• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বেপরোয়া জেলেরা, থামছে না ইলিশ নিধন

প্রকাশ:  ২৮ অক্টোবর ২০২০, ১৮:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

১৪ অক্টোবর থেকে 'মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০' শুরু করেছে সরকার। আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ আহরণ, ক্রয় বিক্রয়, পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মা-ইলিশ রক্ষায় ইলিশের বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা নিয়ে আশি্বন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে মৎস্য সংরক্ষণ আইন সংশোধন করে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের সময়সীমা ২২ দিন করা হয়েছে। এসময় দেশের জলসীমায় অর্থাৎ ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে কোনোভাবেই মা-ইলিশ আহরণ করতে দেয়া হবে না। মা-ইলিশ থাকতে পারে এমন নদীতে কাউকে মাছ ধরতে দেয়া হবে না।

 


সারাদেশের ন্যায় নদীবেষ্টিত চাঁদপুরেও ১৪ অক্টোবর থেকে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলছে। কিন্তু কোনোভাবেই চাঁদপুরে মা ইলিশ নিধন বন্ধ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই আইন অমান্য করে নদীতে ইলিশ ধরতে নামছে অসাধু জেলেরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও বিপুল সংখ্যক ইলিশ জব্দ করছে। জেলেদের আটক ও জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই রক্ষা পাচ্ছে না মা ইলিশ। সমপ্রতি অভিযানে নামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা চালায় জেলেরা। এতে অন্তত ১৩ পুলিশ সদস্য আহত হন।

অন্যদিকে, গতকালও জেলা প্রশাসনের অভিযানে ৫ লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়। একই দিন কোস্টগার্ডের অভিযানে ৫০ লাখ মিটার সুতা, ১ লাখ ১৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, ২টি ইঞ্জিন নৌকা ও ৫০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়।

এর আগের দিন ২৬ অক্টোবর সোমবার জেলা প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযানে ১০০ কেজি মা ইলিশ ও ১৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত জাল ও মাছের মূল্য আনুমানিক তিন কোটি টাকা। একই দিন আটককৃত তিন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- প্রদান করা হয়।

অন্যান্য বারের চেয়ে জেলেরা এবার বেশি বেপরোয়া। ২৫ অক্টোবর রোববার মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ জেলে ও তাদের পরিবারের হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ সময় ৪৭ রাউন্ড গুটি, ১৮ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও ৭ জেলেকে আটক করা হয়। এছাড়া গতকাল ২৭ অক্টোবরও র‌্যাবের টহল সদস্যদের উপর হামলা চালায় জেলেরা।

এর আগে ২৪ অক্টোবর শনিবার কেবলমাত্র হাইমচরে কোস্টগার্ড ও মৎস্য অফিসের যৌথ অভিযানে দেড় লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়। অর্থাৎ প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে নদীতে বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল, মা ইলিশ জব্দ এবং জেলেদের আটক করা হচ্ছে। তারপরও জেলেদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এতো অভিযানের পরেও চলছে মা ইলিশ নিধন উৎসব। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, অভিযানের বাকি দিনগুলোতে আর কত ইলিশ নিধন হবে?

সচেতন মহলের দাবি, চাঁদপুরে এখন পুলিশ, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি নৌবাহিনীর টহল জাহাজ এবং প্রয়োজন পড়লে হেলিকপ্টারে টহল দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুবা কোনোভাবেই মা ইলিশ নিধন বন্ধ হবে না।

সর্বাধিক পঠিত