• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্ত জেলা নারায়ণগঞ্জ

মানুষ ভয়ে ছুটছে বিভিন্ন জেলায় ॥ চাঁদপুরেও আসছে

সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাই বড় ভীতি

প্রকাশ:  ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১২:৪০
এএইচএম আহসান উল্লাহ ॥
প্রিন্ট

বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সংখ্যা এখন দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। রোববার ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ১৮ জন, আর গতকাল বিকেল পর্যন্ত একদিনে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ৩৫ জন। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এখনই আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। সামনে এই সংখ্যা যে কী পরিমাণ জ্যামিতিক হারে বাড়বে তা গত দু দিনের সংখ্যা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

জাতীয় বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা থেকে জানা গেছে, দেশব্যাপী গতকাল পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ১২৩ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩৫ জন। এদিকে আক্রান্তের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ঢাকা মহানগর। এখানে গতকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হচ্ছে ৬৪ জন। আর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নারায়ণগঞ্জ। এই জেলায় গতকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ২৩ জন। যে সংখ্যা ৫ এপ্রিল ছিলো ১১ জন। একদিনের ব্যবধানে এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।

এদিকে যে কোনো সময় নারায়ণগঞ্জ লকডাউন হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় সেখানকার মানুষজন ভয়ে বিভিন্ন জেলায় চলে যাচ্ছে। চাঁদপুরেও আসছে অনেকে। এখন এই চলে আসার পেছনে ভীতির কারণ হচ্ছে, যারা আসছে তাদের মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্ত রয়েছে কি না। এমন যদি কেউ থেকে থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি যে এলাকায় যাবে, সে এলাকা পুরোটাই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। এ আশঙ্কায় এখন চাঁদপুরের মানুষ আতঙ্কিত। তাই চাঁদপুর জেলার চারদিকে স্থলপথ এবং নৌ পথে কড়া নজরদারি রাখা প্রয়োজন যেনো এই জেলা থেকে কেউ বের হতে না পারে এবং অন্য জেলার কেউ এ জেলায় ঢুকতেও না পারে।

জানা গেছে, গতকাল সোমবার কয়েকজন নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুরে ঢুকতে নিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়। তারপরও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের গুলিশা গ্রামের এক যুবক নারায়ণগঞ্জ থেকে গতকাল সকালে চাঁদপুর চলে এসেছে। এই যুবকের কারণে গুলিশা গ্রামের ওই বাড়িটি গতকাল লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। তার কারণ হচ্ছে, এই যুবক নারায়ণগঞ্জে যে এলাকায় থাকতো, সে এলাকায় গত দুদিন আগে এক লোক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ ঘটনার পর ওই এলাকা পুরোপুরি লকডাউন করে দেয়া হয়। গুলিশা গ্রামের যুবকটি সেখান থেকে পালিয়ে তার গ্রামে চলে আসে। তাই এই যুবক করোনায় সংক্রমিত হতে পারে সন্দেহে তার বাড়িটি লকডাউন করে দেয়া হয়। এছাড়া সে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য গতকাল তার শরীর থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয় পরীক্ষার জন্যে। আজ সেই নমুনা ঢাকা পাঠানো হবে। চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

শুধু এই যুবকের বাড়িই নয়, এই যুবকের পাশর্^বর্তী বাড়ির আরো দুই যুবক নারায়ণগঞ্জ থেকে চলে আসায় পাশাপাশি আরো দুটি বাড়ি লকডাউন করে রাখা হয়। বালিয়া ইউনিয়নে গতকাল তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা এ তথ্য জানিয়েছেন।

চাঁদপুরের সচেতন জনগণ প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে, যেনো কোনো অবস্থাতেই এ বিষয়ে কোনো মহল থেকে শৈথিল্য দেখানো না হয়।

সর্বাধিক পঠিত