• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চার বছরেও স্থায়ী ক্যাম্পাস হলো না চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের

প্রকাশ:  ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

দীর্ঘ সাড়ে চার বছরেও চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হয়নি। নিজস্ব জায়গা নির্ধারণের পরও নানা জটিলতার মারপ্যাঁচে তা আটকে আছে। কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ভেতরে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে তৃতীয় ব্যাচের কার্যক্রম চলছে। সামনে শুরু হবে চতুর্থ ব্যাচ। অথচ হাসপাতালের কয়েকটি কক্ষে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা ছাড়া আর তেমন কিছুই নেই কলেজটিতে। সবচেয়ে বড় সমস্যা শিক্ষার্থীদের নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা নেই। যদিও শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে একটি বহুতল বাড়ি শিক্ষার্থীদের জন্য নেয়ার প্রক্রিয়া হয়েছিলো, কিন্তু সেটিও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। এমন নানা প্রতিকূল সমস্যার মধ্য দিয়েই চলছে কলেজটির কার্যক্রম।
২০১৮ সালে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর শুরু হয় কলেজের শিক্ষক নিয়োগ ও ভর্তি প্রক্রিয়া। নিজস্ব ক্যাম্পাস না থাকায় তড়িঘড়ি অস্থায়ী হিসেবে চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ৪র্থ তলার একটি ইউনিটে শুরু হয় কলেজের কার্যক্রম। এখানে কয়েকটি কক্ষের মধ্যেই করা হয় অধ্যক্ষের কার্যালয়, অফিস কক্ষ ও শ্রেণি কার্যক্রম। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে কলেজের প্রথম ব্যাচে ৫০ ছাত্র-ছাত্রীকে ভর্তির অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর প্রথম ব্যাচে ভর্তি হওয়া ৩৮ জন ছাত্রী ও ১২ জন ছাত্র নিয়ে যাত্রা করে এই মেডিকেল কলেজ। এনাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমেস্ট্রি-এ ৩টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলে আসছে ১টি কক্ষে। আর ৩ বিভাগের জন্য ৩টি ল্যাব ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে আর তেমন কিছুই নেই। মেডিকেল স্টুডেন্টদের জন্য লাইব্রেরি আছে, তবে সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বই নেই বলে জানান ক’জন শিক্ষার্থী। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য আবাসিক কোনো হোস্টেলও নেই। তারা থাকছেন হাসপাতালে কোয়ার্টারে। শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ ক্যাম্পাস নির্মাণ না হওয়ায় তাদের পাঠক্রমে সমস্যা হচ্ছে। নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা প্রকট হচ্ছে আরও। এছাড়া সামনে কলেজে নতুন আরেকটি ব্যাচ (৪র্থ) শুরু হবে। এসব সমস্যার সমাধান না হলে তারাও অনেক সমস্যার মধ্যে পড়বে। এছাড়া শিক্ষকদের সংখ্যাতেও ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে ২৪ জন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের কেউ ভাড়া বাসায় কেউ কেউ ঢাকা থেকে এসে ক্লাস নেন।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ জামাল সালেহ উদ্দীন বলেন, একটি মেডিকেল কলেজে সুযোগ-সুবিধা বলতে প্রধানত হলো একাডেমিক কার্যক্রম। আমাদের ক্লাসের যেসব সুবিধা থাকা দরকার সেগুলো মোটামুটি আছে। হোস্টেল ফ্যাসিলিটিজ খুবই সীমিত। আমাদের নিজস্ব কোনো হোস্টেল নেই। হাসপাতালের ডক্টরস কোয়ার্টারের খালি রুমে স্টুডেন্টদের একোমোটেড করছি। ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা কমন রুম নেই। নেই কনফারেন্স রুম। ক্লাস বন্ধ রেখে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। সে সময় ব্যাহত হয় শিক্ষা কার্যক্রম। তিনি জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের ইসলামপুর গাছতলা এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে আমাদের নিজস্ব ক্যাম্পাসের জন্য ৩২ একর জমি নির্ধারণ করা হয়। মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস নির্মাণে প্রকল্প তৈরিসহ অনেকদূর এগিয়েছে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মানুযায়ী লাল শ্রেণিভুক্ত হিসেবে প্রকল্পটি চিহ্নিত থাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের বিষয়টি আটকে আছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের লাল শ্রেণিভুক্ত হিসেবে যে ছাড়পত্র থাকতে হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ আবেদন করেনি বলে জানান চাঁদপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ হান্নান।