ফরিদগঞ্জের বাগপুরে এক মহিলার ‘মিথ্যা’ মামলায় মসজিদের কাজ বন্ধের অভিযোগ
ফরিদগঞ্জে এক মহিলার মামলার কারণে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ ও এলাকার সুশীল সমাজের কয়েকজনকে ওই মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩নং সুবিদপুর ইউনিয়নের বাগপুর গ্রামে। অভিযোগের আলোকে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ওই মসজিদে গেলে বাগপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুসুল্লিরা ওই মামলার বাদী মোবাশে^রা বেগম (স্বামী মৃত রুস্তম আলী পাটোয়ারী)-এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম বিষোদগার করতে দেখা গেছে। মোবাশে^রা বেগমের বিষয়ে বলতে গিয়ে বাগপুর কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব (যিনি গত ৩৮ বছর ওই মসজিদে কর্মরত) মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, মোবাশে^রা মসজিদের বিরুদ্ধে এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন তা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা। মসজিদের এ সম্পত্তি মসজিদের ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তি। গত ৩৮ বছর এই সম্পত্তি মসজিদের দখলে। কিন্তু মোবাশে^রা বেগম কোন্ সূত্রে দাবি করছেন তা আমার বোধগম্য নয়। অন্যদিকে এলাকার জামাল বেপারী জানান, এই মহিলা এলাকার একটা মামলাবাজ। তিনি ঢাকায় থাকেন, সেখান থেকে তিনি বিভিন্নজনের নামে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে এলাকার শান্তি নষ্ট করছেন। মসজিদ আল্লাহর ঘর, সেই মসজিদের ওয়াক্ফ সম্পত্তির উপর মিথ্যা মামলা করে কাজ বন্ধ করে রেখেছেন। আমরা ওই মামলাবাজ মহিলার বিচার চাই।
মসজিদের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক হারুন পাটোয়ারী ও মসজিদের দীর্ঘদিনের সহকারী ক্যাশিয়ার আব্দুল আজিজ বলেন, মামলাবাজ মোবাশে^রা বেগম মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজের সম্পত্তিতে মামলা করে যে বাধা প্রদান করেছেন তা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা। আমাদের এই মসজিদের বয়স প্রায় চল্লিশ বছর এবং এই সম্পত্তিগুলো মসজিদের ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তি। অন্যদিকে মসজিদের মুসল্লি ও এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ নুরুল হুদা বেপারী, মোঃ নূরুল ইসলাম বেপারী, আবুল ফজল পাটোয়ারী, নুরুল ইসলাম, ইসমাইলসহ আরো অনেক মুসল্লি বলেন, এ মহিলা একজন মামলাবাজ, তিনি ভালো মানুষ নন। যদি ভালো হতেন তাহলে মসজিদের ওয়াক্ফ সম্পত্তির উপর মিথ্যা মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতেন না। এছাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কাওছার হোসেন ও অত্র ওয়ার্ডের মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, ওই মহিলা ইতিপূর্বে কোর্টে ও থানায় বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন এবং সে মামলাগুলোর বিষয়ে থানায় ও কোর্টে একাধিকবার তারিখ পড়লেও তিনি মামলার বাদী হয়ে নিজেই উপস্থিত হতেন না। এতে করে থানার ওসি ও এসআই বিব্রত বোধ করেছেন। তিনি একজন মামলাবাজ, আমরা তার হয়রানি থেকে রেহাই পেতে চাই।
মসজিদের দাতা হাসান পাটোয়ারী বলেন, মসজিদের সাব কবালা মূলে মোট ৯শতক সম্পত্তি। আব্দুল মতিন সাবকবালা দলিল মূলে (যার দলিল নং ৮৩৬৮/২৩-১০-৮৪) দান করেন ৭ শতক। হাসান পাটোয়ারী সাব কবালা দলিল মূলে দেন ২ শতক, দলিল নং ২৯৫৭/০৪-০৪-২০২১। হাসান পাটোয়ারী আরো বলেন, মোবাশে^রা বেগম বাড়িতে সব মিলিয়ে হয়তো ২ শতক সম্পত্তি পাবেন। কিন্তু তিনি আমাদের ১০ থেকে ১২ শতক সম্পত্তি ভোগ দখল করে আছেন। তিনি ইতিপূর্বে এলাকার অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেছেন। তার অসংখ্য মিথ্যা মামলায় অনেককে থানায় এবং কোর্টে হাজির করে হয়রানি করেছেন। কিন্তু তিনি বাদী হয়েও কখনো থানায় এবং কোর্টে হাজির হননি। তিনি মামলার বাদী হয়ে উপস্থিত হন না, এসব নিয়ে থানার ওসি ও এসআই একাধিকবার বিব্রত বোধ করেছেন বলে হাসান পাটোয়ারী বলেন। মোবাশে^রা বেগম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কেনো এত ছিনিমিনি খেলছেন-আমরা এর সঠিক সমাধান চাই।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিকবার মোবাশে^রা বেগমের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি।