• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

পেঁয়াজ বাজারে আগুন

প্রকাশ:  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুরে অস্থিতিশীল পেঁয়াজের বাজার। একদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা। ভারত বিশ্ববাজারে পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না-এ ঘোষণা শোনামাত্রই আমদানি নির্ভর চাঁদপুরের পাইকারি মোকামে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সোমবার পুরাণবাজার পাইকারি পেঁয়াজের বাজারে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩৮ থেকে ৪২ টাকা, রাতটুকু অপেক্ষা করে একদিনের ব্যবধানে তা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। গতকাল সকালে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০/৫২ টাকায়, দুপুরের দিকে তা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। লাফিয়ে লাফিয়ে এই দাম বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক মনে করেছেন ক্রেতা সাধারণ। পাইকারি বাজারের এই দাম বাড়ার সংবাদে খুচরা ব্যবসায়ীগণও পেঁয়াজের দাম বাড়াতে দ্বিধা করেননি। ক্ষেত্র বিশেষ কোনো কোনো খুচরা দোকানে পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।


পুরাণবাজারের পাইকারি আদা, পেঁয়াজ, রসুন, ব্যবসায়ী আঃ মান্নান শেখের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আগের দিন যে পেঁয়াজ হাতে ছিল তা আমরা ৩৮-৪০ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ (গতকাল) আমাদের কাছে মাল না থাকায় (স্টক) আজকে তা আগের দামে বিক্রি করতে পারছি না। গতকাল যে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে, সেই পেঁয়াজ বেশি দামে কেনা হওয়ায় আমাদেরকে তা বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে তিনি কম দামে কেনা আগের কোনো পেঁয়াজ ছিল না বলে জানান।

 


তিনি আরো বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না সংবাদে আমদানিকৃত স্থান বর্ডার এলাকাই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। এছাড়াও গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পায় এবং এই বৃদ্ধিকৃত পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার ভয়ে পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীগণ তেমনভাবে পেয়াজ আমদানি করেন নি। তাই পুরাণবাজারের পাইকারি পেঁয়াজের বাজারে কিছুটা সংকট তৈরি হয়। তবে তিনি আরো দাম বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

বাজারে দেশি পেঁয়াজের তেমন আমদানি পরিলক্ষিত হয়নি এবং দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল আমদানিকৃত পেঁয়াজের তুলনায় কিছুটা বেশি। গতকাল পাইকারি বাজারে আমদানিকৃত (চায়না) রসুন বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা। আর আমদানিকৃত আদা (চায়না) বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। আলু বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩১ টাকা প্রতি কেজি।

গতবছর ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এ সময় দেশের বাজারে ধাপে ধাপে পেয়াজের দাম বেড়ে গিয়ে ২৫০ টাকা দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায়। এবছর ১৫ মার্চের মধ্যে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে দেশের বাজারে তার দাম কমতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তা দেশের বাজারে ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। অবশ্য তখন দেশে দেশি পেয়াজের আমদানিও ছিল আশাব্যঞ্জক। তবে দেশি পোয়াজের আমদানি থাকলেও তা বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হয়নি। সে সময় ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করায়, দেশে পেঁয়াজের চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে চীন, মিয়ানমার ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। কিন্তু বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দামের ওপর তার তেমন প্রভাব পড়েনি। সেই সময় বেশিদামেই পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায়।

বর্তমান সময় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার বিশ্ববাজারে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করলেও বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানিকারকদের ৫০ হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানির লক্ষ্যে এলসি খোলা আছে বলে জানা যায়। এছাড়াও বেনাপোল, হিলি, ভোমরা স্থলবন্দরে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশ পেঁয়াজ আমদানিকারকদের শত শত ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। এসকল আমদানিকৃত পেঁয়াজ যদি দেশে আসে এবং সুষ্ঠু বিলি ব্যবস্থাসহ মনিটরিং করা হয় তাহলে পেঁয়াজের বাজার বৃদ্ধিরোধসহ অধিক মুনাফাধারীদের হাত থেকে পেয়াজের মূল্যবৃদ্ধিরোধ করা সম্ভব হবে বলে ক্রেতা সাধারণ মনে করেন।

সর্বাধিক পঠিত