কচুয়ায় বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা
কচুয়ায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। গত ১৬ মাসে প্রায় ৩০ জনের আত্মহত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নাগরিক সমাজ। আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর। তন্মধ্যে বিষপানে ১৫জন ও ফাঁস দিয়ে ১৫জন আত্মহত্যা করেছে। সামাজিক বৈষম্য, পারিবারিক অস্থিতিশীলতার জন্যে বাড়ছে এ প্রবণতা-এমনটা দাবি বিশিষ্টজনদের। তবে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বাড়ালে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব।
হাসপাতাল ও থানা সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক বিরোধ, সামাজিক অবক্ষয় ও বৈবাহিক সম্পর্কের জটিলতাসহ নানা কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে মাদকের আগ্রাসনে আসক্ত হচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। ফলে মানসিক বিকারগ্রস্ত ও চিন্তিত হয়ে যে কোনো পথ অবলম্বন করে তারা। মানসিক চিন্তা থেকে আত্মহত্যায় আসক্ত হয় অনেকে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, সমাজে নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি কিশোর-কিশোরীদের মাদকের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে হবে। এজন্যে তাদের অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পালাখাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহীদ উল্যাহ পাটওয়ারী বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মোবাইলে আসক্ত। ইন্টারনেট ব্যবহারের কুফলের দিক থেকে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের আরো যতœ নিতে হবে। তাহলে আত্মহত্যার প্রবণতা কিছুটা রোধ করা সম্ভব। তিনি আত্মহত্যার জন্যে সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্কের অবনতিকে দায়ী করেছেন। আর এই প্রবণতা দূর করতে নৈতিক শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি ধর্মীয় মূল্যবোধ বাড়ানোর পরামর্শ তাদের।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান শিশির বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে বিভিন্নভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়। আত্মহত্যা প্রবণতা রোধ করতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাউন্সেলিং করা উচিত। পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি কাউন্সেলিং করে আত্মহত্যা প্রবণতা রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
কচুয়া থানার ওসি মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, মানসিক চিন্তা, পারিবারিক ও সামাজিক কলহে অনেকে এমন পথই বেছে নেন, যা কাম্য নয়। আত্মহত্যা প্রবণতা রোধে অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দকে আরো সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি কাউন্সেলিং করে তাদের মাঝে আত্মহত্যার কুফল সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করতে পারলে তা রোধ করা সম্ভব।