মসজিদ কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের
যমুনা রোডে একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম
চাঁদপুর শহরের যমুনা রোডে মসজিদ কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বৃদ্ধসহ একই পরিবারের ৪ জনকে আহত এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহতরা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন রোড এলাকার রেলওয়ে বাংলোর সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান।
আহত বৃদ্ধ বাবুল মোল্লা (৬০) যমুনা রোড এলাকার মৃত চানমিয়া মোল্লার ছেলে ও চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী। বাকি আহতরা হলেন যমুনা রোড এলাকার বাবুল মোল্লার ছেলে নূর মোহাম্মদ (২৯), হানিফ মোল্লার মেয়ে লাকী আক্তার (৩৬) ও সেকান্তর হাওলাদারের ছেলে বাবু হাওলাদার (৩০)।
আহতরা জানান, একই এলাকার মঞ্জিল বেপারীর ছেলে মহসিন বেপারী, হানিফ বেপারী, জয়নাল মোল্লার ছেলে আলা-আমিন মোল্লা, জুনায়েদ মোল্লা, মন গাজীর ছেলে ইমন গাজী, জামাল মোল্লার ছেলে নাজির মোল্লা ও পল্টু মোল্লা গংয়ের সাথে এলাকার মসজিদ কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় উল্লেখিতরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে আহতদের টেইলার্সের দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। এ সময় মৎস্য ব্যবসায়ী বৃদ্ধ বাবুল মোল্লা তাদের হামলা থেকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে দ্রুত দোকান বন্ধ করতে গেলে মহসিন বেপারী চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তার হাতে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। হামলার খবর পেয়ে ও আহতদের ডাক-চিৎকারে স্বজনরা এগিয়ে গেলে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে আহত করে। তাদের অভিযোগ, হামলার সময় হামলাকারী মহসিন, আল-আমীনসহ অন্যরা দোকানে থাকা নগদ ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
আহত লাকী আক্তার জানান, তারা আমার চাচার দোকানে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করার খবর পেয়ে আমরা দৌড়ে চাচাকে রক্ষার জন্যে এগিয়ে গেলে মহসিন বেপারীসহ তার সাথের লোকজন আমাকেও মেরে আহত করে। এ সময় তারা আমার জামা-কাপড় টেনে হিঁচড়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এমনকি আমার গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আমরা সবাই চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিই। আমার চাচার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে মৎস্য ব্যবসায়ীর ছেলে মোঃ মাসুদ রানা বাদী হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ মামলার ঘটনা শুনে ১২ ফেব্রুয়ারি মাগরিবের নামাজের সময় উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা আহত বাবুল মোল্লার ছেলে মৎস্য ব্যবসায়ী খায়রুল আলম মাসুদ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। বর্তমানে সেও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে বড়স্টেশন ও যমুনা রোড এলাকায় উল্লেখিত সন্ত্রাসী ঘটনার কারণে এলাকাবাসী আতঙ্কিত অবস্থায় দিন যাপন করছে। এলাকাবাসী অবিলম্বে উল্লেখিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।