• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

পাহাড়ের উৎসব ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে

প্রকাশ:  ০৪ অক্টোবর ২০১৭, ১৩:৩১
বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রিন্ট

বান্দরবানে মারমা  সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষের পাহাড়ী পল্লীগুলো নতুন করে সেজেছে। প্রতিবছরের মত এবারেও এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নানা আয়োজনে মধ্য দিয়ে বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় ২দিন ব্যাপী ধর্মীয় উৎসব পালন করবে।

আদিকাল থেকে তিন মাস ব্যাপী বর্ষাবাস (উপোস) থাকার পর পাহাড়ী মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে (প্রবারণা পূর্ণিমা) উৎসব পালন করে আসছে। কথিত আছে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধ এই আশ্বিনী পূর্ণিমায় তার মাথার চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।তাই আশ্বিনী পূর্ণিমার এই তিথিতে বৌদ্ধধর্মলম্বীরা আকাশে ওড়ানো হয় শত শত ফানুস বাতি।নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী ফানুস বাতি বানিয়ে আকাশে উড়িয়ে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ বা উৎসর্গ করেন ভক্তরা।

বান্দরবানে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে- মঙ্গল শোভা রথযাত্রা। বিশাল আকৃতির ময়ূর তৈরি করে তার ওপর একটি বুদ্ধ মূর্তি স্থাপন করে রথটি টেনে পুরো শহর ঘুরিয়ে সাঙ্গু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। এ সময় বৌদ্ধধর্মের নর-নারীরা ভগবানের উদ্দেশে নগদ টাকা ও মোমবাতি জ্বালিয়ে পূজা করে বুদ্ধ মূর্তিকে।ওই সময় রথের পিছনে যুবক-যুবতিরা তাদের ঐহিত্যবাহী গান গেয়ে ঢোল বাজিয়ে সকলকে উৎসাহ যোগান দিয়ে থাকে।

অনুষ্ঠানের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিতে তৈরি করা হয় ভয়ংকর আকৃতি  পুতুল । আর নির্মিত পুতুলের ভিতরে মানুষ প্রবেশ করে নেচে  মানুষকে আনন্দ দেয় । সেইদিন রাতের এ রথযাত্রা দেখার জন্য রাস্তার দু’পাশে উপচেপড়া ভিড় জমে।

এদিকে এবারেও ওয়াগ্যোয়াই পোয়েকে ঘিরে ৫ অক্টোবর রাতে বান্দরবানে বিভিন্ন পাড়ার গলিতে পিঠা তৈরির উৎসব আয়োজন করা হবে।রাতে পাহাড়ী তরুণ-তরুণী সারিবদ্ধভাবে বসে হরেক রকমের পিঠা তৈরি করে থাকে।পরের দিন ভোরে বিহারের নর-নারীরা সমবেত হয়ে ভগবানের বুদ্ধ উদ্দেশে ছোয়েং (পিঠা আহার) দান করেন।পরে যা প্রতিবেশীদের বাড়িতে বাড়িতে বিতরণ করেন এ উৎসবে।

সাধারণ সম্পাদক কো কো চিং মার্মা বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও নির্বিঘ্নে ওয়াগ্যোয়াই পালন করার জন্য আমরা প্রস্তুত। 

তিনি আরো বলেন, প্রতিবছর ৩দিনের কর্মসূচি থাকলেও এবার রোহিঙ্গা পরিস্থিতির কারণে আমরা ২ দিন অনুষ্ঠান করছি। বর্ণিল এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শুভ উদ্বোধন করবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিক উল্লাহ জানান, নিরাপত্তাজনিত কোন সমস্যা নেই, তারপরও উৎসব উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও বান্দরবানের ৭টি উপজেলা নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে মারমা সম্প্রাদায়ের জনগোষ্ঠীরা পালন করবে এই মহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে।