• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

যুবদল নেতা ফয়সাল গাজী বাহারের মায়ের মৃত্যুতে জেলা বিএনপির শোক

প্রকাশ:  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:০৮ | আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 চাঁদপুর জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ফয়সাল গাজী বাহারের মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকসহ জেলা বিএনপির সকল যুগ্ম আহ্বায়ক, সদর উপজেলা বিএনপি, সদর পৌর বিএনপি এবং বিএনপির সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা এক যৌথ শোক বার্তায় মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বাবলু স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পশ্চিম সকদীর ইকবাল হোসেন খোকা হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ ২ জন জেল হাজতে
৫ জন পলাতক ॥ জামিনে ২ জন ॥ ১ জন মারা গেছেন
সোহাঈদ খান জিয়া ॥ চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদী গ্রামে খোকা হত্যা মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুমন এই মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করেন। ইকবাল হোসেন খোকা হত্যার ঘটনায় তার মেঝো ছেলে মোঃ সোহেল খান বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ মামলার প্রধান আসামী দেলোয়ারের পিতা শহীদুল্লাহ ও স্ত্রী জোসনা বেগমকে ঢাকা থেকে আটক করে। বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছে। আর মামলার প্রধান আসামী দেলোয়ার হোসেন দেলু কোর্টে স্যারেন্ডার দিতে গেলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। বর্তমানে মামলার ২ জন আসামী জেল হাজতে রয়েছে। বাকি ৫ জন আসামী পলাতক রয়েছে। এদের মধ্যে আঃ রশিদ মারা যান।
আসামীরা হচ্ছে : মোঃ দেলোয়ার হোসেন দেলু, মোরসালিন, কামাল, খোকন, সুমন, শহীদুল্লাহ্, মামুন, শরীফ, আরিফ, আঃ রশিদ, বশির, সুরাইয়া ও জোস্না। এদের মধ্যে চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়া হয় বশির, সুমন, আরিফ ও শরীফকে। বাকি ৫ আসামি পলাতক রয়েছে। এরা হচ্ছে : কামাল, খোকন, সুমন, মামুন ও সুরাইয়া। চার্জশীটভুক্ত আসামিদের মধ্যে আঃ রশিদ মারা যান।
উল্লেখ্য, ৩০ মে ২০২১ সন্ধ্যায় দু’পরিবারের সম্পত্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে ইকবাল হোসেন খোকাকে তার দোকানের ভেতরে রেখে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে খোকার পুরো শরীর ঝলসে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ দিন পর ৯ জুন ২০২১ তারিখে তিনি মারা যান। তার মেঝো ছেলে সোহেল খান  বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
সোহেল খান বলেন, আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই। আর যেন কোন মানুষকে আমার বাবার মতো হত্যার শিকার হতে না হয়। হামলাকারীরা খারাপ লোক। এদের কঠিন বিচার হওয়া উচিত।
জামিনপ্রাপ্ত মামলার আসামী শহীদুল্লাহ্ খান বলেন, আদালত যে সিদ্ধান্ত দিবে সেটাই আমরা মেনে নিবো। আমরা হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করিনি। সম্পত্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, রোকেয়া বেগম ও শহীদুল্লাহ্ খান গংয়ের সাথে বহু পূর্ব থেকে সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছে। সে বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মাঝে মামলা চলে আসছে। তাদের দু’পরিবারের সম্পত্তিগত বিরোধের বলি হলেন ইকবাল হোসেন খোকা।
এলাকাবাসীর মতে, এ ঘটনার সাথে প্রকৃতপক্ষে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা জরুরি। আর না হলে সম্পত্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে আবারো হামলা মামলা ও নিহতের ঘটনা ঘটতে পারে।
একটি সূত্র জানায়, পূর্বেও সম্পত্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে নিহত ইকবাল হোসেন খোকার পিতা রুস্তম খানকেও হত্যা করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় মামলা ও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
নির্বাচিত না হয়েও পরিষদের সদস্য আহসান তালুকদার
