• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভা

মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যাপক আলোচনা ও সিদ্ধান্ত

রমজানের সময় এবং পূর্বে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ

প্রকাশ:  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভা ভার্চুয়ালি পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ২০ ফেব্রুয়ারি জুম অ্যাপের মাধ্যমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপ্রধানে সভায় চাঁদপুরের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় ৭৪ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
জেলা প্রশাসক মেঘনায় বালু উত্তোলনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচনায় আনেন। তিনি বলেন, একদিকে ৪ হাজার কোটি টাকার শহর রক্ষাবাঁধ, অপরদিকে মেঘনায় যত্রতত্র অবৈধ বালু উত্তোলন। এ দুটি একত্রে চলতে পারে না। তিনি বলেন, ২০১৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মেঘনার বালু উত্তোলনে সরকারের ১ টাকাও লাভ হয়নি। বরং ডুবোচর খননের নামে শতাধিক ড্রেজারের মাধ্যমে এলোমেলোভাবে বালু উত্তোলনের কারণে মেঘনার দুই পাড়ে ভাঙনের প্রকোপ দিনদিন বেড়েই চলেছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, মেঘনায় যারা বালু কাটছে নামে-বেনামে, তার কয়েকটি কোম্পানির মালিক মোঃ সেলিম খান। এ বিষয়ে তিনি পাউবো চাঁদপুর-এর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর-এর উপ-পরিচালক এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য জানতে চান৷ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, কাগজে-কলমে মেঘনায় বালু উত্তোলন বন্ধ আছে। শহর রক্ষায় আমরা ডুবোচরগুলো কাটার মতামত দিয়েছি।
বিআইডব্লিউটিএ-র উপ-পরিচালক বলেন, ডুবোচরগুলো কাটার জন্যে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের জন্যে একসময় সেলিম খানের কাছ থেকে কিছু টাকা নেয়া হয়েছিল। জরিপ কাজটিও অনেক দূর এগিয়েছিলো। তারপর থেকেই সেলিম খান নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। বর্তমানে সর্বোচ্চ আদালতেও মামলা চলমান আছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিআইডব্লিউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে বসবে। বৈঠকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হবে এবং এটি বন্ধে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
সভায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। একই সাথে আলোচনায় আসে ২৬ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একযোগে চাঁদপুরে লক্ষাধিক স্কুল এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকাদানের বিষয়টিও। এ ব্যাপারে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তদের সহায়তা কামনা করা হয়েছে। সহায়তা দিতে জনপ্রতিনিধিদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া আদায়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মারাত্মক চাপ রয়েছে। তিনি বলেন, চাঁদপুর পৌরসভার কাছে বকেয়া পাওনার পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা। জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে পাওনা ২৭ লাখ টাকা। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অ্যানালগ মিটারের পরিবর্তে ডিজিটাল মিটার লাগানো নিয়ে জটিলতার বিষয়টিও তিনি সভায় উত্থাপন করেন।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউনুস হোসেন বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সকল কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। কাজের অগ্রগতি শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফাহিম ইকবাল বলেন, আমাদের কোনো মেগা প্রকল্প নেই। তবে ৫ কোটি টাকার উপরে কিছু কাজ আছে, সেগুলো চলমান।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, তাঁর দপ্তরে বড় দুটি কাজ চলমান আছে। প্রত্যেক উপজেলায় গভীর নলকূপ বরাদ্দের তালিকা স্ব স্ব এলাকার সংসদ সদস্যগণ দ্রুত দিলে তাদের কাজগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো।
সভায় রমজানের সময় এবং পূর্বে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে যে কোনো মূল্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হবে। এ ব্যাপারে তিনি চেম্বার অব কমার্সের সহায়তা কামনা করেন।

 

সর্বাধিক পঠিত