বিষ্ণুদী আজিমিয়া সপ্রাবির প্রধান শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যু
সহকর্মীদের সাথে অভিমানেই কি আত্মহত্যা? নাকি হত্যা?
গত ২৬ জানুয়ারি চাঁদপুর শহরের মরহুম আঃ করিম পাটোয়ারী সড়কের তালতলাস্থ বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম উক্ত বিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্ব থেকেই এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের জন্যে বেশ ক’জন চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ভাগ্য গুণে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের জন্যে যারা চেষ্টা বা তদবির চালিয়ে গেছেন, তাদের তদবির বা পদক্ষেপ থেমে থাকেনি। তারা বিভিন্ন চেষ্টা-তদবির চালান প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের চাকুরি নীতিমালা অনুযায়ী। শুধু তা-ই নয়, বিভাগীয় পর্যায়ে অভিযোগ পর্যন্ত করেন।
এদিকে মৃত প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের মৃত্যুর সময় তাঁর পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়। একটি সূত্র জানায়, উক্ত চিরকুটটি একটি লম্বা লেখা। সেটি কম্পিউটার কম্পোজ করা এবং মৃত রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষর ও সীলযুক্ত। সূত্রটি জানায়, সেই চিরকুটে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্ব থেকে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত এই পদে থাকাকালীন সময়ে সহকর্মীদের এই বিদ্যালয়ে একই পদে যোগদানের চেষ্টা, তদবিরসহ নানা হয়রানির কথা উল্লেখ করে মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এবং একই পদের একজন সহকর্মীকে দায়ী করে গেছেন।
অপরদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, রফিকুল ইসলামের শ্বশুরের কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় তিনি সকল কিছু দেখাশুনা করতেন। সেই পক্ষের প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। সেই সম্পত্তি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঝামেলা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। শ্বশুর না থাকায় সেই পক্ষের অভিভাবক হিসেবে তিনি সকল কিছু দেখাশুনা করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, সম্পত্তিগত কারণেও অত্যন্ত সুকৌশলে তাকে হত্যা করা হতে পারে।
এদিকে মৃত্যুর ১ সপ্তাহ প্রায় শেষ হলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি। যদিও এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হননি। গোপন সূত্রে জানা যায়, মৃত রফিকুল ইসলামের পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পর পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।
এদিকে পোস্টমর্টেমে অংশগ্রহণকারী চিকিৎসক প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে কেউ এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে : অপেক্ষা করুন, শীঘ্রই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোঃ আব্দুর রশীদের সাথে হলে তিনি বলেন, তদন্তাধীন কোনো বিষয়ে এই মুহূর্তে কথা বলা যাবে না। তাই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকেই এ ঘটনা নিয়ে কানাঘুষা চলছে যে, ঘটনাটি কি সহকর্মীদের সাথে অভিমানে আত্মহত্যা, না কি হত্যা? এ নিয়ে এখন সর্বত্রই আলোচনা চলছে। তাই মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন বলে জানান ভুক্তভোগীগণ।