প্রধানমন্ত্রীর অর্জন শূন্য: রিজভী
জাতিসংঘ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো অর্জন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মাদার অফ হিউম্যানিটি অর্জন নিয়ে বিএনপির মতামত জানতে চাইলে রিজভী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রথমে কোন আগ্রহই দেখায়নি সরকার। এর পরেও জাতিসংঘ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য কিছুই আনতে পারেনি প্রধানমন্ত্রী। এমনকি নিজেদের পাশের দেশকেও তার পক্ষে নিতে পারেনি। তার (প্রধানমন্ত্রী) কোনো অর্জনই নেই।
তিনি বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র নেই, নাগরিক অধিকার নেই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। যেখানে হাজার হাজার মানুষ গুম হয়, হত্যা করা হয়। সেখানে কিসের হিউম্যানিটি। প্রধানমন্ত্রীকে মাদার অব হিউম্যানিটি নয় মাদার অব ক্রয়েলিটির বলা উচিত।
প্রধানমন্ত্রীর গণসংবর্ধনা নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ঢাক ঢোল পিটিয়ে তাকে গণসংবর্ধনা দেয়ার থেকে এই টাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণ করলেও তো পারতেন।
প্রধান বিচারপতির ছুটি নিয়ে রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে গুন্ডামির মাধ্যমে জোরপূর্বক এক মাসের ছুটি দিয়ে গোটা বিচার ব্যবস্থাকে নিজেদের আয়ত্বে নিয়েছে সরকার। আসলে প্রধান বিচারপতিকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার এটি একটি প্রথম পদক্ষেপ। এখন নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে আর কোন পার্থক্য নেই। সব বিভাগের উপরই একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল শেখ হাসিনার। মানুষের বিচার প্রার্থনার শেষ আশ্রয় স্থলটুকু আর থাকলো না। এর ফলে আগামী দিনের সকল রায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই নিয়ন্ত্রণ হবে বলে জনমনে আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। কারন প্রধান বিচারপতিকে হুমকি দিয়ে ছুটি নিতে বাধ্য করা অথবা ছুটির নামে জালিয়াতি করা হয়েছে সেটি নজীরবিহীন। যেভাবে তাঁকে নাজেহাল করা হয়েছে, যেভাবে বিচার বিভাগের সম্মান, মর্যাদা ও ভাবমূর্তি নস্যাৎ হয়েছে তাতে বিচারবিভাগের সম্মান ও ভাবমূর্তি বলে কিছু অবশিষ্ট রইলো না।
এই সরকারের দু:সহ দৌরাত্বের বিরুদ্ধে সকলে মিলে সোচ্চার না হলে ভবিষ্যতে বিরোধী দল, মত ও বিশ্বাসের লোকদেরসহ ন্যায় বিচার পাওয়ার আরা কোন সম্ভাবনাই থাকবে না। সরকারের নিষ্ঠুর প্রতিহিংসার শিকার হবে সরকারবিরোধীরা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন ‘কোন সমস্যাই দেশের অগ্রগতি থামাতে পারবেনা’। এ কথাতো তিনি বলবেনই, কারন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিরোধী দলের চিন্তা ও বিশ্বাসসহ গণতন্ত্রই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মনঃপীড়া ও তাঁর ক্ষমতায় টিকে থাকার একমাত্র সমস্যা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ রাষ্ট্রের স্বাধীন স্তম্ভগুলিকে কঠিন কুঠারাঘাতে উপড়ে ফেলে এখন প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতার আধিপত্যের রঙ্গিন অগ্রগতি ও ক্ষমতাসীনদের লোভ লালসার অগ্রগতিতে জাতীয় সম্পদ লোপাট হতে আর কোন বাধা থাকার তো কথা নয় বলেও দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।
ভারত থেকে লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় নেয়া আগের দুটি ঋণের (তিনশ’ কোটি ডলার) সার্বিক কার্যক্রম সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করে থাকলে পুনরায় একই ধরনের ঋণ নেয়ার প্রয়োজন ছিল না দাবি করে রিজভী বলেন, একটি দেশের সার্বভৌমত্ব ঠিক না থাকলে এমন কঠিন শর্তে ঋণ নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।