হাজীগঞ্জে রাতের আঁধারে বসতঘরে পরিকল্পিত আগুন
রাতের আঁধারে পরিকল্পিভাবে বসতঘরে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগুন দেয়ার ঘটনায় অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে গেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বিধবা এক নারী, তার মাসহ দুই সন্তান। রাতে বিধবা নারীর আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে আগুন নেভায়। সোমবার দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের ওড়পুর গ্রামের চৌধুরী বাড়ির মৃত মবিন চৌধুরীর বসত ঘরে।
মৃত মবিন চৌধুরীর স্ত্রী শিউলী বেগম (৩৫) জানান, তার ননদসহ ভাসুর মানিকের সাথে সম্পত্তিগত বিরোধ রয়েছে বহুদিন ধরে। সোমবার বিকেলে ভাসুর মানিক চৌধুরীর জমিতে হাঁস যাওয়া নিয়ে তার জা তাছলিমা বেগমের সাথে তার ঝগড়া হয়। এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ভাসুরের ছেলে তারেক (২০) তাদের বসতঘরে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় তারা পোড়া গন্ধসহ ঘুমের মধ্যে মাথার কাছে আগুনের তাপ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখেন, ঘরের ভেতরে আগুন জ¦লছে। পরে তাদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে করে অল্পের জন্য বসতঘর, মালামাল ও ঘরে থাকা লোকজন প্রাণে রক্ষা পান।
বিষয়টি তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন ও ইউপি সদস্য মামুনুর রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিউলী বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরো জানান, ১৩ বছর আগে আমার স্বামী মারা যান। এরপর থেকে আমার ননদ ও ভাসুরসহ তার পরিবারের লোকজনের সাথে সম্পত্তিগত বিরোধ শুরু হয়। তৎকালীন সময়ে আমি পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর তারা আপোষ-মীমাংসা করে। আপোষ-মীমাংসার পর এতোদিন মোটামুটি ভালো ছিলাম। এখন আবার তারা আমাদেরকে হয়রানি করা শুরু করেছে। সোমবার রাতে আমাদেরকে মারার উদ্দেশ্যে বসতঘরে আগুন দেয়। তিনি থানায় অভিযোগ দিবেন বলে জানান।
এদিকে তারেক বাড়িতে না থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার মা তাছলিমা বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমার ছেলে ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে ডাক-চিৎকার শুনে আমরা ঘুম থেকে জেগে উঠি এবং আমার ছেলেসহ আমরা আগুন নেভাতে যাই। যদি আমার ছেলে আগুন দিতো, তাহলে সে আগুন নেভাতে যেতো না। এ সময় তিনি শিউলী বেগমের বিরুদ্ধে উল্টো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার অভিযোগ করেন।
কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিউলী বেগমকে আইনি সহায়তা নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এ সময় আমার সাথে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যসহ অন্য লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জানান, অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।