চাঁদপুর চেম্বার নেতৃবৃন্দের সাথে অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের মতবিনিময়কালে আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম
চাঁদপুরে যদি ইকোনমিক জোন হয়, তাহলে শিল্পোদ্যোক্তাগণ লাভবানই হবেন
নদীভাঙ্গন প্রবণ এলাকা হওয়ায় চাঁদপুরে আশানুরূপভাবে গড়ে উঠেনি শিল্প, কল-কারখানা। মালামাল আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বেকারত্ব দূরীকরণে চাঁদপুরে শিল্প কারখানা গড়ে না ওঠায় অনেকটাই হতাশা ব্যক্ত করেন চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম।
গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যালয়ে চেম্বার নেতৃবৃন্দের সাথে অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চাঁদপুরের হাইমচরে ইকোনমিক জোন গড়ে ওঠার ওপর গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, পণ্য পরিবহনে অন্যতম মাধ্যম হলো চাঁদপুর। এ চাঁদপুরকে বলা হতো গেটওয়ে। এ স্থান দিয়েই ব্রিটিশ আমলে ভারতসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পণ্য পরিবহন হতো। কিন্তু এখন আর সে ব্যবস্থা নেই। নদী ভাঙ্গনপ্রবণ শহর হওয়ায় ব্যবসায়ীগণ শিল্প স্থাপনে অনাগ্রহী হয়ে পড়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে গুটিয়ে ফেলেছেন ব্যবসার পরিধি। ফলে ঐতিহাসিক ব্যবসায়ী বন্দর হিসেবে খ্যাত চাঁদপুরের সুনাম অনেকটাই ম্লান হয়ে পড়েছে। চাঁদপুর থেকে সকল পণ্য অতি সহজেই দেশের বিভিন্নস্থানে আমদানি রপ্তানি করা সহজ। এখানে রয়েছে নৌপথ, রেলপথ, সড়ক পথ। পণ্য আনা-নেওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো নৌপথ। এ পথে অত্যন্ত কম খরচে মালামাল পরিবহন করা যায়। চাঁদপুরে যদি ইকোনমিক জোন হয়, তাহলে শিল্পোদ্যোক্তাগণ লাভবানই হবেন। তিনি এ ব্যাপারে অতি দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণে এবং তা বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও চাঁদপুরের সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সুদৃষ্টি কামনা করেন। তিনি চাঁদপুরের ব্যবসায়িক ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ইকোনমিক জোন গঠনে চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করবে বলে জানান এবং চাঁদপুর রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানান। তিনি বলেন, নদী শাসন ব্যবস্থা স্থায়ী হলেই চাঁদপুরের ব্যবসায়িক ঐতিহ্য ফিরে আসবে। ব্যবসায়ীরা শিল্পস্থাপন পূর্বক ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসবে।
মতবিনিময় সভায় অর্থমন্ত্রণালয়ের আইআইএফসির অতিরিক্ত পরিচালক টিম লিডার শামছুর রহমান বলেন, ব্যবসায়ীদের আগ্রহের উপরই নির্ভর করবে চাঁদপুরে ইকোনমিক জোন নির্মাণের সময়সীমা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রায় ১০০টির মত ইকোনমিক জোন গঠনের প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। প্রাথমিক পর্যায়ে পাবনা, কুষ্টিয়া, চাঁদপুর (হাইমচর) ও নড়াইল এ ৪টি অঞ্চলের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব সমীক্ষার কাজ চলছে। চাঁদপুরের হাইমচরে ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ৮ হাজার একর খাস-জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহের ওপর তার পরিমাপ আরো বাড়তে পাড়ে। আমরা ইকোনমিক অঞ্চলসমূহ পরিদর্শন পূর্বক প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছি। ব্যবসায়ীদের স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ থাকলে নির্মাণ কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে। তিনি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ ডাটা সংগ্রহ করেন।
মতবিনিময় সভায় মতবিনিময় করেন আইআইএফসির প্রকৌশলী সায়েদুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবু রায়হান, সহকারী পরিচালক মোঃ মহিদুল হায়দার, চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ, পরিচালক আমিনুর রহমান বাবুল, মোঃ হযরত আলী, পরেশ চন্দ্র মালাকার, হাজী লিয়াকত পাটওয়ারী ও রেজওয়ানুর রহমান রিজু পাটওয়ারী।