সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিদেশে অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় কমিটি।
ডেঙ্গুর মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিদেশে থাকা নিয়ে প্রশ্ন সংসদীয় কমিটিতে
বুধবার সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এনিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।
বৈঠকে থাকা একজন সংসদ সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিটির সভাপতি আলী আশরাফ ও সদস্য মইনউদ্দীন খান বাদল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তারা জানতে চান, এ সময়ে মন্ত্রী কেন বিদেশ সফরে গেলেন?”
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য ফখরুল ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, “বৈঠকে দুজন সদস্য বলেছেন, এই মুহূর্তে মন্ত্রী বিদেশে থাকলে কীভাবে হবে? তবে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কিছু বলেনি।”
কমিটির সদস্য মো. দবিরুল ইসলাম, মো. মুজিবুল হক, আব্দুল মান্নান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসাও বৈঠকে ছিলেন। কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
ডেঙ্গু নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই মেয়রের বক্তব্যের প্রতিবাদে তাদের কুশপুতুল পোড়ানো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
এবার মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর ভয়ানক রূপ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ায় সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি অনেকের মনেই প্রশ্ন তৈরি করে।
তিনি মালয়েশিয়ায় পরিবার নিয়ে সফরে গেছেন- এ খবর চাউর হওয়ার পর ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মন্ত্রীর সফর নিয়ে স্পষ্ট কিছু না জানানোয় বিভ্রান্তি আরও বাড়ে।
সংসদীয় কমিটি প্রশ্ন তোলার পর যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ রাতেই মালয়েশিয়া থেকে ফিরছেন মন্ত্রী মহোদয়। আগামীকাল সকাল ১০টায় তিনি মিটফোর্ডে ডেঙ্গু ওয়ার্ড উদ্বোধন করবেন।”
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য গত শনিবার মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে স্ত্রীকে রেখেই দেশে তিনি ফিরে আসছেন।”
শেখ হাসিনার সরকারে পাঁচ বছর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর এবার পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হন ঢাকার এক সময়ের মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী এম এ মালেকের ছেলে জাহিদ মালেক।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডেঙ্গু মোকাবেলায় তারা ‘প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ’ নিয়েছে।
মন্ত্রণালয় এই পরিস্থিতির দায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের উপর দিয়ে বলেছে, কোন কোন এলাকায় মশার ঘনত্ব বেশি ও ডেঙ্গুর আশঙ্কার কথা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রকে জানানো হয়েছিল। মশক নিবারণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এটা সিটি করপোরেশনের করার কথা।
ডেঙ্গুতে এই পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সরকার। তবে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা এর দ্বিগুণের বেশি।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সব সরকারি বিভাগকে সমন্বিতভাবে সঠিক ও সময়োচিত পদক্ষেপ নেওয়া এবং আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।
এছাড়া চিকিৎসা সেবার মান নিশ্চিত করতে সব হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসক-নার্সদের উপস্থিতি এবং চিকিৎসা সেবার গুণগত মান বাড়াতে তদারকি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।