স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঋণখেলাপির কারণে বিধি অনুসারে নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী মোঃ আহসান তালুকদার। ওই ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন একমাত্র প্রার্থী মোঃ নেছার আহাম্মেদ তালুকদার। পরবর্তীতে প্রার্থিতা বহাল রাখার জন্যে উচ্চ আদালতে মামলা করেন আহসান তালুকদার। পাল্টাপাল্টি দুই প্রার্থীর মধ্যে মামলা চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে এই ইউনিয়নের গেজেট প্রকাশ হয়। কিন্তু নির্বাচন স্থগিত এই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আহসান তালুকদারকে সকল কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন বর্তমান নির্বাচিত পরিষদ। এ বিষয়ে আপত্তি এনে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী নেছার আহাম্মেদ তালুকদার।
তিনি গত ২২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। যার অনুলিপি দেয়া হয় নির্বাচন কমিশন সচিব, সচিব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা কুমিল্লা, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
অভিযোগের বিবরণ থেকে জানা গেছে, আহসান তালুকদার ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ১৭ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মনোনয়নপত্র যাছাই-বাচাইকালে পদ্মা ব্যাংক ফরিদগঞ্জ গৃদকালিন্দিয়া শাখায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। ২১ অক্টোবর পর্যালোচনা শেষে রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। নিয়মানুসারে তিনি প্রার্থিতা বহালের জন্যে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আপিল করেন। সেই আপিলও ২৫ অক্টোবর শুনানি শেষে খারিজ হয়ে যায়।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন ২৬ অক্টোবর ধার্য ছিল। পরবর্তীতে ২৭ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দের দিন একমাত্র প্রার্থী থাকায় প্রতীক না দিয়ে নেছার আহাম্মেদ তালুকদারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা এবং কাগজপত্র হস্তান্তর করেন।
এ অবস্থায় আহসান তালুকদার সঠিক তথ্য গোপন করে উচ্চ আদালত হতে তার প্রার্থিতা বহাল রাখার আদেশ প্রাপ্ত হন। তথ্য গোপনের বিষয়টি অবগত করে নেছার আহাম্মেদ তালুকদার উচ্চ আদালতে আপিল করেন। শুনানি শেষে আহসান তালুকদারের আদেশ বাতিল হয়।
এরপর সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচনের পূর্বের দিন অর্থাৎ ১০ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় ওই ওয়ার্ডে নির্বাচন হবে না মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ চূড়ান্ত আদেশের জন্যে ফুল বেঞ্চে প্রেরণ করেন। চূড়ান্ত আদেশ না হওয়ায় নেছার আহমেদ তালুকদারের নাম গেজেটভুক্ত ও শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত রাখে।
নেছার আহমেদ তালুকদার বলেন, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের সচিব অতি উৎসাহিত হয়ে ঋণখেলাপির দায়ে মনোনয়ন বাতিল হওয়া ব্যাক্তিকে ৫নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে দায়িত্ব দিয়ে তার নাম ইউপি কার্যালয়ে নবগঠিত পরিষদের সঙ্গে সংযুক্তক্রমে মাসিক সভা রেজুলেশন বই, নোটিশ বই, হাজিরা বইসহ সকল উন্নয়ন কর্মকা-ে অন্তর্ভুক্ত করে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ করার ক্ষমতা প্রদান করেন। এসব বিষয় ইউনিয়ন পরিষদ অদ্যাদেশ বিধি বহির্ভূত ও স্থানীয় সরকার আইন পরিপন্থি এবং চেয়ারম্যান ও সচিবের মনগড়া সিদ্ধান্ত। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।
বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল্যা পাটওয়ারীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ঋণখেলাপীর বিষয়টিও আমারা জানা আছে। তিনি ঋণখেলাপী না, অন্যের জামিনদার ছিলেন। উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। তাকে পরিষদে অন্তর্ভুক্ত না করার জন্যে আমাকে নির্বাচন অফিস থেকে কোনো চিঠি দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে কী বিধান রয়েছে আমি জেনে নেবো।

সর্বাধিক পঠিত