• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনে সম্পন্ন হলো চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সুবর্ণজয়ন্তী

৬০ দশক থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মের সাংবাদিকদের ছিলো মিলনমেলা

প্রকাশ:  ০৬ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৩৯
এএইচএম আহসান উল্লাহ
প্রিন্ট

চাঁদপুর প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠার পঞ্চাশ বছরপূর্তি তথা সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব অনুষ্ঠিত হলো ৪ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার। আবার এ বছরটিই মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর। একটি স্থানীয় পর্যায়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অপরটি জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব এবং মর্যাদার শীর্ষে থাকা। গুরুত্ব এবং হৃদ্যতার দিক থেকে একটি অপরটির সাথে সম্পর্ক সুনিবিড়। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে জাতির বিবেকখ্যাত সাংবাদিকদের সংগঠন 'প্রেসক্লাবের' সুবর্ণজয়ন্তী আর মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একই বছর হওয়া চাঁদপুরের সাংবাদিকদের তথা প্রেসক্লাবের জন্যে খুবই গৌরবের এবং মর্যাদার। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত পথচলার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই যেনো চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পথচলা শুরু হয়েছিলো। এটি যেনো এদেশের পবিত্র মাটির সাথে প্রেসক্লাবের তথা চাঁদপুরের সাংবাদিকদের নাড়ির সম্পর্কের একটি যোগসূত্র। যা অনুভব করা গেছে প্রেসক্লাবের ৫০ বছরপূর্তি তথা সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে।

চাঁদপুরের কলমযোদ্ধাদের প্রাণের সংগঠন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সুবর্ণজয়ন্তীকে ঘিরে সোমবার প্রেসক্লাব অঙ্গনে মুক্তচিন্তার তথা মুক্তবুদ্ধি চর্চার সোনার মানুষগুলোর মিলনমেলা ঘটেছে। জাতিকে পথনির্দেশনা দেয়ার মানুষগুলো এদিন ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে এসে এ জেলার সংবাদকর্মীদের এক, অভিন্ন এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে উজ্জীবিত করে গেছেন। সমবেত হয়েছেন দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, অত্যন্ত বিজ্ঞ প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ, জনবান্ধব জনপ্রতিনিধি, মানবিক চিকিৎসকসহ সমাজে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থেকে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথনির্দেশক সোনার মানুষগুলো। ষাটের দশক থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মের সাংবাদিক এবং সাংবাদিক নেতারাও এসেছেন এই সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে তাঁরা অতিথি ছিলেন, আবার সংবর্ধিত হয়েছেন, সম্মাননা পেয়েছেন। যাঁর যাঁর কর্মক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁদেরকে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা, সংবর্ধনা, মরণোত্তর সংবর্ধনাসহ নানাভাবে সম্মানিত করা হয়।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ২০২০ সালের কার্যনির্বাহী পরিষদের আয়োজনে এ সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপিত হয়। একই অনুষ্ঠানে ২০২১ সালের নবগঠিত কার্যকরী কমিটির অভিষেক সম্পন্ন হয়। সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে চলেছে নানা আয়োজন। দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য এ আয়োজনকে ঘিরে পুরো অনুষ্ঠানটিই ছিলো খুবই উৎসবমুখর, প্রাণবন্ত এবং আনন্দময়।


সুবর্ণজয়ন্তীর এ উৎসবে শুধু প্রেসক্লাব সদস্যরাই অংশ নেননি, তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও দিনব্যাপী সকল আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন। তাই শুধু সাংবাদিকরাই নন, তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও মিলনমেলা ঘটেছে। সকাল পৌনে নয়টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের শুভসূচনা হয়। প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে র‌্যালি শুরু হয়ে পালবাজার, পৌর ভবনের সামনে দিয়ে শপথ চত্বর ঘুরে ওয়ান মিনিট হয়ে অনুষ্ঠানস্থল প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে প্রেসক্লাব সদস্য ছাড়াও ফটো সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকগণ অংশ নেন। সকলের হাতে বর্ণিল প্ল্যাকার্ড এবং সুসজ্জিত বাদক দলের চমৎকার ব্যান্ড বাজানো র‌্যালিকে উপভোগ্য করে তোলে। র‌্যালি শেষ করেই প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান পায়রা উড়িয়ে সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দও তখন উপস্থিত ছিলেন।

এরপর সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রেসক্লাব ভবনের পেছনে ডাকাতিয়ার পাড়ে বিশাল মাঠে খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসক্লাব সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা নানারকম ক্রীড়ায় অংশ নেন। দুপুরের পর অনুষ্ঠিত হয় পুরো জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে সাংবাদিক সমাবেশ। এই সমাবেশে জেলার সকল সাংবাদিকের মিলনমেলা ঘটে। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের মূল পর্ব আলোচনা, সংবর্ধনা, সম্মাননা, স্মৃতিচারণ ও শোকসভা। পুরো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান অধ্যাপক এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মফিজুর রহমান।

সবশেষে ঢাকা, চাঁদপুর এবং কুমিল্লার শিল্পীদের যৌথ পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।