• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

নবনির্বাচিত মেয়রের কাছে চাঁদপুর পৌরবাসীর বিপুল প্রত্যাশা

কাজটি সহজ, কিন্তু উপকারভোগী পুরো শহরবাসী' এমন সমস্যা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে : সচেতন পৌরবাসী

প্রকাশ:  ১৭ অক্টোবর ২০২০, ০৮:৪১
এএইচএম আহসান উল্লাহ
প্রিন্ট

গত ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়া পৌর পিতা অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের কাছে চাঁদপুর পৌরবাসীর প্রত্যাশা অনেক। যেমনি তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন, তেমনি জনগণের প্রত্যাশাও বিপুল। তারুণ্যদীপ্ত মনোভাব নিয়ে এই শহরটিকে একটি নান্দনিক শহরে রূপ দিতে জিল্লুর রহমান জুয়েল এ পৌরসভার লক্ষাধিক মানুষের কাছে তাঁর ম্যাসেজটি পেঁৗছে দিয়েছেন, প্রায় সমপরিমাণ মানুষের কাছে তিনি সশরীরে গিয়েছেনও। জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি নান্দনিকতার ছোঁয়ায় এ শহরকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেছেন। এগুলো তিনি গণসংযোগকালে এবং উঠোন বৈঠকেও জনসম্মুখে তুলে ধরেছেন। ইশতেহারে যে সব বিষয় এসেছে, এর বাইরেও তিনি এলাকা ভিত্তিক সমস্যা এবং গুরুত্ব বিবেচনায় জনকল্যাণের বিষয়গুলো চিহ্নিত করে সেসব বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি তিনি জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন। তাঁর পক্ষে যে এসব সম্ভব তাও তিনি জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছেন। পৌরবাসীও তাঁর কাছ থেকে আশাব্যঞ্জক প্রত্যাশার কথা শুনে, সরকারের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা আদায় করে আনার তাঁর মহাপরিকল্পনার উপর আস্থা রেখে তাঁকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন। এই প্রথম দেখা গেলো দলমতের ঊধর্ে্ব উঠে কোনো দলীয় প্রার্থীকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে। এমনও দেখা গেছে যে, আজীবন ধানের শীষে ভোট দিয়েছে, কিন্তু এই নির্বাচনে জিল্লুর রহমান জুয়েলকে নৌকায় ভোট দিয়েছে। এমন অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করলেই বুঝা যায় যে, বিএনপি অধ্যুষিত এলাকার কেন্দ্রগুলোতেও জিল্লুর রহমান জুয়েল বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। আর বিএনপি প্রার্থীর ওইসব কেন্দ্রেও ভরাডুবি হয়েছে। বিএনপির দুর্গে আঘাত হানার নেপথ্য কারণ হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নিজেকে ভোটের মাঠে সর্বসাধারণের প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। দলমত নির্বিশেষে সকলের মাঝে তিনি জনগণের প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।


এই সার্বিক বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সেবা ও টেকসই উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত চাঁদপুর পৌরবাসীর এখন নবনির্বাচিত পৌর পিতা অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের কাছে বিপুল পরিমাণ প্রত্যাশা। 'ঐতিহ্য, বাণিজ্য ও পর্যটননির্ভর নান্দনিক চাঁদপুর গড়ে তুলতে চাই' এ শ্লোগানে জনগণ লুফে নিয়েছে জিল্লুর রহমান জুয়েলকে। জিল্লুর রহমান জুয়েলের নির্বাচনী ইশতেহার এবং পর্যটননির্ভর নান্দনিক চাঁদপুর গড়ার শ্লোগানকে বিশ্লেষণ করে সচেতন পৌরবাসী তাঁর প্রতি বিশেষ কিছু পরামর্শ তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছে এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে। তাঁদের পরামর্শের মূল কথা হচ্ছে- চাঁদপুর শহরে এমন কিছু সমস্যা বিরাজমান, যা জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। অথচ এ সমস্যাগুলোর অধিকাংশই দূর হয়ে যায় আন্তরিক হয়ে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা এবং বাস্তবায়িত কাজটির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা। যেমন চাঁদপুর শহরের তীব্র যানজট এবং রাস্তায় মানুষের হাঁটাচলার কোনো সুযোগ না থাকা। অথচ সঠিকভাবে পরিকল্পনা করার পর তা বাস্তবায়ন করে এটিকে স্থায়ী রূপ দেয়ার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকলে এ সমস্যা সমাধান অবশ্যই সম্ভব।

