হাজীগঞ্জে দুই সন্তান বিক্রি করলেন বাবা
হাজীগঞ্জে দেড় বছরের ছোট সন্তান রিয়াকে বিক্রির অর্থ দিয়ে বিদ্যুৎ বিল এবং তিন বছরের ইভাকে বিক্রির অর্থ দিয়ে ঋণ পরিশোধ করলেন বাবা। চার/পাঁচ মাস আগে-পরে দুই কন্যাকে ৪০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। ওইসময় চট্টগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকুরিতে ছিলেন দুই কন্যার মা জান্নাত বেগম। দুই সন্তানের কোনো ছবি বা কাগজপত্রের চিহ্ন পর্যন্ত রাখেনি বাবা এমরান হোসেন।
ঘটনাটি হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামে। ওই গ্রামের মিজি বাড়ির বিস্কুট বেকারী ব্যবসায়ী এমরান হোসেন দুই বিয়ে করেন। সে দ্বিতীয় স্ত্রীকে চট্টগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকরির জন্য পাঠিয়ে কৌশলে সন্তানদের বিক্রি করে দেন।
দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, স্বামী এমরান হোসেন তার প্রথম স্ত্রী ইয়াছমিনের কাছে দুই মেয়েকে নিয়ে রাখে। সেখান থেকে কৌশলে মেয়েদেরকে নিয়ে বিক্রি করে দেয়। গত দেড় বছর ধরে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সন্তানদের ফিরে আনবে বলে সময় পার করে আসছে আমার স্বামী। তার সন্তানদের ফেরত চান জান্নাত বেগম।
অভিযুক্ত এমরান হোসেন জানান, ছোট মেয়ে রিয়াকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার কলাবাগানে বিক্রি করেন তিনি। এই বিক্রিতে সহযোগিতা করেন প্রতাপপুরের পল্লী চিকিৎসক আমেনা বেগম। আর ইভাকে বিক্রি করা হয় চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া পাকিস্তান বাজার এলাকায়। তাকে বিক্রিতে সহযোগিতা করেন নাটেহরা গ্রামের কামরুল ইসলাম। তার বোনের আত্মীয়রা ওই সন্তানকে নিয়েছে।
প্রথম স্ত্রী ইয়াছমিন বলেন, দুই কন্যাকে বিক্রি করার কথা তিনি জেনেছেন। কিন্তু কোথায় বিক্রি করা হয়েছে তা জানেন না।
রিয়া ও ইভা দুই বোন। তাদের মা জানে না তারা এখন কোথায়। সন্তান জন্ম দেয়ার পর কিছুদিন লালন-পালন করলেও তাদের একটি ছবি বা কোন স্মৃতিও নেই। হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দ জানান, আমাদের কাছে এ অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমাদের জানা ছিলো না। তারপরও আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।