ফরিদগঞ্জের ফরিদ খুন হলো তার বন্ধুর হাতে
নতুন টাকার লোভ ও পরকীয়া সন্দেহের জেরে এই হত্যাকা- : দু আসামীর স্বীকারোক্তি
ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া (২৫)-এর মানিব্যাগে এক হাজার টাকার ১০টি চকচকে নতুন নোট দেখে হঠাৎ লোভে পড়ে যায় বন্ধু সালাউদ্দিন ভূঁইয়া (৩৯)। সেই লোভ এবং স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সন্দেহের পূর্ব শত্রুতার জেরে পাশর্^বর্তী যুবক আব্দুর রহমান (২২)কে সাথে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় ফরিদ উদ্দিনকে। এমনই স্বীকরোক্তি দিয়েছেন পুলিশের হাতে আটক দুই আসামী। গতকাল ১৮ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার)।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল রাতে উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাড়িতে নিজ বসত ঘর থেকে ফরিদ উদ্দিনের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া হত্যার ঘটনায় তার বোন জামাই দুলাল চৌধুরী অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং ২৩, তারিখ ১৬/০৪/২০২২। ধারা ৩০২/২০১/৩৪।
মামলা দায়ের হওয়ার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ রুবেল ফরাজী ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন এবং আসামীদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা চালান। এরপর প্রথমে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী আব্দুর রহমানকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রহমান ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং মূল আসামী সালাউদ্দিনের নাম-ঠিকানা বলে দেয়।
তার দেয়া সাক্ষ্য অনুযায়ী মূল আসামী মোঃ সালাউদ্দিনকে ফরিদগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। আটক আসামীরা ঘটনা স্বীকার করে জানান, মৃত ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আসামী সালাউদ্দিন ভূঁইয়া একই সাথে চলাফেরা করত। সালাউদ্দিন ভূঁইয়া পেশায় একজন ড্রাইভার। তার দুই স্ত্রীর মধ্যে একজন চট্টগ্রাম এবং অপরজন ফরিদগঞ্জে থাকেন। সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে মৃত ফরিদ উদ্দিনের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতো।
ঘটনার আগের রাতে ফরিদ উদ্দিন ও সালাউদ্দিন বাড়ির পাশের দোকানে আইপিএল খেলা দেখছিল। এ সময় সালাউদ্দিন ফরিদ উদ্দিনের মানিব্যাগে ১হাজার টাকার ১০টি নতুন নোট দেখতে পায়। এই নতুন টাকা এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে পাশর্^বর্তী আব্দুর রহমানকে নিয়ে ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে সালাউদ্দিন।
ঘটনার রাতে তারা ফরিদের দরজায় নক করে ধারালো দা নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে। ফরিদ উদ্দিন দরজা খুলতেই তারা ফরিদের ঘাড়ে ধারালো দা দিয়ে কোপ দেয়। ফরিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা মৃতদেহ গুম করার জন্য তার শয়ন কক্ষে তোষকের ভেতরে পেঁচিয়ে রাখে। এরপর আসামীরা ফরিদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং ১০ হাজার টাকার নতুন নোট নিয়ে চলে যায়। বাইরে এসে সালাউদ্দিন তার সহযোগী আব্দুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকায় চলে যেতে বলে।