• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে চাঁদপুর নদীবন্দর টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

ডাঃ দীপু মনি ও মেজর রফিকের জোরালো ভূমিকায় চাঁদপুর নদীবন্দরের কাজ এতো দ্রুত শুরু করা সম্ভব হয়েছে : নৌ মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি

প্রকাশ:  ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০১:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেছেন, বিএনপিসহ যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে, সেই ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে চিঠি লিখেছেন, সেই চিঠিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করেছেন। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত কখনো বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করেনি। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে বিএনপি-জামায়াতের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এ দেশে যে উন্নয়ন গত ১০ বছরে হয়েছে, বিগত ১শ’ বছরেও সে উন্নয়ন হয়নি। অথচ বেগম খালেদা জিয়া নাকি কোনো উন্নয়ন দেখে না। কারণ, তার চোখে ছানি পড়েছে। তিনি গতকাল রোববার চাঁদপুর আধুনিক নদীবন্দর টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নৌ মন্ত্রী বলেন, বিএনপি এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, মানুষ পোড়ানো, বাস, ট্রেনে ও নৌ পথে পেট্রোল বোমা মারাসহ সকল সন্ত্রাসের লাইন্সেস দিয়েছিলো। এসব সন্ত্রাসীর জন্যে আবার কীসের গণতন্ত্র? খালেদা জিয়া তার দলের মানুষের সাথেও প্রতারণা করে যাচ্ছেন। তিনি তার দলের নেতা-কর্মীদের বলেছিলেন, ঈদের পরে বিএনপি কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবে। কত ঈদ চলে গেছে, কোনো আন্দোলন করতে পারছে না বিএনপি। তিনি বলেন, বিএনপি এখন কুঁজোর দলে পরিণত হয়েছে। তারা অন্যের উপর ভর করে পরগাছা হয়ে উড়তে চায়। বাংলাদেশের জনগণ বিএনপি-জামায়াতকে চূড়ান্ত রাজনৈতিক শিক্ষা দেবে আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে।
তিনি আরো বলেন, সকল বিপদের সময় নৌকার প্রয়োজন হয়। নৌকা ছাড়া কেউ তরী পার হতে পারে না। তিনি শ্লোগান দিয়ে বলেন, এ নৌকা নূহ নবীর নৌকা, হক-ভাসানীর নৌকা, সোহরাওয়ার্দীর নৌকা, বঙ্গবন্ধুর নৌকা, শেখ হাসিনার নৌকা, মেজর রফিকের নৌকা, ডাঃ দীপু মনির নৌকা, এদেশের সকল মানুষের নৌকা। নৌকা ছাড়া কোনো বাহন হতে পারে না। নৌকা হোক এদেশের জনগণের একমাত্র বাহন। মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা তোমার আমার ঠিকানা। তাই বঙ্গবন্ধু এ দেশের নদীপথের উন্নয়নের জন্যে স্বাধীনতার পর ৩ বছর ৯ মাস দায়িত্ব থাকাকালীন ৭টি ড্রেজার এনেছিলেন। এ ৭টি ড্রেজারের পর কোনো সরকার নদীপথের উন্নয়নে আর কোনো ড্রেজার ক্রয় করেনি। বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার গত ১০ বছর দায়িত্ব পালনকালে বিদেশ থেকে ১৭টি ড্রেজার ক্রয় করেছে। আরো ২০টি ড্রেজার আসবে। এসব ড্রেজারের মাধ্যমে দেশের নদীপথের খনন কাজ করে নদীকে আরো গতিশীল করতে নৌ-মন্ত্রণালয় কাজ করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ নৌ-মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের ১শ’ ভাগ নদীর মধ্যে ৮০ ভাগ নদী হারিয়ে গিয়েছিলো। বর্তমান সরকার ৬০ ভাগ নদীকে আজ ড্রেজারের মাধ্যমে খনন করে তা পুনরুদ্ধার করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের ২৯টি নদীবন্দরের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় চাঁদপুর নদীবন্দরের জন্যে ১শ’ ৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এখন ৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দের কাজ শুরু হবে। বাকীটা ক্রমান্বয়ে হবে। শেখ হাসিনার আমলে নদীবন্দরের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ডাঃ দীপু মনি ও মেজর রফিক সাহেবের জোরালো ভূমিকায় চাঁদপুরে এতো দ্রুত নদীবন্দরের কাজ হচ্ছে। তাঁরা আমাকে অসংখ্যবার তাগাদা দিয়েছেন এ কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে। তাই আমি বলবো, চাঁদপুরবাসী তাঁদের জন্যে ভাগ্যবান।
গতকাল রোববার বিকেলে চাঁদপুর শহরের মাদ্রাসা রোডস্থ লঞ্চঘাটে ‘চাঁদপুর নদীবন্দর টার্মিনাল ভবন ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ’ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও চাঁদপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। তিনি বলেন, চাঁদপুর নদীবন্দরের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। একসময় এ এলাকার মানুষ নদীপথেই বেশি যাতায়াত করতো। আমার মনে আছে, শৈশবকালে আমার আসা-যাওয়া ছিলো এ চাঁদপুর নদীবন্দর দিয়ে। চাঁদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিলো এই নদীবন্দর টার্মিনাল ভবনের। নৌপথের মানুষ বৃষ্টিতে ভিজবে তা কামনা করি না। মানুষ নৌ-পথে চাঁদপুর এসে সুন্দরভাবে ট্রেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে যাবেÑএটাই আমার কামনা। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে ১৫ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে বিগত ১শ’ বছরেও তা হয়নি। তাই নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আর একবার সুযোগ দিন। শেখ হাসিনাকে আর একবার বাংলার প্রধানমন্ত্রী করুন। যে উন্নয়ন হয়েছে, আমার বিশ^াস এদেশের জনগণ নিশ্চয়ই নৌকাকে বিজয়ী করবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনি বলেন, আমাদের চাঁদপুরের গৌরব চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের ২ জন সেক্টর কমান্ডার রয়েছেন। যারা এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের পরে চাঁদপুরে একটি আধুনিক নৌ-বন্দর নির্মাণ হবে। আমাদের দেশরতœ শেখ হাসিনা একনেকে এটি পাস করেছেন। এখন শুধু বাস্তবায়ন হবে এ অপেক্ষায় আমাদের থাকতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চাঁদপুরে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। চাঁদপুরে বিগতদিনে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা শুধু শেখ হাসিনার জন্যে। আজকের বাংলাদেশ সারাবিশে^র কাছে বিস্ময়। আমাদের তরুণরা বিশে^র নেতৃত্বের জন্যে প্রস্তুত হচ্ছে। এ দেশে বিএনপি জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস লালন করেছে। বেগম খালেদা জিয়া এতিমদের সম্পদ আত্মসাৎ করেছে। আজকের এ বাংলাদেশ একসময় বিশে^র কাছে একটি প্রতিষ্ঠিত দেশ হবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হকের সভাপ্রধানে এবং ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়–য়া, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আলম মিল্টন ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুলের উপস্থাপনায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মোঃ জিহাদুল কবির পিপিএম ও বিআইডব্লিউটিএ সিবিএ সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে তারা মিছিল সহকারে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। মিছিলগুলো ‘দীপু মনি, দীপু মনি’ শ্লোগানে মুখরিত ছিলো।


   চাঁদপুর কণ্ঠ।

সর্বাধিক পঠিত