চান্দ্রা দরবার শরীফে আঞ্জুমানে এশায়াতে সাইফীয়া মুজাদ্দেদীয়া কমিটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্পন্ন
ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন খানকায়ে এনায়েতীয়া সাইফিয়া নক্শবন্দীয়া মুজাদ্দেদীয়া চান্দ্রা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা শাহ মাওঃ সাইয়্যেদ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ নক্সবন্দী মুজাদ্দেদী (রঃ) তাসাউফ ভিত্তিক সংগঠন ‘আঞ্জুমানে এশায়াতে ছাইফীয়া মুজাদ্দেদীয়া বাংলাদেশ’-এর মাধ্যমে সারাবিশে^ ত্বরিকত জগতের প্রসিদ্ধ ত্বরিকা, ত্বরিকায়ে আলীয়া নক্শবন্দীয়া মুজাদ্দেদীয়ার খেদমত আঞ্জাম দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আমীরে আলা পীরে তরীক্বত, চান্দ্রা দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা ড. এসএম হুজ্জাতুল্লাহ নক্শবন্দী মুজাদ্দেদী।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানুষের হেদায়েতের জন্যে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যুগে যুগে নবী-রাসূলদের পাঠিয়েছেন। আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ)-এর জাহেরী জিন্দেগী থেকে পর্দা করার পর তাঁর নির্বাচিত উম্মতদের মধ্য হতে যুগে যুগে তাঁর ওয়ারিশ হক্কানী-রব্বানী আউলিয়া কেরামদেরকে পাঠিয়ে মানুষদেরকে আল্লাহ এবং তার রাসুল (দঃ)-এর অনুসরণ-অনুকরণের জন্য হেদায়েতের পথ দেখিয়েছেন। মহান আউলিয়া কেরামগণের থেকে সাধারণ মানুষ কামেলে ইনসানে পরিণত হয়েছে এবং নিজ সমাজ-রাষ্ট্র ইসলামী আলোয় আলোকিত করেছে। সেই সিলসিলাহ যুগ যুগ ধরে বহমান নদীর মতো প্রবাহিত হয়েছে। নদী যেমন দু’কূলের মানুষজন, গাছপালা, তরুলতা, জীবজন্তু, পশু-পাখি এক কথায় সকলের জন্য উপকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, ঠিক তেমনি আল্লাহর অলীগণও যে এলাকায় প্রকাশ হয়েছে, শুধু সে এলাকা নয় আউলিয়াগণের স্তর অনুসারে তাদের দ্বারা কখনও পুরো জগৎ উপকৃত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একজন মহান অলী আমাদের মাঝে আল্লাহ-রাব্বুল আলামীন মেহেরবাণি করে পাঠিয়েছেন। যিনি আমাদের মহান মোর্শেদ চান্দ্রার হুজুর কেবলা সৈয়দ মোঃ ছাইফুল্লাহ নকশবন্দী রহঃ। যাঁর সোহবতে লক্ষ লক্ষ পথহারা আল্লাহর বান্দা রাসূলের (দঃ) মহব্বতের উম্মত সঠিকভাবে ঈমান-ইসলাম বুঝে সঠিক পথ পেয়ে কামেলে ইনসান হওয়ার সৌভাগ্য লাভে ধন্য হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখের এবং বেদনার ব্যাপার, গত ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট তিনি আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন। তিনি জীবিত থাকাবস্থায় সকল মুরীদকে সংগঠিত দেখতে চেয়েছিলেন। যাতে করে পীর ভাইরা একে অপরের সুখে-দুঃখে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করতে পারেন। সমাজ এবং দেশের যেকোনো হক্ব প্রয়োজনে একত্রিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন।
অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে আগত সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দ ঈমান-আক্বিদা, শরিয়ত-ত্বরিকত এবং সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। আত্মার পরিশুদ্ধতা, ঈমানের পরিপূর্ণতা সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেন তিনি।
মাওঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন ও লায়ন মোঃ গোলাম হোসেন টিটোর যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিঃ মোঃ শাকিলুর রহমান, মোঃ আব্দুর রহমান প্রধান, মাওঃ মোঃ ওয়ালী উল্যাহ, আলহাজ জয়নাল আবেদীন বেপারী, আলহাজ মেজবা মাল, ডাঃ ইসমাইল হোসেন শিরাজী, আলহাজ সিরাজ চোকদার, আলহাজ মোঃ হোসেন, রাজরাজেশ^র ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মোঃ হযরত আলী বেপারী, ফরিদগঞ্জের গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ শাহ আলম শেখ, দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মোল্লা, চরসেনসাস ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বালা, উত্তর তারাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ ইউনুছ আলী মোল্লা, মাওঃ কবির আহম্মদ ওসমানী, আলহাজ লায়ন আব্দুর লতিফ তফাদারসহ আরো অনেকে।
আলোচনা সভা শেষে সকল নেতার সম্মতিক্রমে পীরে তরীকৃত হযরতুল আল্লামা ড. এসএম হুজ্জাতুল্লাহ নক্শবন্দী মুজাদ্দেদীকে উক্ত সংগঠনের ২০২২-২০২৫ সেশনের আমীরে আলা, আলহাজ এমএ বারী খান ও আলহাজ ইঞ্জিঃ মোঃ মাহফুজুর রহমানকে সিনিয়র নায়েবে আমীর, অ্যাডঃ ড. মোঃ কামরুল হাসান সাইফীকে মহাসচিব এবং মোঃ মোসলেহ উদ্দিন মানিককে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, হামদ ও নাতে রাসূল (দঃ)-এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সর্বশেষে সারাবিশ্বের মুসলমানদের দুঃখ দুর্দশা থেকে মুক্তি, কল্যাণ কামনা এবং সকল কবরবাসীর জন্য দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সমাপ্ত হয়।