• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দেবোত্তর সম্পত্তি আইনের খসড়া নিয়ে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

প্রকাশ:  ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১০:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবোত্তর সম্পত্তি আইন ২০২২-এর খসড়ার উপর মতবিনিময় সভা করেছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
গতকাল ১৮ এপ্রিল সোমবার দুপুর ২টায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় দেবোত্তর সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মতামত ব্যক্ত করেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনয় ভূষণ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী পিপি, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নরেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী, চাঁদপুর হরিবোলা সমিতির সভাপতি অজয় কুমার ভৌমিক, সদর উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, চাঁদপুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্থিরাত্মানন্দজী মহারাজ, মতলব উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি গণেশ চন্দ্র ভৌমিক, সাচার জগন্নাথ মন্দিরের সভাপতি বটু কৃষ্ণ বসু বিএসসি, হাইমচর উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বিবেক লাল মজুমদার, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস, কচুয়া উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ডাঃ ফণী ভূষণ মজুমদার তাফু প্রমুখ।
বক্তারা দেবোত্তর সম্পত্তি আইনে দেবোত্তর সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রয়, দান, বন্ধক, ইজারা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করা যাবে না সহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, দেবোত্তর সম্পত্তি আইনে অনেক বিধিনিষেধ থাকার পরও আমাদের দেবোত্তর সম্পত্তি বিভিন্নভাবে বেহাত হয়ে যাচ্ছে এবং অধিগ্রহণ হচ্ছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাচার জগন্নাথ মন্দির উপমহাদেশের মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যা সকলেরই কম-বেশি জানা আছে। এই জগন্নাথ মন্দিরের ২২ একর দেবোত্তর সম্পত্তি থাকার পরও তা বিভিন্নভাবে বেদখল হয়ে বর্তমানে তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ একরে। এ ৪ একর সম্পত্তির কিছু অংশ আবার রাতের আঁধারে দখল করার পাঁয়তারা চলছে। চাঁদপুর মহাশ্মশানের ৪ একর দেবোত্তর সম্পত্তি ছিল, যা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন চাঁদপুর পৌরসভা। বর্তমানে চাঁদপুর মহাশ্মশানের স্থান বিভিন্নভাবে হস্তান্তর বা দখল হয়ে দাড়িয়েছে প্রায় ১ একর সম্পত্তিতে। কিন্তু আইনে রয়েছে জনস্বার্থ ব্যতীত দেবোত্তর সম্পত্তি, শ্মশান, রাস্তা, মন্দির একোয়ার বা হস্তান্তর করা যায় না। নেতৃবৃন্দ দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষাসহ তা যেন কোনোভাবেই হস্তান্তর বা বেদখল না হয়, সে ব্যাপারে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় আইন প্রণয়নের জন্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
জেলা প্রশাসক অজ্ঞনা খান মজলিশ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যার যার সম্পত্তি সে ভোগ দখল করবে এটাই বাস্তবতা, কারো সম্পত্তি অন্যায়ভাবে বেদখল হোক তা সরকারের কাম্য নয়। সরকার দেবোত্তর সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধানে আইনের খসড়া প্রণয়ন করেছেন। এ ব্যাপারে আপনাদের মতামতকে প্রাধান্য দিতেই আজকের এ মতবিনিময় সভা। আপনাদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়েই আইন প্রণয়ন হবে বলে আমার বিশ^াস। প্রণয়নকৃত খসড়া আইনের কপি আপনাদেরকে দেয়া হবে, তা আপনারা দেখবেন এবং প্রণয়নকৃত খসড়ায় যেখানে অসঙ্গতি মনে হবে তা সংশোধন আকারে জেলা পিপি রনজিত রায় চৌধুরী বা আমার দপ্তরে জমা দিবেন, আমি সেই মতামতের আলোক তা প্রেরণ করবো। জেলা প্রশাসকের আন্তরিকতাপূর্ণ আলোচনায় সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করেন।
মতবিনিময় সভায় চাঁদপুর সদরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ের পূজা পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বাধিক পঠিত