পৌরবাসী মনে করেন, শহরে তীব্র যানজট এবং পথচারীরা নির্বিঘ্নে হাঁটাচলা করতে না পারার পেছনে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন অবিবেচিত ও অপরিকল্পিতভাবে পৌরসভা থেকে অসংখ্য অটোবাইকের লাইসেন্স দেয়া, যত্রতত্র রাস্তার উপরে অটোবাইকের স্ট্যান্ড করা, শহরের প্রধান এবং জনবহুল সড়কের দুই পাশ জুড়ে ভ্যানগাড়িতে করে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকান এবং ফুটপাতেও দোকানের পসরা সাজিয়ে বসা। এই তিন চারটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে পারলে শহরে তেমন কোনো যানজটই থাকবে না বলে শহরবাসী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন। অথচ এ সমস্যাগুলোর সমাধান করা পৌর কর্তৃপক্ষের জন্যে মোটেই কঠিন কিছু নয়।

এসব সমস্যা সমাধানের উপায় কী হতে পারে সে বিষয়ে সচেতন পৌরবাসী নবনির্বাচিত মেয়রকে পরামর্শ দিতে গিয়ে বলেন, প্রথমত লাইসেন্সবিহীন যত অটোবাইক আছে সব জব্দ করে এগুলোকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা, লাইসেন্সকৃত অটোবাইকের সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে আনা, কালীবাড়ি চৌরাস্তা তথা ওয়ান মিনিটের মোড় এবং এ সংলগ্ন সাধনা ঔষধালয় ভবনের সামনে রাস্তার দুইপাশ জুড়ে থাকা অবৈধ অটোবাইকের স্ট্যান্ড অপসারণ করা, রাস্তার দুইপাশ জুড়ে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান করা ভ্যানগাড়ির ভ্রাম্যমাণ বাজার উচ্ছেদ করা এবং ফুটপাতে মানুষের হাঁটাচলার জন্যে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করা। আর এসব করাটা পৌর কর্তৃপক্ষের দ্বারা তেমন কঠিন কোনো কাজ নয়। তবে পৌর মেয়রসহ পুরো পৌর পরিষদকে এসব বিষয়ে আপসহীন এবং দৃঢ়চেতা হতে হবে। এগুলো বাস্তবায়ন করতে আইনি কোনো জটিলতা নেই। তবে প্রভাবশালীদের নানা তদবির, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং মেয়রের উপর চাপ আসবে প্রচ-ভাবে। এসবকে ওভারকাম করেই তাঁকে এ কাজগুলো করতে হবে। এ কাজগুলো শুরুতেই করতে পারলে নবনির্বাচিত মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল এবং তাঁর পরিষদের উপর জনগণের আস্থা অর্জন হবে। এমন আরো কিছু বিরাজমান সমস্যা আছে যেগুলো দূর করতে পৌর কর্তৃপক্ষকে তেমন একটা সমস্যায় পড়তে হবে না এবং তেমন বেগ পেতে হবে না। অথচ এর সুফল পুরো পৌরবাসী সমানভাবে ভোগ করতে পারবে। যার ফলাফল সুদূরপ্রসারী। এ দৃষ্টিকোণ থেকেই সচেতন পৌরবাসী নবনির্বাচিত পৌর পিতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, 'কাজটি সহজ, কিন্তু উপকারভোগী পুরো শহরবাসী' এমন সমস্যা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে।

সূত্র : চাঁদপুর কণ্ঠ।