ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন মডেল: অরুণ জেটলি
ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তার দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অন্যান্য দেশের জন্য তা একটি মডেল।
বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং সাড়ে চাড়শ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর এক বিবৃতিতে অরুণ জেটলি এ কথা বলেন।
অরুণ জেটলি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রগতি দেখে তিনি ‘মুগ্ধ’। বাংলাদেশের এই উন্নয়নের অংশীদার হতে ভারত ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
অর্থমন্ত্রী মুহিতের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সহযোগিতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে, যা সাম্প্রতিককালে ক্রমবর্ধমান। ভারতের স্বার্থে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং আমরা আমাদের পারস্পারিক যোগাযোগ গভীর করতে, বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে ‘একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করে অরুণ জেটলি বলেন, এর ধারাবাহিতায় দুই দেশের মধ্যে রেকর্ড ৩৬টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশে ভারতের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পনির বেশ কিছু বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন।
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আজ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণযোগ্য একটি মডেলে পরিণত হয়েছে।
জেটলি ও মুহিতের উপস্থিতিতেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের (এক্সিম) মধ্যে ৪৫০ কোটি ডলারের একটি ঋণ চুক্তি হয়, যাকে বলা হচ্ছে ভারতের তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিট।
এর আগে আরো দুটো লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় মোট তিনশ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল, বাংলাদেশ যার মাধ্যমে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় বাংলাদেশ।
এর বছরে ১ শতাংশ হার সুদে তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের এই অর্থ দিয়ে বিদ্যুৎ, রেলপথ, সড়ক, জাহাজ চলাচল, বন্দরসহ অবকাঠামো খাতে ১৭টি অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তাবয়ন করবে বাংলাদেশ।
অরুণ জেটলি বলেন, তার দেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশকে স্বল্প সুদে ৮০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার চুক্তি করেছে, যা কোনো দেশকে ভারতের দেওয়া সর্বোচ্চ ঋণ।
দুই দেশের এই উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে যোগাযোগকে ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয় হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
ভারতীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, সড়ক, রেল, জল ও উপকূলীয় জাহাজ চলাচলসহ ১৯৬৫ পূর্ব সংযোগ পুনরুদ্ধারে আমাদের দুই দেশের সরকার গুরুত্বারোপ করেছে। আমার বিশ্বাস, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং দুই দেশের মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে এই উদ্যোগ সাহায্য করবে।
বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানোয় এবং ঢাকায় উষ্ণ উভ্যর্থনা জানানোয় অর্থমন্ত্রী মুহিতকে ধন্যবাদ জানান অরুণ জেটলি।