ভারতে যেভাবে এলো করোনা
সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত ভারত। এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে থাকলেও ভারতের করোনা পরিস্থিতি বেশ আশঙ্কাজনক। দেশটিতে চলতি মাসে দৈনিক সংক্রমণ প্রতিদিনই প্রায় ৯০ হাজার, যা অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
এদিকে, ভারতে কিভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ল তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন গবেষকরা। সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতে ফেরা প্রবাসীরাই করোনা ছড়িয়েছে। এমন তথ্যই জানিয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি)। গবেষকরা বলছেন, মূলত দুবাই ও ব্রিটেন থেকে আগত ভারতীয়রাই দেশে করোনা ছড়িয়েছে।
তাদের মত, এই প্রবাসী ভারতীয়রাই দেশে করোনা ছড়ানোর মূল উৎস হিসেবে কাজ করেছেন। জার্নাল অফ ট্রাভেল মেডিসিনে এই তথ্য দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সমীক্ষাটি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সময় মতো বন্ধ করে দিলে ভারতে এত বেশি আকারে করোনা ছড়িয়ে পড়ত না।
কারণ করোনা মূলত এসেছে বাইরের দেশ থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের মাধ্যমে। এই সমীক্ষা আরো বলছে, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও অন্ধ্রপ্রদেশ, মূলত এই তিন রাজ্য থেকেই পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। স্থানীয়ভাবে করোনা ছড়িয়েছে গুজরাট, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কেরালা, জম্মু-কাশ্মীর ও কর্ণাটকে।
আইআইটি মান্ডির অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর সরিতা আজাদ জানান, জাতীয় স্তরে বিভিন্ন ভাবে ছড়িয়েছে করোনা। তবে মূলত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীরাই মূল উৎস এর। সংবাদংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, যাত্রীদের ভ্রমণের ইতিহাস বলছে দুবাই ও ব্রিটেন থেকে আসা যাত্রীরাই ছড়িয়েছেন করোনা।
তারাই মূলত এই সংক্রমণের বাহক। দুবাই থেকে ১৪৪ জন ও ব্রিটেন থেকে ৬৪ জন প্রাথমিকভাবে আসা যাত্রী করোনা সংক্রমিত ছিলেন বলে আশংকা করা হচ্ছে। মার্চের ২৫ তারিখ থেকে ১৪ই এপ্রিলের মধ্যে মূল সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
এদিকে, দেশের মাত্র ১০টি রাজ্যে ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে মোট করোনা আক্রান্তের ৭৫ শতাংশ রোগী। বাকি ২৫ শতাংশ ছড়িয়ে দেশের বাকি রাজ্যগুলোতে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যে ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত করোনা রোগীর ৭৫ শতাংশ ছড়িয়ে রয়েছে, সেগুলো হলো মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, দিল্লি, ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরল, ওডিশা, তামিল নাড়ু, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ।
মহারাষ্ট্র করোনা সংক্রমণে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। গত ২৪ ঘন্টায় ওই রাজ্যে নতুন করে ১৭ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকে একদিনে যথাক্রমে আট হাজার ও সাত হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। করোনায় মোট মৃত্যুর ৮৩ শতাংশ রয়েছে দিল্লি, ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরল, ওডিশা, তামিল নাড়ু, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে।
সূত্র: ইন্ডিয়া ট্যুডে