সৌদি বাদশাহর ১৫০০ সঙ্গী ও সোনার সিঁড়ি!
সৌদি বাদশাহর রাজকীয় সফর বলে কথা! রাশিয়া সফরে তাঁর রয়েছে দেড় হাজার সঙ্গী। সঙ্গে সোনার তৈরি চলন্ত সিঁড়ি ও বিশেষ কার্পেটও রয়েছে। এ সফরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক দায়িত্বশীল ব্যক্তি এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়, গত বুধবার রাতে চার দিনের সফরে রাশিয়ায় পা রাখেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ। উড়োজাহাজ থেকে নামার সময় তিনি ব্যবহার করেন সোনার তৈরি চলন্ত সিঁড়ি। কিন্তু বিধি বাম। হুট করেই নষ্ট হয়ে যায় সেই সিঁড়ি। এতে সিঁড়ি ভেঙেই নামতে হয় ৮১ বছর বয়সী বাদশাহকে। পরে রুশ পুলিশের গাড়িবহর তাঁকে মস্কোর ভেতরে নিয়ে যায়।
সৌদি কোনো বাদশা এই প্রথম রাশিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফর করছেন। দুই দেশই এ সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছে।
রাশিয়া সফরে সৌদি আরবের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাদশাহ সালমান। এ সফরে দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র কেনার চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত। এ ছাড়া তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখার বিষয়েও আলোচনা করছে সৌদি আরব ও রাশিয়া। সিরিয়া সংকটসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক, সামরিক, বাণিজ্যিক ইস্যু আলোচিত হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
সৌদি বাদশাহর সফরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তি ব্লুমবার্গকে জানিয়েছেন, সফর উপলক্ষে প্রায় ৮০০ কেজি খাবার আনা হয়েছে রাশিয়ায়। বাদশাহর সফরসঙ্গীরা কিছু ব্যক্তিগত কর্মচারীও নিয়ে এসেছেন। যে হোটেলে বাদশাহ আছেন, সেখানকার কর্মচারীদের পরিবর্তে কিছু ক্ষেত্রে এসব রাজকীয় কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কারণ রাজকীয় কর্মচারীরা জানেন, কীভাবে এসব সফরসঙ্গীর পছন্দের খাবার বানাতে হয়।
বাদশাহ সালমান যে হোটেলে আছেন, সেখানে তিনি নিজস্ব আসবাব ব্যবহার করছেন। এগুলো সৌদি আরব থেকে নিয়ে এসেছেন তিনি।
রাশিয়ায় দুটি হোটেল বরাদ্দ নিয়েছে সৌদি সরকার। একটি হলো দ্য রিটজ কার্লটন ও দ্য ফোর সিজনস। বাদশাহ ও তাঁর সফরসঙ্গীদের সুবিধার জন্য ওই দুই হোটেলে আগে থেকে কক্ষ ভাড়া নেওয়া কিছু ব্যক্তিকেও বের করে দেওয়া হয়। কারণ অপরিচিত মানুষ থাকলে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না সফরসঙ্গীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ফোর সিজনস হোটেলের এক দ্বাররক্ষী বলেন, পুরো হোটেলটি ৮ অক্টোবর পর্যন্ত বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে সাধারণ মানুষ এতে ঢুকতে পারবেন না। তবে দুই হোটেলের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
রাশিয়ার ফেডারেশন অব রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড হোটেলিয়ারস নামক সংগঠনের সহসভাপতি ভাদিম প্রাজভ বলেন, সৌদি বাদশাহর সফরকালে এ দুই হোটেলের বুকিং ফি হলো ৩০ লাখ ডলার। এর বাইরে রয়েছে, খাবার, স্পা ও অন্যান্য সেবার ভাড়া।
তবে শুধু সৌদি বাদশাহ নয়, বিশাল বহর নিয়ে রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়ার তালিকায় নাম আছে মার্কিন প্রেসিডেন্টদেরও। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাশিয়া সফর করেছিলেন। ওই সময় গুলিরোধক লিমোজিন গাড়ি ও সিক্রেট সার্ভিসের নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে মস্কো এসেছিলেন তিনি।