের আতিকের শোকে কাতর স্বজনরা। প্রিয়জনদের হারানোর বেদনা এখনো তাদের কাঁদায়। তবে সরকারিভাবে তাদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
এদিকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘটে যাওয়া গ্রেনেড হামলার রায় হলেও পুনরায় আপিল করায় এখন হাইকোর্টে তা বিচারাধীন। এমতাবস্থায় বিচারের রায় দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন পাঁচআনী গ্রামের আতিক উল্ল্যাহর স্বজনরা। দীর্ঘ ১৭ বছরেও এ হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য শেষ না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দুই পরিবারেকে ১১ লাখ টাকা করে অনুদান দেন। এরপর পুনরায় গত ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল আতিক উল্লাহর ৪ সন্তান ও স্ত্রীকে ২৫ লাখ টাকা দেন। যা দিয়ে তাদের পরিবারে কিছুটা সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুছ জানান, শুধু কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়েই ওইসব পরিবারের শোক মুছে ফেলা যাবে না। অপরাধীরা শাস্তি পেলে কিছুটা হলেও তারা শান্তি পাবে। তাই দ্রুত বিচারের রায় কার্যকরের দাবি জানান তিনি।