‘অঙ্গীকারে’র শৈল্পিকতা নষ্টের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি
সংস্কারের নামে অঙ্গীকারের শৈল্পিকতা নষ্ট করা, বধ্যভূমিকে বিনোদন পার্ক করা এবং জাতীয় পতাকা বিকৃতির প্রতিবাদে চাঁদপুর শহরে মানববন্ধন হয়েছে। বাংলাদেশের শিল্পী সমাজের ব্যানারে গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ঢাকা এবং চাঁদপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের শিল্পীরা অংশ নেন। এই মানববন্ধনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা নাট্য ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু। তিনি তাঁর বক্তব্যে চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য অঙ্গীকারকে সংস্কারের নামে তার শৈল্পিকতা নষ্ট করে দেয়া এবং চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বদ্ধভূমি বড় স্টেশন মোলহেডকে বিনোদন পার্কে পরিণত করার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, বধ্যভূমি হচ্ছে বাঙালির শোকের এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের করুণ একটা ইতিহাসের জায়গা। এখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক বাঙালি মা-বোনকে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ মেঘনায় ভাসিয়ে দিয়েছে হায়েনারা। তাঁদের সেই আত্মত্যাগের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্যে এখানে ‘রক্তধারা’ করা হয়েছে। সে ‘রক্তধারা’ স্মৃতিস্তম্ভের জায়গায় কোনোদিনও বিনোদন পার্ক হতে পারে না। তাও আবার সেটা বঙ্গবন্ধুর নামে করা হলো। বঙ্গবন্ধুর নামে পার্ক করা হলে অন্য যে কোনো জায়গায় করা যেতে পারতো। কিন্তু বধ্যভূমির জায়গায় করে বঙ্গবন্ধুর নামকে বিতর্কিত করা হলো। এই ন্যাক্কারজনক কাজের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি চাঁদপুরের প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাবো, অঙ্গীকারকে তার নিজস্ব অবয়বে ফিরিয়ে আনা হোক। আর বড় স্টেশন বধ্যভূমি থেকে পার্ক নাম অপসারণ করা হোক। অন্যান্য বক্তাও একই বক্তব্য রাখেন এবং একই দাবি জানান। এছাড়া তারা গত ২৬ মার্চ চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক কর্তৃক উত্তোলিত জাতীয় পতাকাকে যে বিকৃত করা হয়েছে তারও নিন্দা জানান এবং এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্যের দাবি জানান।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন চারুশিল্পী মঈনুদ্দিন লিটন ভূঁইয়া, মিজানুর রহমান সরকার, নাট্য ব্যক্তিত্ব জিয়াউল আহসান টিটু, আনন্দধ্বনি সংগীত শিক্ষায়তনের অধ্যক্ষ রফিক আহমেদ মিন্টু ও অঙ্গীকারের নির্মাতা, বিখ্যাত ভাস্কর মরহুম সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের কনিষ্ঠ পুত্র আবদুল্লাহ জহী। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয়া হয়।