মেয়রের নির্দেশ অমান্য করে বহাল তবিয়তেই রয়েছে সেই অটোস্ট্যান্ড
চাঁদপুর সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনের অটোস্ট্যান্ড এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। চাঁদপুর পৌরসভা থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে মাইকিং করা হলেও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে বাবুরহাট স্কুলের সামনের অটোস্ট্যান্ড। পৌর কর্তৃপক্ষের মাইকিংয়ে জানানো হয় মার্চের ১ তারিখের পূর্বে স্কুলের সামনে থেকে অটোস্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়ার জন্য। পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে অদৃশ্য খুঁটির জোরে এখনো স্কুলের সামনে অটোস্ট্যান্ড বসিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। করোনাকালীন সময় ১৬ মার্চ থেকে পুরোদমে স্কুল চালু হওয়ার পর আবারো স্কুলের সামনে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের। এ সময় অনেক ছাত্রীকে ইভটিজিংয়েরও শিকার হতে হচ্ছে।
কয়েক মাস পূর্বে বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে বাবুরহাট প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বাবুরহাট স্কুলের সামনে থেকে অটোস্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন এবং এই আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেন। তিনি তখন তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, বিদ্যালয়ের সামনে একটি অটোস্ট্যান্ড বসানো যৌক্তিক নয়। এখান থেকে ছাত্রীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন বলে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। তাই এই অটোস্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি আরো বলেন, এই অটোস্ট্যান্ডের সাথে যে বা যারা জড়িত থাকুক, তারা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কেউ যদি এই অটোস্ট্যান্ড সরাতে বাধা প্রদান করে, তাহলে পৌর কর্তৃপক্ষ আইনী পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।
গত ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বাবুরহাট স্কুলের সামনে অটোস্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়র বরাবর অভিযোগ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। উক্ত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের সামনে অটোস্ট্যান্ড বসিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। অটোস্ট্যান্ডকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত সেখানে মাদকসেবী ও বখাটেদের আড্ডা জমে এবং এ আড্ডা থেকে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ইভটিজিং ও অপহরণের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিনই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছে বলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়।
এর আগে করোনাকালীন সময়ের পূর্বে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোগ নিলেও সরাতে পারেনি এই অটোস্ট্যান্ডটি। জানা যায় এই অটোস্ট্যান্ডটি ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় পরিচালিত হয়। ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা প্রতি অটো থেকে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দিনপ্রতি আদায় করে বলে জানা যায়।
এ বিষয়টি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ‘বাবুরহাট স্কুলের সামনে অটোস্ট্যান্ড বসিয়ে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি ॥ ইভটিজিংয়ের শিকার ছাত্রীরা’ এই শিরোনামে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ওই সংবাদেও এই অটোস্ট্যান্ডকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- করছে বলে উল্লেখ করা হয়। এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় নানা রকম বিশৃঙ্খল কাজে জড়িয়ে পড়ছে ও বিদ্যালয়ে আগত ছাত্রীদের এবং এই সড়কে চলাচলকারী কিশোরীদের উত্ত্যক্ত করছে বলে জানা যায়।